পার্লামেন্ট ছাড়া পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রশ্ন তোলা অবান্তর: আনিস
Published: 20th, September 2025 GMT
পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হলে আগে সংবিধান মেনে পার্লামেন্টে পাস করতে হবে। কিন্তু পার্লামেন্ট ছাড়া এই পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রশ্ন তোলা অবান্তর- এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানে হাওলাদার টাওয়ারে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কিনা প্রশ্ন আনিসের
সরকারপ্রধান পালানোর পথ পাবে না: কাজী মামুন
রাজনৈতিক দল দ্বারা জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিষয় ও চলমান জাতীয় রাজনীতি নিয়ে জাতীয় পার্টির অবস্থান জাতির সামনে তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দলটি।
পিআর পদ্ধতির নির্বাচন নিয়ে জাতীয় পার্টির অবস্থান জানতে চাইলে দলটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিস বলেন, “আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট, বাংলাদেশে পিআর পদ্ধতির প্রথম প্রবক্তা এরশাদ। আমাদের পার্টিই। আমরাও চাই পিআর। কিন্তু আমাদের সংবিধান তো মানতে হবে। আমি যদি সংবিধান মানি, তাহলে আমি এখনতো পিআর পদ্ধতিতে যেতে পারি না। আমাদের পার্লামেন্টে যেতে হবে।”
তিনি বলেন,“এটা নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হতে পারে যে আগামী পার্লামেন্টে আমরা এই কাজগুলো করব। কিন্তু এই মুহূর্তে পিআর পদ্ধতি নির্বাচন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। পিআরে নির্বাচন করতে হলে পার্লামেন্ট থাকতে হবে, টু থার্ড মেজরিটি নিয়ে সেটা পাস করতে হবে। যেহেতু পার্লামেন্ট নাই, এ অবস্থায় পিআর নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর।”
জাপাকে বিটিম কিংবা বিরোধী দল বানানোর অভিযোগ উঠছে- বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে দলটির এই শীর্ষনেতা বলেন, “স্পষ্টভাবে বলতে পারি, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এখনও কোনো কথা বলিনি, যোগাযোগ করিনি। কেউ কাউকে বিরোধী দল বানানোও সম্ভব নয় যদি দেশে একটা নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ্ব নির্বাচন হয়। কেউ বলতে পারবে না কে সরকারি দল কিংবা বিরোধী দল হবে। আপনারা ডাকসু নির্বাচন দেখেছেন, সেটা সম্ভব হয়নি।”
“আমরা আবারও বলছি, অনেক জীবনহানি হয়েছে, এতকিছুর পরও যদি আবারও এমন নির্বাচনে ফিরে যায় তাহলে এর চেয়ে দুঃখের আর কিছু হতে পারে না”, যোগ করেন ব্যারিস্টার আনিস।
জাতীয় পার্টি আগামীতে জোটবদ্ধ নির্বাচন করবে কিনা জানতে চাইলে দলটির চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা জোটবদ্ধ নির্বচান করব, তবে কারসঙ্গে জোট করব সেটা এখনও ঠিক হয়নি। আমরা আলোচনা করে ঠিক করব।”
ভবিষ্যতে যে নির্বাচনগুলো হবে, সবচাইতে বড়দল তারাও জোটে যাবে। বিগত নির্বাচনে জাপা প্রার্থীদের পোষ্টারে আওয়ামী লীগ মনোনীত বলে প্রচার করা হয়েছিল, এমন এক প্রশ্নের জবাবে আনিস বলেন, “মহাজোটের অধীনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নয় বরং মহাজোট সমর্থিত পোস্টার ছাপানো হয়েছে। আমার পোস্টারে কিছু ছিল না, আমাদের প্রার্থীদের কারো কারো মহাজোট সমর্থিত লেখা হয়েছে।”
‘‘আমি বারবার বলছি, রাজনীতিতে যেকোনো সময় যে কারও সঙ্গে জোট হতে পারে। নির্বাচনী জোট। আমরাও অতীতে করেছি, কিন্তু সেটা আদর্শিক নয়। সময়ের প্রয়োজনে নির্বাচনে বেশি আসন পেতে কিংবা নিজেদের সেরা অবস্থানের জন্য করা হয়। যেমনটা এখন জামায়াত ও হেফাজত কিংবা ইসলামী আন্দোলনের ক্ষেত্রে হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদকে এদেশের শ্রেষ্ঠ সংস্কারক উল্লেখ করে তার অবদানের কথা স্বীকার করে যে কোনো সংস্কারের প্রয়োজনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনার জন্য বর্তমান সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব এবি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, নির্বাহী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, নাসরিন জাহান রতনা, লিয়াকত হোসেন খোকা, মোস্তফা আল মাহমুদ, নাজমা আকতার, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভুইয়া, আরিফুর রহমান খান, সরদার শাহজাহান, নূরুল ইসলাম মিলন, মোবারক হোসেন আজাদ, বেলাল হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক, মাতলুব হোসেন লিয়ন, শেখ আলমগীর হোসেন, জামাল রানা, আনোয়ার হোসেন তোতা, হাজী নাসির উদ্দিন সরকার, ডাক্তার সেলিমা খান, শরফুদ্দিন আহমেদ শিপু, আনোয়ার হাওলাদার, মাসুক রহমান, সুজন দে, রেজাউল করিম, গোলাম মোস্তফা, এস এম আমিনুল হক সেলিম, তাসলিমা আকবর রুনা, নাজমুল খান, শাহনাজ পারভীন, জিয়াউর রহমান বিপুল, মিজানুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার লিয়াকত আলী, এস এম হাসেম, আব্দুস সাত্তার, মাসুদুর রহমান মাসুম, আলমগীর হোসেন, আমিনুল হক সাঈদুল, সাইফুল ইসলাম শোভন প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ ন র রহম ন ল ইসল ম আম দ র সরক র দলট র
এছাড়াও পড়ুন:
বিকেএমইএ সভাপতি হাতেম ‘অভ্যুত্থানের শত্রু’ : এনসিপি নেতা আল আমিন
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল বিপর্যয় ও উত্তরণের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীক সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমকে গণ-অভ্যুত্থানের শত্রু আখ্যা দিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব ও শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আব্দুল্লাহ আল আমিন। এ সময় তিনি হাতেমকে এ আয়োজনে স্পেস দেয়া উচিৎ হয়নি বলেও মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ শহরের শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলার বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে এক বিশেষ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।
সভায় আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, ‘আজ আসার পর দেখলাম একজন স্টেজে এসে ছাত্ররা কীভাবে পড়ালেখা করবে, রেজাল্ট ভালো করবে, ওই পরামর্শ দিচ্ছেন; যে ব্যক্তি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনার মিটিংয়ে উপস্থিত হয়ে কীভাবে ছাত্রদের আন্দোলন দমন করতে হবে, সেই অনুরোধ করেছিলেন।’
আব্দুল্লাহ আল আমিন আরও বলেন, ‘আন্দোলন চলাকালীন শেখ হাসিনার সামনে দাঁড়িয়ে সে ছাত্রদের দমনের ব্যাপারে বলেছে। তাকে আমরা এই স্পেস দিতে পারি না। খুবই দুঃখ লেগেছে, নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমরা এগুলো জানি। জানার পরও কেন আমরা এটা করি? আমরা কি সব ভুলে গেলাম। এই ভুলে যাওয়া আমাদের উচিত হয়নি।
এর আগে এই এনপিসি নেতা বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক নানান ধরনের জটিলতা হয়েছে মানে ম্যানেজিং কমিটি এড কমিটি কোথাও কমিটি নাই কোথাও অধ্যক্ষ বা শিক্ষক আছে নাই বা নানান ধরনের ইস্যু সৃষ্টি হয়েছে।
এইজন্য এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ছিল যেই ধরনের চেইন অফ কমান্ডে স্কুল কলেজ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চলে ওভাবে চলতে পারেনি। ছাত্রদের মধ্যেও গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রিক একটা ট্রমা আছে। আমরা যখন শহীদ পরিবার বা আহতদের সাথে কাজ করি, আন্দোলনকারীদের মধ্যে এক ধরনের ট্রমা আছে।
তাদের যে আবার পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে হবে। সে মানসিকতা সবার হয়ে ওঠে নাই। আমরা যেই প্রফেশনে ছিলাম অভুত্থানের পরে আবার যে আমাদের কাজটা আমরা করব এই মানসিকতাটা হয় নাই। তো আমাদের পুরা ন্যাশনাল একটা গ্রুমিং এর প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “গ্রীক পৌরাণিক কাহিনীতে আমরা দেখছিলাম যে, একিলিস হিল বলতে একটা ব্যাপার আছে। একিলিসের মতো এত বছরে হাসিনা প্রশ্নফাস, জালিয়াতি অটোপাসের মতো নানা ধরনের বড় বড় লুপস তারা রেখে দিছে। কিন্তু তারা উপস্থাপন করছে একটা বিশাল সাফল্য। এই দুর্বলতাটা আমরা উপলব্ধি করতে পারছি এটা সামনে আমাদের জেনারেশন, ছাত্র, দেশের জন্য ভালো হবে।”
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ ড. ফজলুল হক রুমন রেজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদ, বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার এহসানুল কবির, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শোয়াইব আহমাদ খান, নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. আ.ফ.ম. মশিউর রহমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম সুজন, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু সাউদ মাসুদ, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মাইনুদ্দীন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মহানগর সভাপতি মুফতি মাসুদ বিল্লাহ প্রমুখ।