আমরা সঠিক মানুষকে সঠিক সম্মান দিতে পারি না: ইমরুল
Published: 7th, August 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কাছে ১২ হাজার টাকায় দুই রুমের বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছেন। যদিও শুরুর দিকে বিসিবি আমিনুলকে নিজেদের ব্যবস্থায় একটি পাঁচ তারকা হোটেলে রেখেছিল। পরবর্তীতে বিদেশি কোচরা যেখানে থাকেন সেখানে থাকার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।
কিন্তু আমিনুল নিজের ইচ্ছাতে বিসিবির কোনো ব্যবস্থায় না থাকার সিদ্ধান্ত নেন। অস্ট্রেলিয়ায় থাকে তার পুরো পরিবার। ঢাকার গেণ্ডারিয়াতে তার বেড়ে ওঠা। এখন সেখানে থাকার সুযোগ নেই। ঢাকায় অল্প কয়েকদিনের জন্য এলে আত্মীয়দের বাসাতেই উঠেন। এবার দেশে আসার পর তাকে দেওয়া হয় বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব। ফলে স্থায়ীভাবেই তাকে কয়েকমাস কাটাতে হচ্ছে বাংলাদেশে।
বিসিবি তার আবাসনের ব্যবস্থা করছে, এমন কথা শোনার পর নিজ থেকে সরে আসেন তিনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কম কথা হয়নি। পরবর্তী ১২ হাজার টাকায় বাসা ভাড়া নিয়েছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপাক সাড়া ফেলেছে।
তবে এসবের আড়ালে একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে অসম্মান করা হয়েছে বলে মনে করছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক স্ট্যাটাসে ইমরুল নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
দীর্ঘ স্ট্যাটাসে ইমরুল লিখেছেন, ‘‘গত কয়েকদিন ধরে একটা বিষয় হয়তো আপনারা অনেকেই দেখেছেন—যে বিসিবি সভাপতি বর্তমানে মাত্র ১২ হাজার টাকার ভাড়ার একটি বাসায় থাকছেন। এই ব্যাপারটা আমার কাছে কোনোভাবেই স্বাভাবিক মনে হয়নি।’’
‘‘একজন মানুষ, যিনি নিজের স্থায়ী ঠিকানা ছেড়ে, এক দেশ থেকে আরেক দেশে এসে, শুধুমাত্র বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এবং দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন, তাঁকে যদি এমন একটি বাসায় থাকতে হয়—তাহলে সেটা কতটা যুক্তিসঙ্গত, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।’’
‘‘আমার জানা মতে, বিসিবি শুরুতে তাঁকে ভালো মানের একটি থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষ এবং কিছু দুষ্টচক্র সেই বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি শুরু করে, যা তাঁর আত্মসম্মানে আঘাত করে। আর সেই সম্মানের খাতিরেই তিনি আজ এত সাধারণভাবে থাকছেন।’’
‘‘আমরা দেখে থাকি বিসিবি কত টাকা খরচ করে বিদেশি স্টাফ এবং কোচদের পেছনে, যার হিসাব কোটি টাকায় গড়ায়। অথচ, অন্যদিকে একজন সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমান বোর্ড সভাপতিকে মাত্র ১২ হাজার টাকার একটি হোটেলে রাখা হচ্ছে। আমরা না হয় ব্যক্তি বুলবুলকে মূল্যায়ন না-ই করলাম, কিন্তু তাঁর মেধাকে তো অন্তত মূল্যায়ন করা উচিত, তাই না? নাকি আগের মতো যেভাবে সব কিছু চলেছে, সেভাবেই চলবে?’’
‘‘আসলে আমরা কবে শিখব একজন ভালো মানুষ কিংবা ভালো কিছুর সঠিক মূল্যায়ন করতে? কবে আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেশের উন্নয়নে যারা কাজ করছে, তাদের পাশে দাঁড়াব?’’
‘‘এমন কিছু সংখ্যালঘু মানুষ সব সময়ই থাকে—যারা শুধু দেশের ক্রিকেট নয়, বরং গোটা দেশেরই ক্ষতি করে। যেমনি করে বুলবুল ভাই নিজেই বলেছেন, কিছুদিন পর তিনি চলে যাবেন।’’
‘‘দুঃখের বিষয়, আমরা অনেক সময় সঠিক মানুষকে সঠিক সম্মান দিতে পারি না।’’
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১২ হ জ র ট ক ইমর ল যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
রোমান সম্রাজ্ঞী মেসালিনাকে যেকারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো
রোমান সম্রাজ্ঞী ভ্যালেরিয়া মেসালিনা ছিলেন ‘ভয়ংকর সুন্দরী’। তার সময়ে সময়ে রাজনীতিতে একজন নারীর হস্তক্ষেপ ভালোভাবে দেখা হতো না। কেউ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করলে তাকে নিয়ে নানা সরল ব্যাখ্যা তৈরি হয়ে যেতো।
ইতিহাসবিদ রবার্ট গ্রেভস বলেছেন, ভ্যালেরিয়া মেসালিনার উচ্চ রাজনৈতিক জ্ঞান ছিলো এবং তিনি ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিতেন। অথচ তিনি ইতিহাসে একজন কুখ্যাত রোমান সম্রাজ্ঞী। ভ্যালোরিয়া মেসালিনা ছিলেন রোমান সম্রাট ক্লডিয়াসের তৃতীয় স্ত্রী। বলা হয়ে থাকে তিনি আলোচনায় রয়েছেন তার ক্ষমতা লিপ্সা, নৃশংসতা এবং চরম যৌন স্বেচ্ছাচারিতার জন্য।
আরো পড়ুন:
সকালে গোসল করার উপকারিতা
ময়ূর সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানেন?
ভ্যালেরিয়া মেসালিনা সম্রাট নিরোর চাচাতো বোন, সম্রাট ক্যালিগুলার দ্বিতীয় চাচাতো বোন এবং সম্রাট অগাস্টাসের প্রপৌত্রী ছিলেন। ৩৮ বা ৩৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি ক্লডিয়াসকে বিয়ে করেন। ৪১ খ্রিস্টাব্দে ক্যালিগুলা নিহত হলে ক্লডিয়াস সম্রাট হন এবং মেসালিনা সম্রাজ্ঞী হিসেবে ক্ষমতা লাভ করেন।
ভ্যালেরিয়া মেসালিনা প্রায় এক দশক ধরে রোমের অন্যতম প্রভাবশালী নারী ছিলেন এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতেন। নিজের অবস্থান ধরে রাখতে তিনি রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্বাসন এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।
তার সম্পর্কে প্রচলিত গল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি রাতের বেলা গোপনে পতিতালয়ে যেতেন এবং সেখানে সেচ্ছাচারিতা করতেন। এমনকি তিনি নামকরা পতিতাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা শুরু করতেন। এক রাতে তিনি ২৫ জন পুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হয়েছিলেন!
৪৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি সম্রাট ক্লডিয়াসের অনুপস্থিতিতে তার প্রেমিক গাইয়াস সিলিয়াসের সাথে প্রকাশ্যেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, যা ছিল রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কাজ। পরে ক্লডিয়াস তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং তার নাম ও মূর্তি মুছে ফেলার জন্য ‘ড্যামনেশিও মেমোরি’ ঘোষণা করা হয়। রাজনীতিতে সরাসরি এক দশক প্রভাব রাখা সম্রাজ্ঞী ইতিহাসে একজন কলঙ্কিত নারীর তকমা পেয়ে যান।
তথ্যসূত্র: এনসিয়েন্ট ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিন
ঢাকা/লিপি