শুধু ঘোষণা নয়, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় বিএনপি: আবদুল মঈন খান
Published: 6th, August 2025 GMT
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাকে বিএনপির বিজয় অর্জন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। তিনি নেতা–কর্মীদের নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘শুধু নির্বাচনের ঘোষণা নয়, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় বিএনপি। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সিলেট নগরের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে ছাত্র–জনতার ঐতিহাসিক গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় মিছিলের আগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল মঈন খান এ কথাগুলো বলেন।
আবদুল মঈন খান বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে সরকার তাদের কাজ করছে, এখন আমাদের কাজ আমাদের করতে হবে। দেশের প্রতিটি গ্রামগঞ্জে গিয়ে ধানের শীষের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। আমরা চাই, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এখন বিএনপির নেতা–কর্মীদের কাজ হচ্ছে, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গঠন করা।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য জুলাই–আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং আহত ব্যক্তিদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবার পুনর্বাসনের বিষয়ে রাষ্ট্র যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে। জুলাইয়ের গণ–অভ্যুত্থান ছিল একদলীয় শাসনের বিরুদ্ধে জনগণের একটি সুস্পষ্ট বার্তা। সেই ইতিহাস এখন আমাদের নতুন প্রেরণা জোগায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান লড়াইয়ে।’
আবদুল মঈন খান বলেন, ‘দলের অসংখ্য নেতা–কর্মী নির্ভীকভাবে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ ও দেশের প্রতি অবদানের প্রতি আমরা গভীর শ্রদ্ধা জানাই।’ এ সময় তিনি সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের প্রশংসা করেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবদুল কাইয়ুম জালালী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজমুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে রেজিস্ট্রারি মাঠ থেকে বিজয় মিছিলটি শুরু হয়ে নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল মঈন খ ন র ব এনপ র ব এনপ র স আবদ ল ম আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় জাতিসংঘ কেন এত অক্ষম, এত অসহায়
১৯৫৬ সাল। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের সশস্ত্র শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হয়। তাদের গন্তব্য ছিল মিসরের নিয়ন্ত্রণে থাকা সিনাই উপদ্বীপ ও গাজা উপত্যকা। আর পাঠানোর কারণ, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইসরায়েল মিলে মিসরের সুয়েজ খাল আক্রমণ করেছিল।
এখন ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ চলছে এবং জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশন সামনে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, জাতিসংঘ এখন গাজায় কী করতে পারে কিংবা কেন কিছুই করছে না?
যদিও সুয়েজ সংকট ও বর্তমান গাজা পরিস্থিতি আলাদা। তবু ১৯৫৬ সালের জাতিসংঘ জরুরি বাহিনীর অভিজ্ঞতা এটাই দেখায়, জাতিসংঘ চাইলে কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের গাজা দখল অভিযানে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়েছে। ক্রমেই বেশিসংখ্যক আইনজ্ঞ ও গবেষক বলছেন, ইসরায়েলের এমন কর্মকাণ্ড জাতিহত্যা। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র অন্তত ছয়বার ভেটো দিয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবারও; যাতে নরকে পরিণত হওয়া গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা বা মানবিক সাহায্যের পথ খোলার প্রস্তাব পাস না হয়।
তবে ১৯৫৬ সালেও নিরাপত্তা পরিষদ অচল হয়ে পড়েছিল। কারণ, তখনকার দুই আগ্রাসী দেশ ব্রিটেন ও ফ্রান্স ভেটো ক্ষমতা রাখত। ওই সময় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ১৯৫০ সালের ‘ইউনাইটিং ফর পিস’ প্রস্তাব ব্যবহার করে সশস্ত্র শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠায়।
জাতিসংঘ সনদের অধ্যায়-৭ অনুযায়ী, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ শান্তিরক্ষী মোতায়েন বা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
তবে তখন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনও বড় ভূমিকা রেখেছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি আইজেনহাওয়ার ব্রিটেন-ফ্রান্স-ইসরায়েলের মিসর আক্রমণের বিরোধিতা করেছিলেন।
যদিও সুয়েজ সংকট ও বর্তমান গাজার পরিস্থিতি আলাদা। তবু ১৯৫৬ সালের জাতিসংঘ জরুরি বাহিনীর অভিজ্ঞতা এটাই দেখায়, জাতিসংঘ চাইলে কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে।জাতিসংঘ তখন একজন বলিষ্ঠ মহাসচিবও পেয়েছিল—দ্যাগ হ্যামারশোল্ডকে। তিনি জোটভুক্ত নয়, এমন দেশগুলোকে শান্তিরক্ষী পাঠাতে রাজি করাতে সক্ষম হন। মিসরও স্বেচ্ছায় তা গ্রহণ করে।
কিন্তু কূটনীতিক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র আজ গাজাকে আন্তর্জাতিক ইস্যু করতে মোটেই রাজি নয়।
আজকের শিক্ষাটা হলো, সাধারণ পরিষদ চাইলে নিরাপত্তা পরিষদকে পাশ কাটাতে পারে। তবে দিন শেষে জাতিসংঘ কার্যকর হয় শুধু তখনই, যখন সদস্যরাষ্ট্রগুলো রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখায়।
নিউইয়র্ক সিটিতে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫