বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রকাশ ঘটল আবারও
Published: 20th, September 2025 GMT
রাজবাড়ীতে মাজারে হামলা চালিয়ে লাশ বের করে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটল। কুমিল্লার হোমনায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিমূলক পোস্টের জেরে চারটি মাজারে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা অবশ্যই সমর্থনযোগ্য নয়। কিন্তু এর প্রতিবাদে সহিংসতা সৃষ্টি করে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করা হলো, তা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। এটি খুবই উদ্বেগজনক।
কটূক্তিমূলক পোস্ট করার অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ তাঁর অপরাধ স্বীকারের প্রমাণও পেয়েছে এবং তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে। অর্থাৎ, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল।
তবে এরপরও একদল উন্মত্ত জনতা যখন মাইকে ঘোষণা দিয়ে মাজারগুলোয় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো জঘন্য অপরাধ করে, তখন প্রশ্ন ওঠে: তাহলে কি আমরা আইনের ওপর ভরসা রাখছি না? নাকি কিছু মানুষ এই সংবেদনশীল পরিস্থিতিকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইছে? এই হামলায় মাজারগুলোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের বসতঘরও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং লুটপাট হয়েছে, যা মানবিকতার চরম লঙ্ঘন। ধর্মও এসব অপকর্মকে সমর্থন দেয় না।
পুলিশ সুপার বলেছেন, এই ঘটনার পেছনে উসকানি ও ইন্ধনদাতাদের চিহ্নিত করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশা করি, সেটি তিনি কাজে প্রমাণ করে দেখাবেন। কিছু গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে; সেখানে সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করছে এবং স্থানীয় ধর্মীয় গোষ্ঠীও এমন কর্মকাণ্ডে যুক্ত হচ্ছে।
সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ হামলা থামাতে ব্যর্থ হচ্ছে, তা নিয়ে সমালোচনা দেখা দিয়েছে নাগরিক সমাজে। এ অভিযোগও উঠেছে, সরকার শুরু থেকে কঠোর অবস্থান নেয়নি; বরং ছাড় দিয়ে নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। ফলে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এখন আরও বেশি ক্ষমতাচর্চা করছে, যার প্রতিফলন একের পর এক মাজারে হামলার মধ্য দিয়ে দেখা যাচ্ছে।
সমাজে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হলে ধর্মীয় নেতা, স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা বারবার বলে আসছি, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হলে অপরাধী ও উসকানিদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যদি বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলতে থাকে, তাহলে এমন ঘটনা আবারও ঘটবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকার আকাশ সকালে এমন ছিল কেন, জানালেন আবহাওয়াবিদ
রাজধানীতে আজ শনিবার সকাল থেকেই আকাশ ছিল ঘোলাটে। খানিকটা মনে হচ্ছিল যেন কুয়াশা পড়ছে। এর সঙ্গে ছিল প্রচণ্ড গরম আর গুমোট ভাব। সকাল ৬টা থেকে প্রায় ১০টা পর্যন্ত এমন আবহাওয়া দেখা গেছে।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য গুমোট ভাব কাটতে শুরু করেছে। রোদের দেখাও মিলেছে। সেই সঙ্গে ভ্যাপসা গরম আছে। হঠাৎ করে সকালের এমন আবহাওয়ার কয়েকটি কারণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান আজ শনিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, এখন মৌসুমি বায়ুর ক্রান্তিকাল। এই বায়ু চলে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। এ সময়টায় কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি—এটাই বৈশিষ্ট্য। তবে আজকে সকালে মূলত ‘লো ক্লাউড’ বা মেঘ নিচে নেমে আসার জন্য এমন ঘোলাটে আবহাওয়া হয়। এর সঙ্গে আবহাওয়াগত কারণ যতটা, তার চেয়ে বেশি আছে পরিবেশদূষণ।
আজকের বায়ুদূষণ পরিস্থিতি আবহাওয়াবিদের এ মতকে কিন্তু সমর্থন করছে। বর্ষার সময় সাধারণত ঢাকার বায়ুদূষণ কম থাকে। গত কয়েক দিন বৃষ্টির মধ্যে ঢাকার বায়ু নির্মল ছিল। কিন্তু আজ বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্বের ১ হাজার ২৫৭টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান তৃতীয়। আইকিউ এয়ারে ঢাকার বায়ুমান ১৭০। এ মানকে স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর বলে গণ্য করা হয়।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলছিলেন, বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ এখন অনেক। আর গুমোট ভাবের কারণও সেটাই।
এরই মধ্যে সাগরে আবার লঘুচাপ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা হয়েছে। আগামী বুধবার থেকে এই লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকায়। তবে এর প্রভাব কতটা হবে আবহাওয়াবিদেরা তা পরিষ্কার করে কিছু বলছেন না।
আজ ঢাকা এবং এর আশপাশে বৃষ্টির কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান। আগামীকাল অবশ্য বৃষ্টি কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে কোনো বৃষ্টি হয়নি। বেশির ভাগ এলাকা ছিল বৃষ্টিহীন। তবে এ সময় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়, ১৯১ মিলিমিটার।