রাজবাড়ীতে মাজারে হামলা চালিয়ে লাশ বের করে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটল। কুমিল্লার হোমনায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিমূলক পোস্টের জেরে চারটি মাজারে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা অবশ্যই সমর্থনযোগ্য নয়। কিন্তু এর প্রতিবাদে সহিংসতা সৃষ্টি করে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করা হলো, তা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। এটি খুবই উদ্বেগজনক।

কটূক্তিমূলক পোস্ট করার অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ তাঁর অপরাধ স্বীকারের প্রমাণও পেয়েছে এবং তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে। অর্থাৎ, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল।

তবে এরপরও একদল উন্মত্ত জনতা যখন মাইকে ঘোষণা দিয়ে মাজারগুলোয় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো জঘন্য অপরাধ করে, তখন প্রশ্ন ওঠে: তাহলে কি আমরা আইনের ওপর ভরসা রাখছি না? নাকি কিছু মানুষ এই সংবেদনশীল পরিস্থিতিকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইছে? এই হামলায় মাজারগুলোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের বসতঘরও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং লুটপাট হয়েছে, যা মানবিকতার চরম লঙ্ঘন। ধর্মও এসব অপকর্মকে সমর্থন দেয় না।

পুলিশ সুপার বলেছেন, এই ঘটনার পেছনে উসকানি ও ইন্ধনদাতাদের চিহ্নিত করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশা করি, সেটি তিনি কাজে প্রমাণ করে দেখাবেন। কিছু গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে; সেখানে সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করছে এবং স্থানীয় ধর্মীয় গোষ্ঠীও এমন কর্মকাণ্ডে যুক্ত হচ্ছে। 

সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ হামলা থামাতে ব্যর্থ হচ্ছে, তা নিয়ে সমালোচনা দেখা দিয়েছে নাগরিক সমাজে। এ অভিযোগও উঠেছে, সরকার শুরু থেকে কঠোর অবস্থান নেয়নি; বরং ছাড় দিয়ে নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। ফলে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এখন আরও বেশি ক্ষমতাচর্চা করছে, যার প্রতিফলন একের পর এক মাজারে হামলার মধ্য দিয়ে দেখা যাচ্ছে।

সমাজে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হলে ধর্মীয় নেতা, স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা বারবার বলে আসছি, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হলে অপরাধী ও উসকানিদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যদি বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলতে থাকে, তাহলে এমন ঘটনা আবারও ঘটবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যাটিং কোচ আশরাফুল যে ‘অঙ্ক’ শেখাবেন ব্যাটসম্যানদের

ঘরোয়া ক্রিকেটের কোচিংয়ে নাম লিখিয়েও ক্রিকেট খেলাটা পুরোপুরি ছাড়েননি মোহাম্মদ আশরাফুল। গত দুই মৌসুমে খেলেছেন ইংল্যান্ডের সাউদার্ন প্রিমিয়ার লিগে পোর্টসমাউথ ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে, রান করেছেন প্রায় ৭০ গড়ে।

তবে এবার বোধ হয় খেলোয়াড় পরিচয়টাকে পুরোপুরিই বিদায় দেওয়ার পালা। বিপিএলের দল রংপুর রাইডার্স, প্রিমিয়ার লিগের শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও সর্বশেষ এবারের জাতীয় লিগের দল বরিশালের কোচ আশরাফুল যে এখন জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলেও ঢুকে গেছেন! আসন্ন আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্য তাঁকে জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। দায়িত্বের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলে আশরাফুল যে এই পদে ভবিষ্যতেও কাজ চালিয়ে যাবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

আমাদের ব্যাটসম্যানরা অনেক সময় বুঝতে পারে না কোন উইকেটে কত রান করলে ম্যাচ জেতা যাবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই অঙ্কটা তারা করতে পারে না বলেই ভুলভাবে খেলে। আমি চেষ্টা করব ওই জায়গাটা নিয়ে কাজ করতে।মোহাম্মদ আশরাফুল, ব্যাটিং কোচ, বাংলাদেশ দলমোহাম্মদ আশরাফুল যখন রংপুর রাইডার্সের কোচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ