একই দৃশ্য বারবার ফিরে আসছে। বার্তাটাও ক্রমেই আরও স্পষ্ট হচ্ছে—ফুটবল নিজেই এখন খেলোয়াড়দের ‘শত্রু’! ফুটবলারদের কোণঠাসা হয়ে পড়ার কারণও এখন অতিরিক্ত ম্যাচ খেলা। যেখানে সর্বশেষ সতর্কবার্তাটি এসেছে লামিনে ইয়ামালের কাছ থেকে। গত মাসে স্পেন জাতীয় দলের হয়ে অনুশীলনে চোট পান ইয়ামাল। এর পর থেকেই তাঁর চোট নিয়ে বার্সেলোনা ও স্পেন ফুটবল ফেডারেশন একে অপরের দিকে অভিযোগের তির ছুড়তে শুরু করে।

বর্সা কোচ হানসি ফ্লিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘এটা লজ্জাজনক। সে ব্যথা নিয়েই জাতীয় দলে গেছে, খেলেছেও.

.. এটা খেলোয়াড়দের যত্ন নেওয়া নয়।’ স্পেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে অবশ্য দলের চিকিৎসাব্যবস্থাকে রক্ষা করে পাল্টা জবাব দেন।

তবে এই জবাব ও পাল্টা জবাবের মধ্যে বাস্তবতা হচ্ছে, ইয়ামাল তিন সপ্তাহের মতো মাঠের বাইরে থাকবেন। কিন্তু এটাই শেষ কথা নয়। ভেতরের সত্যটা বোধ হয় আরও বড়। ইয়ামালের এই ঘটনা এমন চিত্রকে সামনে এনেছে, যা অনেকে দেখেও দেখছেন না। সেটি হচ্ছে, অতিরিক্ত খেলার চাপ তারকাদের রীতিমতো শেষ করে দিচ্ছে।

আরও পড়ুনদুই কোচের টানাটানির মধ্যে নতুন করে ইয়ামালের চোট০৪ অক্টোবর ২০২৫

ফিফপ্রোর (বিশ্ব ফুটবলার ইউনিয়ন) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে ফুটবলারদের অতিরিক্ত চাপের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। এই প্রতিবেদনে ইয়ামাল হচ্ছেন সেই নিখুঁত উদাহরণ যা দেখায়, ফুটবল কোথায় পৌঁছাবে যদি কেউ এখনই লাগাম না টানেন।

মাত্র ১৮ বছর বয়সেই বার্সার এ উইঙ্গার খেলেছেন ১৩০টি পেশাদার ম্যাচ, মাঠে ছিলেন ৯,৭৭২ মিনিট—যা একই বয়সে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, জাভি হার্নান্দেজ এবং সেস ফ্যাব্রেগাসের ম্যাচসংখ্যা কিংবা মাঠে থাকার সময়ের চেয়েও প্রায় দ্বিগুণ!
একই বয়সের জুড বেলিংহামের চেয়েও ৩১ শতাংশ সময় বেশি মাঠে ছিলেন ইয়ামাল, অথচ বেলিংহামকেই অনেকে ‘অতিরিক্ত ব্যবহারের’ উদাহরণ হিসেবে সামনে আনতেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান প্রজন্মের তরুণ ফুটবলাররা আগের প্রজন্মের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ সময় মাঠে কাটাচ্ছে।

ইয়ামালের মতো বলা যায় উরুগুয়ে ও রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ফেদে ভালভের্দের কথাও। ২০২৪-২৫ মৌসুমে তিনি খেলেছেন ৭২টি ম্যাচ ও মাঠে ছিলেন মোট ৬,৬৭৬ মিনিট, যা অন্য যে কারও চেয়ে বেশি। এর মধ্যে ৮১ শতাংশ ম্যাচই তিনি খেলেছেন পরপর, অর্থাৎ দুই ম্যাচের মাঝে পাঁচ দিনেরও কম বিশ্রাম পেয়েছেন। মাসের পর মাস, তিন-চার দিন পরপর মাঠে নেমে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। চিকিৎসকদের মতে, এই ছন্দ ও গতি ধরে রাখা অসম্ভব।

চোট বেশ ভুগিয়েছে রদ্রিকে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

বিসিবি নির্বাচন: কীভাবে নির্বাচিত হন পরিচালকেরা, কে হন সভাপতি

রাত পোহালেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন। নানা ঘটনাপ্রবাহে কয়েক দিন ধরে ক্রীড়াঙ্গনের আলোচিত বিষয়ই হয়ে উঠেছে এবারের নির্বাচন। এই নির্বাচনপ্রক্রিয়া কেমন, পরিচালক বা সভাপতি নির্বাচিত হন কীভাবে—চলুন জেনে নিই।কত বছর পরপর ভোট হয়, কতজন পরিচালক

বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের ভোট হয় প্রতি চার বছর পরপর। বোর্ডে মোট পরিচালকের সংখ্যা ২৫। তিনটি ক্যাটাগরি থেকে আসেন পরিচালকেরা। ক্যাটাগরি-১–এ সাতটি বিভাগীয় ক্রিকেট সংস্থা থেকে ১০ জন পরিচালক নির্বাচিত হন।

ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা—এই তিনটি বিভাগ থেকে দুজন করে ও রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, সিলেট বিভাগ থেকে একজন করে পরিচালক নির্বাচিত হন। ক্যাটাগরি-২ থেকে ঢাকা মহানগরের ক্লাবগুলোর প্রতিনিধিদের মধ্যে থেকে ১২ জন ও ক্যাটাগরি-৩–এ সাবেক অধিনায়ক, ক্রিকেটার ও কয়েকটি সংস্থার প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে ১ জন পরিচালক নির্বাচিত হন। সব মিলিয়ে ২৩ জন পরিচালক নির্বাচন করে আসেন। এর বাইরে দুজনকে সরাসরি পরিচালক মনোনীত করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।

কীভাবে নির্বাচিত হন বিসিবি পরিচালকেরা, কারা দেন ভোট

বিসিবি নির্বাচনে যে তিনটি ক্যাটাগরি রয়েছে, সব কটির ভোটারই আলাদা আলাদা। ক্যাটাগরি-১–এ প্রতিটি জেলা ও বিভাগ থেকে একজন করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তাঁদের মনোনয়ন দিয়ে থাকেন জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসক। আগের নির্বাচনগুলোতে জেলা থেকে কাউন্সিলর নির্বাচনের কোনো মানদণ্ড ছিল না। তবে এবার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্য হওয়ার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে।

জেলা ও বিভাগের কাউন্সিলরদের ভোটে শুধু নির্দিষ্ট ওই বিভাগের পরিচালকেরাই নির্বাচিত হন। সহজভাবে বললে—ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর প্রতিনিধিরা চট্টগ্রাম বা অন্য কোনো বিভাগের পরিচালক কে হবেন, সেই ভোট দিতে পারেন না। একই কথা প্রযোজ্য অন্য দুটি ক্যাটাগরির ক্ষেত্রেও—মানে ঢাকার ক্লাবের প্রতিনিধি বা ক্যাটাগরি-৩–এর ভোটাররা অন্য ক্যাটাগরির পরিচালকদের ভোট দিতে পারেন না।

আরও পড়ুনবিসিবির পরিচালক পদে প্রার্থী হলেন যাঁরা, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতলেন কারা০১ অক্টোবর ২০২৫

ক্যাটাগরি-২–এ ভোট দেন নির্বাচন হওয়ার ঠিক আগের মৌসুমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগে খেলা ক্লাবগুলোর প্রতিনিধিরা। এই ক্লাবগুলোর ভোটে বিসিবির মোট ১২ জন পরিচালক নির্বাচিত হন। এবারের নির্বাচনে এই ক্যাটাগরিতে মোট ৭৬ জন ভোটার ছিলেন। তবে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় তৃতীয় বিভাগ বাছাই পেরিয়ে আসা বিতর্কিত ১৫ ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

পরিচালকের বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ভোটার ক্যাটাগরি-৩–এ। ৪৫ জন ভোটারের ভোটে এই ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হন ১ জন পরিচালক। জাতীয় দলের সাবেক ৫ অধিনায়ক ও সাবেক ক্রিকেটার ১০ জনও এই ক্যাটাগরির ভোটার। এর বাইরেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এবং কয়েকটি সংস্থার প্রতিনিধিরা এই ক্যাটাগরিতে ভোট দেন।

বিসিবি সভাপতি কীভাবে নির্বাচিত হন

সভাপতি হওয়ার যোগ্যতা হিসেবে পরিচালক হওয়ার শর্ত আছে। অর্থাৎ নির্বাচিত হয়ে আসা ২৩ ও ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত দুজন পরিচালকের মধ্য থেকেই কেউ সভাপতি হবেন। পরিচালকদের ভোটেই নির্বাচিত হবেন সভাপতি।

এবার নির্বাচনে প্রার্থী কারা

বিসিবির এবারের নির্বাচনে ক্যাটাগরি-১–এ ভোট হবে শুধু ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে। চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আহসান ইকবাল চৌধুরী ও আসিফ আকবর, খুলনা থেকে আবদুর রাজ্জাক ও জুলফিকার আলী খান, সিলেট থেকে রাহাত সামস্ ও বরিশাল থেকে শাখাওয়াত হোসেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন।

ঢাকা বিভাগ থেকে এবার নির্বাচনে লড়বেন বর্তমান বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমূল আবেদীন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিসিবি নির্বাচন: কীভাবে নির্বাচিত হন পরিচালকেরা, কে হন সভাপতি
  • নাভি কত দিন পরপর কীভাবে পরিষ্কার করতে হয়