গোপালগঞ্জে কুমার নদে বইঠার ছন্দে জমজমাট নৌকাবাইচ
Published: 20th, September 2025 GMT
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হোগলাকান্দিতে কুমার নদে দুই দিনব্যাপী নৌকাবাইচ সমাপ্ত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে প্রতিযোগিতার সমাপনী দিনে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ দেখতে নদের দুই পাড়ে ভিড় করেন কয়েক হাজার দর্শক।
হোগলাকান্দি গ্রামের যুবসমাজের আয়োজনে প্রতিযোগিতাটি হয়। এতে মোট ছয়টি নৌকা অংশ নেয়। এর মধ্যে ‘যুব এক্সপ্রেস’ নামের নৌকাটি প্রথম স্থান অধিকার করে।
গতকাল দুপুর থেকে নৌকাবাইচ দেখতে আসা দর্শনার্থীর ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। নানা বয়সী মানুষ, বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা মুঠোফোনে নৌকাবাইচের দৃশ্য ধারণ করছিলেন। নৌকাগুলো যখন জল কেটে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন নদীর দুই পাড় থেকে দর্শকেরা করতালি ও স্লোগান দিয়ে মাঝি-মাল্লাদের উৎসাহ দিচ্ছিলেন।
প্রতিবছর পরিবার-পরিজন নিয়ে নৌকাবাইচ দেখতে আসেন জানিয়ে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার বাসিন্দা ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘নৌকাবাইচের পাশাপাশি হোগলাকান্দিতে গ্রামীণ মেলা বসে। এ দিনটির জন্য আমরা অপেক্ষায় থাকি। এই মেলায় একে অপরের সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়, সব মিলিয়ে আনন্দে দিনটি কাটে।’
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নৌকাবাইচ দেখতে এসেছিল দশম শ্রেণির ছাত্রী ফাতেমা আক্তার। সে জানায়, ‘এখানে এসে নৌকাবাইচ দেখে খুব ভালো লাগছে। মেলা থেকে মাটির তৈজসপত্রসহ কিছু জিনিস কিনেছি। নাগরদোলায় উঠলাম, বিভিন্ন ধরনের মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি খেলাম—সব মিলিয়ে খুব ভালো কেটেছে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতাটির প্রথম দিনের আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম। তিনি বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। তিনি বলেন, গ্রামীণ মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখতে এ ধরনের প্রতিযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আয়োজক কমিটির প্রধান গিয়াস উদ্দিন বলেন, গ্রামীণ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে, নতুন প্রজন্মকে শিকড়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এবং সাধারণ মানুষকে বিনোদন দিতেই এই আয়োজন।
হোগলাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ও সমাজ সেবক আব্দুর রাজ্জাক মোল্যার সভাপতিত্বে এই আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পলাশ কুমার দেবনাথ, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহশ্রমবিষয়ক সম্পাদক মঈনুল ইসলাম, সহসাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফা মোল্যা, উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব আরিফুল ইসলাম, ছাত্রদলের সভাপতি আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ গল ক ন দ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনগুলোয় প্রথম আলোর জমজমাট আয়োজন
২৭ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে প্রথম আলোর। ৪ নভেম্বর ২০২৫ সংখ্যাটিতে লেখা থাকবে বর্ষ ২৮, সংখ্যা ১। যা কিছু ভালো, তার সঙ্গে প্রথম আলো—এই স্লোগান নিয়ে ১৯৯৮ সালের ৪ নভেম্বরে বেরিয়েছিল প্রথম আলোর প্রথম সংখ্যা। ঝকঝকে ছাপা, রঙিন ছবি, ১২ পৃষ্ঠার কাগজ, প্রতিদিন নতুন নতুন ফিচার পাতা, দলনিরপেক্ষতার অঙ্গীকার, বস্তুনিষ্ঠতার চর্চা, পেশাদারত্বের উৎকর্ষ আর নতুনকে মেনে নেওয়ার অবিরাম প্রয়াস—সব মিলিয়ে প্রথম আলো হয়ে ওঠে বাংলাদেশের মানুষের এক অপরিহার্য সঙ্গী। হয়ে ওঠে পরিবারেরই একজন। অল্প কয়েক বছরের মধ্যে প্রথম আলো লাভ করে সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিকের সম্মান। নানা রকমের বাধা, প্রতিকূলতা পেরিয়ে সত্যে তথ্যে প্রথম আলো আজ শুধু একটা কাগজ নয়, একটা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মও। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বে প্রথম আলো লাভ করেছে বাংলাভাষী পাঠকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা, তেমনি ওয়ান–ইফরা বা ইনমার মতো আন্তর্জাতিক সংগঠন থেকে এ গণমাধ্যম লাভ করছে সম্মানজনক স্বীকৃতি, বিশ্বসেরা আর এশিয়া সেরার পুরস্কার।
প্রথম আলোর ঢাকা অফিস থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এরই মধ্যে বেজে উঠেছে উৎসবের আনন্দলহরী। জেলায় জেলায় চলছে প্রথম আলোর লেখক–সুধী পাঠক আর শুভানুধ্যায়ীদের সম্মিলনীর প্রস্তুতি। কাগজে, অনলাইনে, ভিডিও, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের জন্য কর্মী আর অংশীজনদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে কর্মচাঞ্চল্য।
প্রথম আলো কাগজটি মোট ৪ দিন প্রকাশিত হবে বর্ধিত কলেবরে। ৪ দিনে থাকবে ৪টি ক্রোড়পত্র। লিখবেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে সেরা লেখকেরা। থাকবে দেশবরেণ্য শিল্পীদের আঁকা প্রচ্ছদ।
৪ নভেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার বের হবে ‘বৈষম্য পেরিয়ে’
২০২৪ সালের বিপুল অভ্যুত্থানে ছাত্র–জনতা পথে এসেছিল বৈষম্যের বিলোপ চেয়ে। এই ক্রোড়পত্রে লেখকেরা খুঁজে দেখছেন রাষ্ট্রের ক্ষমতাকাঠামোয়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ও রাজনীতির অঙ্গনে বৈষম্যের রূপ। খোঁজার চেষ্টা করেছেন উত্তরণের উপায়।
৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার প্রকাশ পাবে ‘বৈষম্যের অন্দরে’
সমাজ আর জনগোষ্ঠীর গভীরে থেকে যাওয়া বৈষম্য প্রতিফলিত হয় রাষ্ট্রে। আবার রাষ্ট্রীয় বৈষম্য সামাজিক বৈষম্যকে ভিত্তি দেয়। দেশের নারী–লেখক ও ভাবুকেরা উন্মোচন করে দেখিয়েছেন সমাজে ছড়িয়ে থাকা নানা বৈষম্যের চেহারা।
৬ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার আসছে ‘তারুণ্যের দিগন্ত’
তরুণদের সামনে নতুন পৃথিবীর আহ্বান। কিন্তু সে আহ্বানে সাড়া দেওয়ার পথে শত বাধা ও বৈষম্যের প্রাচীর। আবার তরুণেরাই সেসব বৈষম্যের বাধা উপড়ে ফেলে এগিয়ে চলেন। তরুণদের পথের সেসব বাধা আর বাধা পেরোনোর গল্প নিয়ে এই ক্রোড়পত্র।
৭ নভেম্বর ২০২৫, শুক্রবার প্রকাশিত হবে ‘আলোর গল্প’
সাংবাদিকতা শেষ পর্যন্ত জনমানুষের জন্য। সত্য ও তথ্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য প্রথম আলো সেসব মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ। প্রথম আলোর নানা উদ্যোগের লক্ষ্যও মানুষ। এই ক্রোড়পত্র গত একটি বছরে প্রথম আলোর সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের গল্পের সমাবেশ।
অনলাইনে থাকছে আকর্ষণীয় আয়োজন
লেখা, ছবি, ভিডিও, পডকাস্টসহ নানা কনটেন্ট দিয়ে সাজানো হবে প্রথম আলো ডটকম, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দালোকিত দিনগুলোতে প্রথম আলো ডটকম থাকবে জমজমাট। পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, টিকটকসহ সামাজিক মাধ্যমগুলোতে প্রথম আলোর ফলোয়ারদের জন্য থাকবে বাড়তি কিছু, উৎসবের উপহার।
প্রথম আলোর কর্মীরা মিলবেন প্রীতিসম্মিলনীতে
৪ নভেম্বর প্রথম আলো তার সব কর্মীকে নিয়ে আয়োজন করতে যাচ্ছে প্রীতিসম্মিলনী। রাজধানীর একটি বড় মিলনায়তনের একাধিক হলরুমজুড়ে বসবে এই আসর। তাতে সারা দেশের প্রথম আলো প্রতিনিধি, ঢাকার সর্বস্তরের স্টাফদের সঙ্গে যোগ দেবেন প্রথম আলোর আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরাও। থাকবেন অতিথি বক্তা ও শিল্পীরা।
প্রথম আলো বন্ধুসভার একটি করে ভালো কাজ
এরই মধ্যে সারা দেশে প্রথম আলোর শতাধিক বন্ধুসভা ‘একটি করে ভালো কাজ’ শীর্ষক কর্মসূচি পালন করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সুধী সম্মিলনী আয়োজনের জন্য প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বন্ধুসভা কাজ করে চলেছে উৎসাহের সঙ্গে। ঢাকা বন্ধুসভাও ১৩ নভেম্বর আয়োজন করতে যাচ্ছে বন্ধুদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উৎসব।
২০২৩ সালে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্লোগান ছিল ‘হারবে না বাংলাদেশ।’ গত বছর প্রথম আলো বলেছিল ‘জেগেছে বাংলাদেশ’। সত্যে তথ্যে ২৫, সত্যে তথ্যে ২৬ পেরিয়ে এল ২৭ বছর পূর্তির উৎসব।
প্রথম আলো আজকের দিনে, যখন চারদিকে ভুয়া খবরের ছড়াছড়ি, যখন দেশবাসী অনিশ্চয়তার ধোঁয়াশার মধ্যে দিগন্তে তাকিয়ে আছেন আলোকরেখার জন্য, তখন প্রথম আলো ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কী স্লোগান নিয়ে আসছে? জানা যাবে আর কয়েক ঘণ্টা পরই।