যত দূর মনে পড়ে, ১৯৯৫ সালে আমি ইন্ডিয়ায় ছিলাম। তখন কিছু লেখালেখি করতাম, আরবিতে কিছু প্রবন্ধ লিখতাম। সে সময় টাইমস-এ এক ভদ্রলোক মুসলিম নারীদের নিয়ে এক সপ্তাহে বেশ কিছু লেখা দিচ্ছিলেন। তিনি বলার চেষ্টা করছিলেন যে ইসলাম আসলে জ্ঞান অর্জনের দিক দিয়ে নারীদের কত পশ্চাৎপদ করে রেখেছে!

আমার মনে হলো তার লেখায় তথ্যের অভাব আছে, মানুষ আসলে অনেক কিছু জানেই না। যেহেতু আমি হাদিসশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করতাম, জানতাম যে কত বিপুলসংখ্যক নারী হাদিসের শিক্ষকতা করেছেন, হাদিসচর্চাকে ছড়িয়ে দিয়েছেন।

আমার মাথায় তখন কোনো পরিকল্পনা বা প্রস্তাব ছিল না। তবু ভাবলাম, নারীদের এই তথ্যগুলোকে একত্র করব। হয়তো বড়জোর দু-এক খণ্ডের একটা কাজ হবে। অন্তত এসব অপপ্রচার কিংবা ভুল–বোঝাবুঝির একটা জবাব দেওয়া যাবে। আরও একটা লাভের কথাও মাথায় এসেছিল যে এই বই থেকে মুসলিম নারীরা জ্ঞানের চর্চায় উৎসাহিত হবেন।

কাতার ইউনিভার্সিটিতে একটা বক্তৃতা দিই। ওখানে এক শ্রোতা বলেন, এ ধরনের কাজ আসলে নারীদের বিরুদ্ধে পুরুষের একধরনের ষড়যন্ত্র।

যদিও জ্ঞানের অনেক শাখায় নারীরা আজকাল অনেক এগিয়ে গেছেন, কিন্তু ইসলামকে জানার দৌড়ে তাঁরা অনেকটা পিছিয়ে। হয়তো এমন একটা কাজ তাঁদের কোরআন ও হাদিসকে জেনে বিদুষী হতে উৎসাহ দেবে। শুরুতে ভাবতে পারিনি যে এ কাজটা এত বিশাল এবং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। হয়তো আল্লাহ বরকত ঢেলে দিয়েছেন।

আমি শুধু কাজ করছিলাম আর নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছিল। মনে আছে, ২০১০ সালে কাতার গেলে শাইখ ইউসুফ কারজাভি আমাকে এ নিয়ে তাঁর মসজিদে কিছু বলতে অনুরোধ করেন। নারী বর্ণনাকারীদের বিপুল সংখ্যা দেখে তিনিও বিস্মিত হন এবং বলেন যেন আমি আপাতত এখানে ইতি টানি। নইলে কাজটি কোনো দিন একেবারে শেষ হবে না।

তাঁর পরামর্শ গ্রহণ করি। একই সময়ে কাতার ইউনিভার্সিটিতে একটা বক্তৃতা দিই। ওখানে এক শ্রোতা বলেন, এ ধরনের কাজ আসলে নারীদের বিরুদ্ধে পুরুষের একধরনের ষড়যন্ত্র। তো এভাবেই আসলে কাজটি শুরু হয়েছিল।

আরও পড়ুনমুসলিম নারী চিকিৎসকেরা হারিয়ে গেলেন কেন১৩ জুন ২০২৫‘আল–ওয়াফা বি আসমায়িন নিসা’ গ্রন্থের প্রচ্ছদ; যা ৪৩ খণ্ডে প্রকাশিত এবং যাতে প্রায় ১০ হাজার হাদিস বর্ণনাকারী নারীর জীবন–কর্ম সংকলিত হয়েছে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সখীপুরে স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

টাঙ্গাইলের সখীপুরে জিহাদ (১০) নামের এক স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, তুচ্ছ ঘটনায় মায়ের বকুনি খেয়ে অভিমানে সে আত্মহত্যা করেছে। 

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সখীপুর উপজেলার বেতুয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে জিহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। 

জিহাদ ওই এলাকার প্রবাসী আনিস মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত।

জিহাদের চাচাত ভাই জনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বাড়িতে একই বয়সের চাচাত ভাইয়ের সঙ্গে জিহাদের ঝগড়া হয়। এতে রাগ করে জিহাদের মা তাকে বকাঝকা করেন। এরপর সে দৌড়ে নিজের ঘরে যায়। রাত ৮টার দিকে ওই ঘরে ঢুকে জিহাদকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, জিহাদের মা বিলাপ করছেন। স্বজনরা তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

আরিফুর রহমান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি আক্ষেপ করে বলেন, “ঘটনাটি মর্মান্তিক। এটি বর্তমান সময়ে যারা বাবা-মা আছেন, তাদের জন্য শিক্ষণীয়। শিশুর প্রতি কেমন আচরণ করতে হবে, এ বিষয়ে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।”

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আবু বকর সিদ্দিক জানিয়েছেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশকে তা জানানো হয়েছে।

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভূঞা বলেছেন, মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

ঢাকা/কাওছার/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ