অরাজক পরিস্থিতিতে ফেলতে চাচ্ছেন, উদ্দেশ্যটা কী:?
Published: 19th, September 2025 GMT
পিআর নিয়ে আন্দোলনকারীদের গণতন্ত্রের মধ্যে কথা বলার পরামর্শ দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, “দেশকে একটা অরাজক পরিস্থিতিতে ফেলতে চাচ্ছেন, উদ্দেশ্যটা কী? দেশের মধ্যে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। কিন্তু মনে রাখবেন, এই বাংলাদেশ সেই বাংলাদেশ না। আপনি ইচ্ছা করলেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারবেন না। যেমন আপনারা (আলোচনা সভায়) এখানে বসে নির্বাচনের জন্য সুন্দর ব্যালট বাক্স নিয়ে এসেছেন, আপনাদের নির্বাচন কমিশন আছে, আপনাদের প্রার্থী আছে, সরাসরি ভোট হবে।”
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যালস রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের (ফারিয়া) কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
দিঘলিয়ায় বিএনপির দু’ গ্রুগের কর্মসূচি, ১৪৪ ধারা জারি
দুর্গাপূজায় প্রতিটি মণ্ডপে বিএনপির পাহারা থাকবে: দুলু
জাহিদ বলেন, “খালি দলবাজির জন্য, নিজের অবস্থানকে পাকাপোক্ত করার জন্য এবং জনগণ না চাইলেও জনগণের কথা বলে মতামত দেওয়ার দাবিদার হওয়ার জন্য আজকে এই সমস্ত দাবি তুলছেন তারা সত্যিকার অর্থে-নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন। আমি এ কথা আগে বলি নাই, আমি এই কথা কেনো বলছি? উদ্দেশ্য কী?”
“তাহলে কি আমি স্বৈরাচারকে আসার জন্য একটা রাস্তা করে দিচ্ছি। নির্বাচনকে প্রলম্বিত করার জন্য আমি কোনো চেষ্টা করছি, নির্বাচন যাতে আরো বেশি দূরে থাকে, দেশে যাতে আরো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হয়, দেশে যাতে বিনিয়োগ আরো কম হয়, দেশে যাতে আরো বেকারত্ব বেড়ে যায় আমি কী সেদিকে দেশকে অরাজকতার দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছি… আপনি এই বিষয়গুলো চিন্তা করেছেন?” প্রশ্ন তুলেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।
যারা পিআর পদ্ধতি চান সেসব রাজনৈতিক দলকে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে তা সন্নিবেশন করে জনগণের কাছে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাহিদ বলেন, “আমি তাদেরও বলি, আসেন জনগণের কাছে যান। জনগণ যাকে গ্রহণ করে, আপনি আপনার এজেন্ডা নিয়ে যাবেন, আমরা আমাদের এজেন্ডা নিয়ে যাবো। জনগণ কাকে গ্রহণ করবে আমরা সেই এজেন্ডাকে তাকে আমরা স্যালুট করব। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই জনগণের কথা বলে জনগণের মতামতের ওপর আপনার দলীয় এজেন্ডা অথবা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের এজেন্ডা চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।”
“আপনারা কী কেউ কখনো শুনেছেন যে ৫ আগস্টের আগে অথবা এই গত ১৬/১৭ বছরে আমরা কেউ সংখ্যানুপাতিক ভোট অর্থাৎ পিআর চাই? আপনারা শুনেন নাই।এই ধরনের বক্তব্য কারো ছিল না। আজকে কেউ কেউ বলেন, বলতে দোষ নেই। কারণ গণতন্ত্রের মধ্যে কথা বলবেন দিস ইজ দি বিউটি অব ডেমোক্রেসি এবং মত প্রকাশের যে ভিন্নতা থাকবে সেটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য এর মধ্যে কোনো সমস্যা নেই,” যোগ করেন ডা.
হাবিবুর রহমান হাবিবের সভাপতিত্বে ও রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী সবুজ ও আরিফুল ইসলাম আরিফের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ জনগণ র ক র জন য আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
‘৭০ ভাগ জনগণ পিআর পদ্ধতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে’
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। এরপর ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। সেই জনগণের ৭০ ভাগ পিআর পদ্ধতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে। ঐকমত্য কমিশনে ৩১টি দলের মধ্যে ২৫টি দল পিআরের পক্ষে রয়েছে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে খুলনা নগরের ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বরে জুলাই সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘একটি দলের কেউ কেউ বলছেন, পিআর খায় না মাথায় দেয়। কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এটা বলতে পারেন না। তাই পিআর বাস্তবায়নের জন্য গণভোট দিন। রায় পিআরের পক্ষে নাকি বিপক্ষে যাচাই করুন। জনগণ যদি পিআর মানে আপনাদেরও মানতে হবে। আর জনগণের রায় যদি পিআরের বিপক্ষে যায়, তাহলে আমরা মেনে নেব। কিন্তু তারা তো গণভোটকে ভয় পাচ্ছে। পিআরের মধ্য দিয়ে সবার অংশীদারির ভিত্তিতে যদি পেশিশক্তি ও কালোটাকামুক্ত কোয়ালিটিপূর্ণ পার্লামেন্ট হয়, সরকার গঠন হয়, তাহলে কোনো দলের পক্ষে ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা নেই। তাই তারা পিআর ঠেকাতে চায়।’
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরের আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ শাহ আলম ও শেখ জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক আবদুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম এবং কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলার আমির মাওলানা এমরান হুসাইন প্রমুখ।
মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘আর্টিকেল ৭-এর ভিত্তিতেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে তার আলোকে নির্বাচন দিতে হবে। এখন যদি দুই-তিন মাস আলোচনার পর একটি দল বলে যে এটা পরে হবে, তাহলে কেন এত পরিশ্রম করালেন? সে জন্যই বলছি আমাদের আন্দোলন রাজনীতির অংশ। আমাদের রাজনীতি জনগণের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরার জন্য। আমরা আলোচনার টেবিলে নিষ্পত্তির জন্য আশাবাদী। আমরা নিরাশ নই।’
জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘আপনারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড মেনটেইন করতে পারছেন না। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কীভাবে? তাই আমাদের দাবি—আপনারা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিন। সাংবিধানিক অর্ডার জারি করুন। গণভোট দিন। ফ্যাসিবাদের কার্যক্রম স্থগিত করুন। আপনারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান বিচার করবেন। আমাদেরও দাবি নির্বাচনের আগেই তা দৃশ্যমান করতে হবে।’
মতিউর রহমান আকন্দ আরও বলেন, ‘এই সংস্কার যদি এখন না হয়, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য যদি ঠিক করা না হয়, আর তা যদি নির্বাচনের আগে না হয়, বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোতে যদি আবার নির্বাচন হয়, তাহলে এই নির্বাচনের মাধ্যমে আরেকটি ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। বিদ্যমান কাঠামোতে নির্বাচন হলে আরেকটি হাসিনার জন্ম হবে। বাংলার মানুষ আর ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে দেবে না।’
পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বর থেকে শুরু হয়ে ফেরিঘাট মোড়, পাওয়ার হাউস মোড় ও সংগীতার সামনে দিয়ে শিববাড়ী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।