ইবির জুলাই বিপ্লব অনুষ্ঠানে উপেক্ষিত অন্য ধর্মগ্রন্থ পাঠ
Published: 6th, August 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে র্যালি ও জুলাইয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে প্রশাসন। এতে পবিত কুরআন পাঠের মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু করলেও উপেক্ষিত হয়েছে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড.
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে জুলাই বিপ্লব প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে প্রশাসন।
আরো পড়ুন:
সামরিক বাহিনীতে থাকা ভারতীয় দালাল নিয়ে ক্রমাগত খবর প্রকাশ হচ্ছে: মাহমুদুর রহমান
দায়বদ্ধতা থেকে সাজিদের ভিসেরা রিপোর্ট দ্রুত নেওয়ার চেষ্টা করেছি: এআইজি আশরাফ
জানা যায়, জুলাই বিপ্লব প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজিত সভায় ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য প্রদানের পর্ব ছিল। সভায় শুরুতে পবিত্র কুরআন পাঠের সাথে অন্য ধর্মাবলম্বী গ্রন্থ পাঠের ব্যবস্থা প্রশাসন না করায় এ সিদ্ধান্তকে নিন্দা জানান বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি সভাপতি নুর আলম সিদ্দিক।
এ সময় ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিয়ে হট্টগোল সৃষ্টি করেন একাংশ শিক্ষার্থী। পরে একাধিক শিক্ষকের অনুরোধ ক্রমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বক্তব্যে নুর আলম বলেন, “আমরা সবাই জানি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু মুসলিম শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে না। এখানে আমাদের সঙ্গে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন ধর্মের সহপাঠীরা আছে। কিন্তু আজ আমরা দেখলাম এ অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করা হলেও বাকী ধর্মগ্রন্থ উইন্ড্রো করা হয়েছে। বৈষম্যহীন সমাজে এ বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। আপনারা এ বৈষম্যহীন সমাজে আজ সবচেয়ে বড় বৈষম্য করলেন। আপনাদের এর জন্য উপযুক্ত জবাব দিতে হবে।”
এদিকে অনুষ্ঠান শেষে এ ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে চলে নানা আলোচনা-সমালোচনা। শিক্ষার্থী নুর আলমের বক্তব্যকে সমর্থন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নুর আলমকে ভুয়া বলে সম্বোধনকারী শিক্ষার্থীদের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “ওই অনুষ্ঠানে যে ঘটনা ঘটেছে, তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যে বা যারা এ কাজ করেছে, তারা হয়তো না বুঝে করেছে। তাদের আরো ম্যাচিউরিটির পরিচয় দেওয়া উচিত ছিল। আমাদের সব ধর্ম ও মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সবার মত প্রকাশের অধিকার আছে, এটাকে আমাদের সম্মান করতে হবে। আর প্রশাসনের এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত ছিল।”
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, “আমাদের প্রত্যেকটি ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা থাকা উচিত। এ পরিস্থিতিতে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেওয়ার কাজটি ঠিক হয়নি। আমি মনে করি, যে বা যারা এটি করেছে, তারা হয়তো না বুঝে করেছে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, যারা এ কাজ করেছে ওরা না বুঝে করেছে। তবে আমাদের আরো ধৈর্যশীল হতে হবে।”
এ বিষয়ে জানতে জুলাই বিপ্লব প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামানকে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
নুর আলমের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “সব প্রোগ্রামই পূর্ণতা পায়, কিন্তু কিছু ত্রুটি থেকে যায়। ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের বিষয়ে অনুষ্ঠানে একটু মিস ম্যানেজমেন্ট হয়েছে। এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।”
তিনি বলেন, “একজন বক্তা তার বক্তব্যে জানতে চেয়েছেন, কেনো পবিত্র কুরআন পাঠের সঙ্গে অন্যগ্রন্থ পাঠ করা হয়নি? আমি তার এ মনোভাবকে শ্রদ্ধা জানাই। তার প্রতি আমার কোনো বিরাগ নেই। আগামীতে আমাদের প্রোগ্রামগুলো যাতে সার্বজনীন চরিত্রে রুপান্তরিত হয়, তার প্রতি খেয়াল রাখব।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ রন থ প ঠ অন ষ ঠ ন ন র আলম উপলক ষ আম দ র প রক শ ক রআন
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্মের মর্মবাণী মানব কল্যাণ, শান্তি ও দেশপ্রেম: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, সকল ধর্মের মর্মবাণী মানব কল্যাণ, শান্তি ও দেশপ্রেম।
রবিবার ( ২১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশন কর্তৃক শুভ মহালয়া ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে দেশের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সকল ধর্মই আমাদের অন্যায়, অবিচার ও অনাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রেরণা যোগায়। আমাদের আত্মশুদ্ধির সুযোগ করে দেয়। মানবসেবা ও দেশাত্মবোধের চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করে।’’
শারদীয় দুর্গোৎসবকে বাংলাদেশের সার্বজনীন উৎসব উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আবহমানকাল ধরে শারদীয় দুর্গাপূজা বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে সাড়ম্বরে উদযাপিত হয়ে আসছে। এটি শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, বাংলাদেশের সকলের উৎসব। এ উৎসব উদযাপনের মাধ্যমে মানুষে মানুষে নিবিড় বন্ধন রচিত হয়, সমাজের সকল মানবসৃষ্ট ভেদাভেদ, বৈষম্য দূরীভূত হয় এবং সকলের মধ্যে সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগরিত হয়।’’
দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এ সময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসব আনন্দমুখর পরিবেশ ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে মর্মে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন। একইসঙ্গে দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে যেন কোনো স্বার্থান্বেষী মহল অপচেষ্টা চালাতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম//