গণমাধ্যম সামাজিক শক্তির চাপে রয়েছে: আলী রীয়াজ
Published: 6th, August 2025 GMT
গণমাধ্যমের ওপর চাপ শুধু সরকার, মালিকপক্ষ বা সম্পাদকীয় স্তর থেকেই নয়—এর বাইরেও একটি ‘সামাজিক শক্তি’ সক্রিয় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
আলী রীয়াজ বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকার থেকে গণতান্ত্রিক ধারায় রূপান্তরের সময় এ ধরনের শক্তি তৈরি হয়। দেশে যা ঘটছে, সেটি সে অর্থেই বিবেচনা করেন তিনি।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: অভিযোগ নিষ্পত্তি ও স্ব-নিয়ন্ত্রণের বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এক সংলাপ আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। সংলাপ আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বেশ কিছু বাধার কারণে তা সম্ভব হয় না। এর মধ্যে অন্যতম বাধা হিসেবে গণমাধ্যমগুলোর নিজেদের করপোরেট স্বার্থ অনুসরণ না করাকে দায়ী করেন তিনি।
অধিকাংশ মিডিয়া হাউস (গণমাধ্যমের পরিচালক প্রতিষ্ঠান) এখন তাদের অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্যের নিরাপত্তার জন্য মিডিয়াকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে উল্লেখ করে অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, যতদিন এই বাস্তবতা থাকবে, ততদিন প্রকৃত অর্থে স্বাধীন সাংবাদিকতা সম্ভব নয়।
সংলাপে আলী রীয়াজ বলেন, সারা বিশ্বেই কর্তৃত্ববাদী শাসন থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের সময় নতুন সামাজিক শক্তিগুলোর উদ্ভব ঘটে, তারা সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে এবং কখনো কখনো তা ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নেয়। দেশেও তার কিছু প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।
তবে এ ধরনের ঘটনায় যে পরিমাণ সহিংসতা হয়, বাংলাদেশে তা হয়নি বলে মনে করেন আলী রীয়াজ। এ জন্য রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ধন্যবাদ দেওয়া দরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকারও চেষ্টা করেছে, যদিও আরও বেশি করা যেত।’
সংলাপে আরও বক্তব্য দেন মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর (পাভেল), জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক আসিফ বিন আলী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের সভাপতি জিল্লুর রহমান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র য় জ বল ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের কারাগারে ১৩ বাংলাদেশি জেলে, উৎকণ্ঠায় পরিবার
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা এবং পার্শ্ববর্তী বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুরের ১৩ জন জেলে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ভারতের জলসীমায় প্রবেশ করায় সে দেশের কোস্ট গার্ডের হাতে আটক হয়েছেন। বর্তমানে তারা পশ্চিমবঙ্গের কাটদ্বীপ জেল হাজতে বন্দি আছেন বলে পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে ইন্দুরকানীর পাড়েরহাট এলাকার মালেক বেপারীর মালিকানাধীন ফিশিং ট্রলার ‘এমভি মায়ের দোয়া’ নিয়ে সাগরে যান ওই ১৩ জন জেলে। মাছ ধরার উদ্দেশ্যে ১ নম্বর চালনার খাড়ি বয়ায় জাল ফেলার কিছুক্ষণ পরেই ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়। ইঞ্জিন মেরামতের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তারা। স্রোতের টানে ট্রলারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেসে যায় ভারতের জলসীমায়। এর পাঁচ দিন পর ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে ভারতীয় কোস্ট গার্ড ট্রলারটি আটক করে এবং এতে থাকা জেলেদের আটক করে স্থানীয় পুলিশের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়।
আটকদের মধ্যে আছেন—চন্ডিপুর গ্রামের খোকন মাঝি, খায়রুল বাশার, মিরাজ শেখ, তরিকুল ডাকুয়া, শহিদুল ইসলাম, আকরাম খান, ইউসুফ মোল্লা, রাজু শেখ, রাকিব সিকদার ও মারুফ বেপারী, বাদুর এলাকার আল-আমিন, চাড়াখালী এলাকার তরিকুল ইসলাম এবং উমেদপুর এলাকার শাহাদাহ হোসেন।
জেলেদের পরিবারগুলো জানিয়েছে, হঠাৎ করেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর থেকে তারা উৎকণ্ঠায় আছেন। পরে খবর আসে যে, ট্রলারটি ভারতের জলসীমায় ভেসে গিয়ে আটক হয়েছে। জেলেদের নিরাপদে ফিরে পাওয়ার আশায় আছে পরিবারগুলো।
ট্রলারের মালিক মালেক বেপারী বলেছেন, “আমার ট্রলারেই তারা সাগরে গিয়েছিল। ভারতীয় একটি সূত্র থেকে জানতে পেরেছি, তারা কাটদ্বীপ জেলখানায় আছে।”
ইন্দুরকানী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ রহমান বলেছেন, “আমরা ইতোমধ্যে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা/তাওহিদুল/রফিক