ফেনীতে জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের একটি খেলায় দর্শকদের হামলায় খেলোয়াড়সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা সাতটি বাস ভাঙচুর করেন। আজ বুধবার সন্ধ্যায় ফেনী শহরের একাডেমি এলাকায় ভাষাশহীদ আবদুস সালাম স্টেডিয়ামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ফেনী সদর উপজেলা দলের খেলোয়াড় নিশাত রয়েছেন। এ ছাড়া হামিম, রকি, আরমান, জুবায়ের, আরিফ, আবদুল্লাহর নাম জানা গেছে। তাঁরা সোনাগাজী উপজেলার বাসিন্দা। আহত ব্যক্তিরা সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ফেনীর আশপাশের বিভিন্ন ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেলে ভাষাশহীদ আবদুস সালাম স্টেডিয়ামে ফুলগাজী উপজেলা দলের সঙ্গে সোনাগাজী উপজেলা দলের খেলা ছিল। খেলায় ৪-২ গোলে জয়লাভ করে সোনাগাজী উপজেলা দল। খেলা শেষে সোনাগাজীর দর্শকেরা হুড়োহুড়ি করে মাঠে প্রবেশ করেন। এ সময় আগামীকাল বৃহস্পতিবারের ম্যাচের প্রস্তুতির জন্য ফেনী সদর উপজেলা দলের খেলোয়াড়রাও মাঠে ঢোকেন। একপর্যায়ে সদরের খেলোয়াড়দের সঙ্গে সোনাগাজীর দর্শকদের হাতাহাতি লেগে যায়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।

সংঘর্ষের সময় বিক্ষুব্ধ জনতা সোনাগাজী উপজেলা দলের খেলোয়াড়দের যাতায়াতে ব্যবহৃত যাত্রীবাহী সাতটি বাসের কাচ ভাঙচুর করে। হামলায় ফেনী সদর উপজেলা দলের খেলোয়াড় নিশাতসহ আরও ১০ জন হন।

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিগেন চাকমা জানান, খেলা শেষে সোনাগাজীর দর্শকদের সঙ্গে সদর উপজেলার লোকজনের সংঘর্ষ হয়। এতে সোনাগাজী থেকে আসা যাত্রীবাহী সাতটি বাস ভাঙচুর করা হয়। এর মধ্যে একটি বাস বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামিম নামের এক দর্শক গুরুতর আহত হয়ে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁর মাথায় চারটি সেলাই পড়েছে।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, মাঠে সংঘর্ষের পরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

ফেনী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.

ইসমাঈল হোসেন বলেন, ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবারের ফেনী সদর উপজেলা দল ও ছাগলনাইয়া উপজেলা দলের মধ্যকার সেমিফাইনাল খেলাটি স্থগিত করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদর উপজ ল দল র খ ল য

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই, নারীসহ দুই যুবককে গণপিটুনি

ফতুল্লায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক তরুন ও এক  তরুনীকে ভুইগড় থেকে ফতুল্লার দাপা বালুর মাঠ এলাকায় নিয়ে এসে মোবাইল  ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় শামীমা খানম নামের  এক নারীসহ দুই  যুবককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী।

এ সময় আটককৃতদের নিকট থেকে পুলিশ বিশেষ পেশার (সাংবাদিক) কার্ড উদ্ধার সহ ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাত নয়টার দিকে ফতুল্লা থানার দাপা ইদ্রাকপুর সাহারা সিটি বালুর মাঠে।

এঘটনায় ভুক্তভুগী যুবক ইব্রাহিম নিঝুম বাদী  হয়ে শামিমা খানুলম সনিয়া (৪০), তৌছিফ আহম্মেদ (২০) ও  সিয়াম আহম্মেদ (২০)  ও  সোহাগ (২৫)সহ অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। অভিযুক্ত  অপর আসামী সোহাগ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

মামলায় উল্লেখ্য করা হয়, মামলার বাদী শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তার বান্ধবী (১৮) কে নিয়ে একটি রিকশা যোগে ভূইগড় রুপায়ন টাউন এর সামনে থেকে চাষাড়া যাওয়ার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডস্থ ভূইগড় রুপায়ন টাউনের সামনের রাস্তায় পৌছামাত্র অভিযুক্ত আসামীরা  রিক্সার গতিরোধ করে নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে একটি অটোতে উঠিয়ে ফতুল্লা থানা সীমান্তের দাপা ইদ্রাকপুরস্থ সাহারা সিটি বালুর মাঠে নিয়ে  আসে। 

পরবর্তীতে অভিযুক্তরা বাদী সহ তার বান্ধবীকে ছেড়ে দেওয়ার শর্ত স্বাপেক্ষ ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। টাকা প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করলে অভিযুক্ত আসামীরা তাদের কে মারধর করে এবং তাদের সাথে থাকা মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয়।

এক পর্যায়ে অভিযুক্তরা বাদী ও তার বান্ধবীর বাবার নিকট থেকে মোবাইল ফোনে পৃথক পৃথক ভাবে মুক্তিপণ হিসেবে ১ লাখ টাকা করে দাবী করে এবং তাদের সাথে থাকা মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

মোবাইল ফোনে সংবাদ পেয়ে তাদের পরিবারের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্তলে ছুটে আসে। বিষয়টি স্থানীয়রা টের পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তরুন-তরুনীর নিকট বিস্তারিত জানতে পেরে আটককৃতদের তল্লাশি করে লুটে নেওয়া মোবাইল ফোন, আইডি কার্ড উদ্ধার করে গণপিটুনি দিয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয়দানকারী কথিত সাংবাদিক শামীমা খানম সোনিয়া তৌছিফ আহম্মেদ ও  সিয়াম আহম্মেদ কে পুলিশে সোপর্দ করে। তবে এ সময় কৌশলে পালিয়ে যায়  অভিযুক্ত অপরজন সোহাগ। 

তথ্যমতে, এক মাস পূর্বে পঞ্চবটী রুসেন হাউজিং ভিতরের একটি ফ্ল্যাটে গিয়ে পতিতা ব্যবসার অভিযোগ তুলে চাঁদা দাবী করে। সে সময় স্থানীয়রা তাদের আটক করে গণপিটুনি দেয়। যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়।

এরপর এই চক্রটি পাগলার চিতাশাল, তল্লা কোর্টের পেছনে, পোস্ট অফিস রোডের দারোগার বিল্ডিংয়ে  গিয়ে একই কায়দায় চাঁদা দাবী করে। সে সকল ঘটনাতেও তারা স্থানীয়বাসীর প্রতিরোধের স্বিকার হয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আসে।

অপর একটি সূত্র জানায় ১৫/২০ দিন পূর্বে পঞ্চবটী হরিহর পাড়া এলাকার একটি ফ্ল্যাটে গিয়ে এক দম্পত্তিকে মারধর এক ভরি ওজনের স্বর্ণালংকারসহ নগদ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। 

স্থানীয় সাংবাদিক মহল শামীমা ও তার সহোযোগিদের কর্মকান্ড নিয়ে ব্যাপক ভাবে ক্ষুদ্ধ। তারা ইতিমধ্যে পুলিশ প্রশাসনকে শামীমা ও তার সহোযোগিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানালেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন নি।

শামীমা খানম সোনিয়া ও তার সহোযোগিদের আটকের সংবাদে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা থানায় তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতেই পুলিশ কর্মকর্তা কে রগ কাটার এবং  মামলা দিয়ে হয়রানী করার হুমকি প্রদান করার পাশাপাশি গণমাধ্যম কর্মীদের কে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা হতবিহ্বল হয়ে পরে।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানান, এ বিষয়ে ইব্রাহিম নিঝুম একজন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ