ব্যাংকের মুনাফায় ধাক্কা, সিএসআর ব্যয় কমে অর্ধেক
Published: 20th, September 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনিয়ম–দুর্নীতি ও লুকানো খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংক ব্যবসায় মন্দা নেমে এসেছে। এর ওপর নতুন চাপ তৈরি করেছে আন্তর্জাতিক ঋণমান মেনে চলার নিয়ম। এসব কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। তাতে দেশের ব্যাংক খাতের ব্যবসা ধাক্কা খেয়েছে। পরিণতিতে ব্যাংকগুলোর নিট মুনাফা কমেছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালে ব্যাংক খাতের সম্মিলিত নিট মুনাফা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বা ১৮ শতাংশ কমেছে।
নিট মুনাফা কমায় ব্যাংকগুলোর করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) খাতে ব্যয় কমে অর্ধেকে নেমেছে। চলতি ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাস জানুয়ারি-জুনে ব্যাংকগুলোর সিএসআরে ব্যয় হয়েছে ১৫১ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩০৯ কোটি টাকা। এর আগে ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে এই খাতে ব্যাংকগুলো ব্যয় করেছিল ৫৭১ কোটি টাকা। সিএসআর ব্যয় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যেসব ব্যাংক আগে সিএসআর ব্যয়ে এগিয়ে ছিল, তার অনেকগুলোই ইতিমধ্যে লোকসানে পড়ে গেছে। আবার কোনো কোনোটি মুনাফা কমায় সিএসআর ব্যয় কমিয়েছে। ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি ও কর পরিশোধের পর নিট লোকসানে পড়েছে ১৫টির বেশি ব্যাংক। এ তালিকায় রয়েছে সরকারি মালিকানার জনতা, অগ্রণী, বেসিক, বাংলাদেশ কৃষি (বিকেবি) ও রাজশাহী উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। আরও আছে বেসরকারি খাতের সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন, বাংলাদেশ কমার্স, ন্যাশনাল, পদ্মা, আইএফআইসি, এবি, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকসহ কয়েকটি।
বিদ্যমান নিয়মে কোনো ব্যাংক নিট লোকসানে থাকলে সিএসআর খাতে কোনো ব্যয় করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী, একটি ব্যাংক ১০০ টাকা সিএসআর ব্যয় করলে তার মধ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ৩০ শতাংশ করে মোট ৬০ শতাংশ; পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন খাতে ২০ শতাংশ এবং আয়-উৎসারী কাজ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্রীড়া, সংস্কৃতিসহ অন্যান্য খাতে বাকি ২০ শতাংশ খরচ করা যাবে।
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সিএসআর খাতে সর্বোচ্চ ২৪ কোটি টাকা ব্যয় করেছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক। অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে শাহজালাল ইসলামী ১৪ কোটি, যমুনা ব্যাংক ১২ কোটি, প্রিমিয়ার ১১ কোটি, পূবালী ৯ কোটি ৮০ লাখ, এক্সিম ৭ কোটি, ইসলামী ব্যাংক ৬ কোটি ৬৮ লাখ, ডাচ্-বাংলা ৬ কোটি ৬৫ লাখ, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ৬ কোটি ৩০ লাখ এবং ঢাকা ব্যাংক ৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয় করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক খাতে গত বছর সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার নিট মুনাফা করেছে বহুজাতিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। এরপর ব্র্যাক ব্যাংক ১ হাজার ২১৪ কোটি, সিটি ব্যাংক ১ হাজার ৮৫ কোটি টাকা মুনাফা করে। এ ছাড়া বহুজাতিক এইচএসবিসি ১ হাজার ৭৯ কোটি টাকা এবং স্থানীয় সোনালী ৮৬৬ কোটি, পূবালী ৭৬২ কোটি, ইস্টার্ন ৭৫০ কোটি, প্রাইম ৭৪৫ কোটি, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন ৬০০ কোটি, উত্তরা ৪৮৮ কোটি, ডাচ্–বাংলা ৪৭৩ কোটি ও ট্রাস্ট ব্যাংক ৩৭৩ কোটি টাকা নিট মুনাফা করে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যাংকের মুনাফায় ধাক্কা, সিএসআর ব্যয় কমে অর্ধেক
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনিয়ম–দুর্নীতি ও লুকানো খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংক ব্যবসায় মন্দা নেমে এসেছে। এর ওপর নতুন চাপ তৈরি করেছে আন্তর্জাতিক ঋণমান মেনে চলার নিয়ম। এসব কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। তাতে দেশের ব্যাংক খাতের ব্যবসা ধাক্কা খেয়েছে। পরিণতিতে ব্যাংকগুলোর নিট মুনাফা কমেছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালে ব্যাংক খাতের সম্মিলিত নিট মুনাফা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বা ১৮ শতাংশ কমেছে।
নিট মুনাফা কমায় ব্যাংকগুলোর করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) খাতে ব্যয় কমে অর্ধেকে নেমেছে। চলতি ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাস জানুয়ারি-জুনে ব্যাংকগুলোর সিএসআরে ব্যয় হয়েছে ১৫১ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩০৯ কোটি টাকা। এর আগে ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে এই খাতে ব্যাংকগুলো ব্যয় করেছিল ৫৭১ কোটি টাকা। সিএসআর ব্যয় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যেসব ব্যাংক আগে সিএসআর ব্যয়ে এগিয়ে ছিল, তার অনেকগুলোই ইতিমধ্যে লোকসানে পড়ে গেছে। আবার কোনো কোনোটি মুনাফা কমায় সিএসআর ব্যয় কমিয়েছে। ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি ও কর পরিশোধের পর নিট লোকসানে পড়েছে ১৫টির বেশি ব্যাংক। এ তালিকায় রয়েছে সরকারি মালিকানার জনতা, অগ্রণী, বেসিক, বাংলাদেশ কৃষি (বিকেবি) ও রাজশাহী উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। আরও আছে বেসরকারি খাতের সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন, বাংলাদেশ কমার্স, ন্যাশনাল, পদ্মা, আইএফআইসি, এবি, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকসহ কয়েকটি।
বিদ্যমান নিয়মে কোনো ব্যাংক নিট লোকসানে থাকলে সিএসআর খাতে কোনো ব্যয় করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী, একটি ব্যাংক ১০০ টাকা সিএসআর ব্যয় করলে তার মধ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ৩০ শতাংশ করে মোট ৬০ শতাংশ; পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন খাতে ২০ শতাংশ এবং আয়-উৎসারী কাজ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্রীড়া, সংস্কৃতিসহ অন্যান্য খাতে বাকি ২০ শতাংশ খরচ করা যাবে।
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সিএসআর খাতে সর্বোচ্চ ২৪ কোটি টাকা ব্যয় করেছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক। অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে শাহজালাল ইসলামী ১৪ কোটি, যমুনা ব্যাংক ১২ কোটি, প্রিমিয়ার ১১ কোটি, পূবালী ৯ কোটি ৮০ লাখ, এক্সিম ৭ কোটি, ইসলামী ব্যাংক ৬ কোটি ৬৮ লাখ, ডাচ্-বাংলা ৬ কোটি ৬৫ লাখ, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ৬ কোটি ৩০ লাখ এবং ঢাকা ব্যাংক ৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয় করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক খাতে গত বছর সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার নিট মুনাফা করেছে বহুজাতিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। এরপর ব্র্যাক ব্যাংক ১ হাজার ২১৪ কোটি, সিটি ব্যাংক ১ হাজার ৮৫ কোটি টাকা মুনাফা করে। এ ছাড়া বহুজাতিক এইচএসবিসি ১ হাজার ৭৯ কোটি টাকা এবং স্থানীয় সোনালী ৮৬৬ কোটি, পূবালী ৭৬২ কোটি, ইস্টার্ন ৭৫০ কোটি, প্রাইম ৭৪৫ কোটি, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন ৬০০ কোটি, উত্তরা ৪৮৮ কোটি, ডাচ্–বাংলা ৪৭৩ কোটি ও ট্রাস্ট ব্যাংক ৩৭৩ কোটি টাকা নিট মুনাফা করে।