বিকাশ, নগদ, রকেটসহ এমএফএস প্রতিষ্ঠানের সেবার মান ঠিক আছে কি না, দেখতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক
Published: 20th, September 2025 GMT
গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন সুরক্ষিত রাখতে আরও নজরদারিতে আসছে দেশের বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার ও পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটরগুলোকে নজরদারির আওতায় আনা হচ্ছে। এ জন্য এসব সেবার কার্যক্রম নিয়মিত মূল্যায়নের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মাধ্যমে জানা যাবে, কোন প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের কতটা মানসম্মত সেবা দিচ্ছে।
বর্তমানে দেশে ১৩টি এমএফএস ও ২১টি পিএসপি এবং পিএসও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রতি একটি চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্বমূল্যায়নপ্রক্রিয়ায় অংশ নিতে বলা হয়েছে।
যেভাবে মূল্যায়ন করা হবেপ্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা যাচাইয়ে নির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র ও কিছু সূচক দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক ও আইনি কাঠামো, আর্থিক অবস্থা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।
মূল্যায়নের জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নগুলোর উত্তর ‘হ্যাঁ’, ‘না’ অথবা ‘আংশিক’ আকারে দিতে হবে। প্রতিটি উত্তরের জন্য থাকবে মন্তব্য কলাম, যা পূরণ করা বাধ্যতামূলক।
মান নির্ধারণ ও ব্যবস্থা গ্রহণমূল্যায়নে প্রাপ্ত স্কোরের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করা হবে—শক্তিশালী, সন্তোষজনক, মোটামুটি, প্রান্তিক ও দুর্বল। ফলে কোন প্রতিষ্ঠানের কোন খাতে ঝুঁকি রয়েছে, তা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই উদ্যোগ ডিজিটাল লেনদেনব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে, যা গ্রাহকদের আস্থা বাড়াতে সাহায্য করবে। ডিজিটাল লেনদেন যখন বাড়ছে, তখন এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী মনে করছেন তাঁরা।
দেশে দীর্ঘদিন ধরেই মোবাইলে আর্থিক সেবা দিচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনব্যবস্থা সম্পন্ন করে দিচ্ছে পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) ও পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটর (পিএসও)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিশোধসংক্রান্ত কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বমূল্যায়নপ্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এতে দেশের ডিজিটাল লেনদেনব্যবস্থার ওপর মানুষের বিশ্বাস আরও বাড়বে। সামনে ডিজিটাল লেনদেন বাড়বে। তাই এ সময়ে এই উদ্যোগ সময়োপযোগী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড জ ট ল ল নদ ন ব যবস থ আর থ ক
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়েবসাইটের কুকিজ সংগ্রহের অনুরোধ ভালো না খারাপ, নিরাপত্তাঝুঁকি কতটা
প্রথমবার কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে গেলেই পর্দায় দেখা যায় ‘অ্যাকসেপ্ট কুকিজ’ বার্তা। বার্তাটিতে ক্লিক করে তবেই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হয়। কুকিজ মূলত একজন ব্যক্তির ওয়েবসাইট ব্যবহারের সব তথ্য জমা রাখে। ফলে ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনি যা দেখছেন, যা কিছু নামাচ্ছেন, সবকিছুর তথ্য জমা থাকে কুকিজে। পরবর্তী সময়ে কুকিজে থাকা আপনার আগের তথ্য পর্যালোচনা করে বিভিন্ন আধেয় বা কনটেন্ট দেখিয়ে থাকে ওয়েবসাইট। এতে ওয়েবসাইট ব্রাউজিং অনেকটা সহজ হলেও কুকিজ বিজ্ঞাপনদাতা ও তৃতীয় পক্ষকে ব্যবহারকারীর অনলাইন কার্যক্রমে নজরদারি করার সুযোগ করে দেয়। ফলে ওয়েবসাইটের কুকিজ অনেক সময় ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
কুকিজের ধরনওয়েবসাইটে ব্যবহৃত কুকিজ সাধারণত চার ধরনের হয়ে থাকে, যা ‘এসেনশিয়াল কুকিজ’, ‘ফাংশনাল কুকিজ’, ‘অ্যানালাইটিকস কুকিজ’ ও ‘অ্যাডভারটাইজিং কুকিজ’ নামে পরিচিত। এসেনশিয়াল কুকিজ মূলত ওয়েবসাইটে লগইন বা শপিং কার্ট চালু রাখতে ব্যবহার করা হয়। ফলে এসব কুকিজের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ করা যায় না। ফাংশনাল কুকিজ ব্যবহারকারীর ভাষা বা অঞ্চলভিত্তিক সেটিংস সংরক্ষণ করে। এ ছাড়া অ্যানালাইটিকস কুকিজ ব্যবহারকারীর ওয়েবসাইট ব্যবহারের সব তথ্য সংগ্রহ করে। অন্যদিকে অ্যাডভারটাইজিং কুকিজ ভিন্ন ভিন্ন ওয়েবসাইটে ব্যবহারকারীর কার্যক্রম অনুসরণ করে লক্ষ্যভিত্তিক বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে।
কুকিজ সংগ্রহের অনুরোধে রাজি হবেন নাকি হবেন না‘অ্যাকসেপ্ট কুকিজ’ বার্তায় ক্লিক করলে ওয়েবসাইটের প্রায় সব সুবিধাই ব্যবহার করা যায়। তবে একই সঙ্গে বিজ্ঞাপনদাতা ও তৃতীয় পক্ষের নজরদারি বৃদ্ধি পায়। কুকিজ সংগ্রহের অনুরোধে রাজি না হলে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কিছুটা সুরক্ষিত থাকলেও অনেক সময় ওয়েবসাইটের সব সুবিধা স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার করা যায় না। তবে অনেকেই ওয়েবসাইট সম্পর্কে না জেনেই ‘অ্যাকসেপ্ট অল’ বার্তায় ক্লিক করেন। ফলে অপরিচিত বিভিন্ন ওয়েবসাইটের কাছে ব্যবহারকারীর ইন্টারনেট ব্যবহারের ইতিহাস চলে যায়। তাই প্রয়োজনীয় বা গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট ছাড়া অপরিচিত প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের কুকিজ সংগ্রহের অনুরোধে রাজি না হওয়াই ভালো।
সুবিধা বনাম গোপনীয়তাকুকিজ নিজে ক্ষতিকর নয়। তবে অনলাইন অভিজ্ঞতা সহজ করলেও কুকিজের কারণে গোপনীয়তার ঝুঁকিও কম নয়। তাই কুকিজ সংগ্রহের অনুরোধ সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করে সম্মতি দিতে হবে। প্রয়োজনে ব্রাউজারের মাধ্যমে কুকিজ সংগ্রহের কার্যক্রম সীমিত বা বন্ধ করতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া