পুণ্যস্নান মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব, মেলা চলবে ৫ দিন
Published: 5th, November 2025 GMT
বঙ্গোপসাগরে পুণ্যস্নান ও পূজার মধ্য দিয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় শেষ হয়েছে রাস উৎসব। বুধবার (৫ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সমুদ্রে নেমে স্নান সম্পন্ন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সৈকত সংলগ্ন শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমে ১৭ জোড়া যুগল প্রতিমা দর্শন করেন তারা।
এর আগে, মোমবাতি, আগরবাতি, ফুল, ফল, দুর্বা, হরতকি, ডাব, কলা, তেল ও সিঁদুর সমুদ্রের জলে অর্পণ করেন তারা। লক্ষাধিক নারী-পুরুষের উপস্থিতি এবং উলুধ্বনি ও মন্ত্রপাঠে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সৈকত এলাকা। অনেকে প্রায়শ্চিত্ত ও পূর্ব পুরুষদের আত্মার শান্তি কামনায় পিন্ডদানের পাশাপাশি মাথা ন্যাড়া করেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষরা সৈকতে স্নানের আগে ঢাকা-ঢোলের তালে হরিনাম জপে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন।
আরো পড়ুন:
বাউফলে খেলার মাঠে মেলা বন্ধের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ
লালন মেলায় ৭৮ মোবাইল ফোন চুরি
রাসপূজা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলেও এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দিরে পাঁচ দিনব্যাপী চলবে মেলা।
রাস উৎসবে অংশ নিকে আসা পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর ছিল পুলিশ, নৌ-পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
পিরোজপুরের নাজিরপুর থেকে আসা পুণ্যার্থী মুক্তা রানী বলেন, “প্রতিবছরের মতো এবারো আমরা রাস পূজা উপলক্ষে কুয়াকাটায় এসেছি। রাতভর ধর্মীয় সঙ্গীতানুষ্ঠান উপভোগ করেছি। সকালে পুণ্যের আশায় স্নান করেছি এবং কৃষ্ণের কাছে মনোবাসনা ব্যক্ত করেছি।”
ঢাকার কাকরাইল এলাকা থেকে আসা অর্চনা রানী বলেন, “জাগতিক পাপ মোচনের আশায় স্নান করেছি। পৃথিবীর সব জীবের জন্য শান্তি কামনা করেছি। এখানে হাজার হাজার মানুষ এসেছেন। সবাই খুব ভোরে স্নান করেছেন। এর আগে, মন্দিরসহ পুরো সৈকত এলাকায় সব ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপভোগ করেছি।”
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, “মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়ন ছিলেন। সবার সহযোগিতায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হয়েছে।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ল র খবর উৎসব র স উৎসব ন ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনায় আজ ‘কিচ্ছা উৎসব’
আজ শনিবার নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় বসছে ‘কিচ্ছা উৎসব ১৪৩২ ’–এর আয়োজন। উপজেলা প্রশাসন ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সর্বস্বর’ যৌথভাবে আয়োজন করছে এই উৎসবের। বাংলার ঐতিহ্যবাহী কিচ্ছা পালাকে কেন্দ্র করে এই বৃহৎ সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশ নেবেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ১৫ জন খ্যাতনামা বয়াতি ও তাঁদের দল।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, উৎসবে উপস্থাপিত হবে লোকজ কাহিনি, পুরাণ, ধর্মবিশ্বাস ও জনজীবনের নানান অভিজ্ঞতায় গাথা কিচ্ছা পালা। গ্রামীণ জীবনের গল্পগাথা, লোকসংগীতের সুর, চরিত্রের অভিনয় ও দর্শকের মগ্নতা—এই উৎসবে ফিরে আসছে কিচ্ছা গানের সেই চিরায়ত আবহ। আয়োজকেরা মনে করেন, কিচ্ছা উৎসব শুধু বিনোদনের আয়োজন নয়; এটি তরুণ প্রজন্মের কাছে নিজেদের শিকড়, ঐতিহ্য ও লোকসংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ। একই সঙ্গে গবেষক, সংস্কৃতিবিদ ও সাহিত্যমনস্কদের জন্যও এটি এক মূল্যবান ক্ষেত্র, যেখানে তাঁরা প্রত্যক্ষ করতে পারবেন বাংলার মৌখিক ঐতিহ্যের জীবন্ত রূপ।
কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চবিদ্যালয় খেলার মাঠে সকাল ১০টা থেকে সারা রাত চলবে এই আয়োজন। এতে কিচ্ছা পরিবেশন করবেন কুদ্দুস বয়াতি, সায়িক সিদ্দিকী, দিলু বয়াতি, অলিউল্লাহ বয়াতি, সবুজ বয়াতি, জসিম বয়াতি, মনসুর বয়াতি, হামিদ বয়াতি, শামীম বয়াতিসহ আরও অনেকে।