১৫ সেনা কর্মকর্তার আইনজীবী হিসেবে সরোয়ার হোসেনের নাম প্রত্যাহার
Published: 9th, November 2025 GMT
মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার ১৫ জন সেনা কর্মকর্তার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে এম সরোয়ার হোসেনের নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আজ রোববার এই প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
গত ২২ অক্টোবর এই ১৫ সেনা কর্মকর্তার পক্ষে সরোয়ার হোসেনসহ পাঁচজন আইনজীবী ওকালতনামা জমা দিয়েছিলেন। ট্রাইব্যুনালের কাছে আজকে তিনি সেই ওকালতনামা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেন। তাঁর সেই আবেদন মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।
পরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আইনজীবী সরোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ১৫ সেনা কর্মকর্তার পক্ষে গত ২২ অক্টোবর তাঁরা পাঁচজন আইনজীবী ওকালতনামা জমা দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময় যখন ডকুমেন্টসে (নথিপত্র) দেখা গেছে, তিনি নিজে আগে সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছিলেন। সেই অভিযোগে যে সেনা কর্মকর্তার নাম রয়েছে, তিনি এই ১৫ সেনা কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন। প্রফেশনাল এথিকস অ্যান্ড কডাক্ট অনুযায়ী, তিনি ডিফেন্স আইনজীবী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আবার ট্রাইব্যুনালের অনুমতি ছাড়া ওকালতনামা প্রত্যাহার করারও সুযোগ নেই। সে কারণে আজকে আবেদনের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে আইনজীবী হিসেবে তাঁর নাম প্রত্যাহার করার আবেদন করেছেন। ট্রাইব্যুনাল সেই আবেদন গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ সেই ওকালতনামা প্রত্যাহার হয়েছে।
আইনজীবী সরোয়ার হোসেন বলেন, এই ওকালতনামা প্রত্যাহার হয়ে যাবে। পাঁচজন আইনজীবীই প্রত্যাহার হলেন।
অন্যদিকে আইনজীবী এ বি এম হামিদুল মেজবাহ প্রথম আলোকে বলেন, ইতিমধ্যে এই ১৫ সেনা কর্মকর্তার পক্ষে লড়াই করার জন্য নতুন করে তাঁরা সাত আইনজীবী ওকালতনামা জমা দিয়েছেন।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলের গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা একটি মামলায় মোট ২৫ জন সাবেক-বর্তমান সেনা কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।
বিচারপতি মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মাটির নিচের কারাগারে আটক রাখা হয়েছে ফিলিস্তিনিদের
ইসরায়েল গাজার কয়েক ডজন ফিলিস্তিনিকে একটি ভূগর্ভস্থ কারাগারে আটকে রেখেছে। সেখানে তারা কখনো দিনের আলো দেখতে পায় না, এমনকি পর্যাপ্ত খাবার থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়।
আটককৃতদের মধ্যে কমপক্ষে দুইজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন যাদের কোনো অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই আটক রাখা হচ্ছে। এদের মধ্যে একজন নার্স এবং একজন তরুণ খাদ্য বিক্রেতা। ইসরায়েলের পাবলিক কমিটি অ্যাগেইনস্ট টর্চার ইন এর আইনজীবীরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানুয়ারি থেকে এই দুই ব্যক্তিকে ভূগর্ভস্থ রাকেফেট কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। অন্যান্য ইসরায়েলি আটক কেন্দ্রে যেভাবে নির্যাতন করা হয় বন্দিদের ঠিক তেমনই তাদের নিয়মিত মারধর করা হয়।
রাকেফেট কারাগারটি ১৯৮০ এর দশকের গোড়ার দিকে ইসরায়েলের সবচেয়ে বিপজ্জনক কারাগার। এটি সংগঠিত অপরাধীদের রাখার জন্য খোলা হয়েছিল। কিন্তু কয়েক বছর পরে এটি অমানবিক বলে অভিযোগ করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবরের হামলার পর অতি-ডানপন্থী নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এটিকে পুনরায় চালু করার নির্দেশ দেন।
কারাগারের সেলগুলো, আঙ্গিনা এবং আইনজীবীদের একটি সভাকক্ষ-সবকিছুই ভূগর্ভস্থ, তাই বন্দিরা এখানে প্রাকৃতিক আলো ছাড়াই বাস করে।
কারাগারটি প্রাথমিকভাবে কয়েকটি উচ্চ-নিরাপত্তা বন্দির জন্য তৈরি করা হয়েছিল যারা পৃথক কক্ষে অবস্থান করত। ১৯৮৫ সালে এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময় ১৫ জন আটক ছিল। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, প্রায় ১০০ জন বন্দিকে সেখানে রাখা হয়েছে।
অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে সম্মত যুদ্ধবিরতির অধীনে, ইসরায়েল গাজা থেকে ১ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে যাদের অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক রাখা হয়েছিল। সেইসাথে ইসরায়েলি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ২৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
তবে, আটকের পরিমাণ এতটাই ব্যাপক যে, সেই গণমুক্তির পরেও, কমপক্ষে এক হাজার জন এখনো একই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের হাতে আটক রয়েছে।
পাবলিক কমিটি অ্যাগেইনস্ট টর্চার ইন বলেছে, “যদিও যুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে, (গাজার ফিলিস্তিনিরা) এখনো আইনিভাবে বিতর্কিত এবং সহিংস যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বন্দি রয়েছে যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করে এবং নির্যাতনের সমান।”
ঢাকা/শাহেদ