বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখানো হচ্ছে কীভাবে বড় উপন্যাস পড়তে হয়
Published: 8th, October 2025 GMT
প্রযুক্তিগত উন্নতির প্রভাবে দ্রুত বদলে যাচ্ছে আমাদের পাঠের অভ্যাস। রিলস ও শর্ট ভিডিওর যুগে মানুষের মনোযোগের সময়সীমা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। সম্প্রতি এর প্রভাব দৃশ্যমান হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সাহিত্যপাঠে। বড় উপন্যাস, মহাকাব্য ও ক্ল্যাসিক সাহিত্যের প্রতি ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ ক্রমেই কমছে।
যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সাহিত্য বিভাগগুলোতে নতুন করে ‘লং রিডিং স্কিলস’ বা ‘দীর্ঘ পাঠের দক্ষতা’ নামে আলাদা কর্মশালা চালু হয়েছে। এসব কর্মশালায় শিক্ষার্থীদের শেখানো হচ্ছে কীভাবে বড় উপন্যাস বা ক্ল্যাসিক সাহিত্যপাঠে ধৈর্য ধরে থাকা যায়, কীভাবে চরিত্র, সময় ও ভাষার স্তরগুলো বোঝা যায়। অক্সফোর্ড, সাসেক্স ও ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকেরা বলছেন, অনলাইন যুগে তরুণদের পড়ার ধরন বদলে গেছে। শিক্ষার্থীরা তাঁদের জানিয়েছেন, তাঁরা প্রতিদিন অসংখ্য ছোট লেখা, টুইট, মিম বা পোস্ট পড়েন। কিন্তু দীর্ঘ কোনো লেখা পড়তে গিয়ে মনোযোগ ধরে রাখতে তাঁদের সমস্যা হয়। এখন তাঁরা দীর্ঘ রচনা পাঠের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ছাত্রদের দিনে নির্দিষ্ট সময় মুঠোফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন।
এ প্রবণতা শুধু যুক্তরাজ্য নয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েও দেখা যাচ্ছে। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা এখন ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’ পড়তে ভয় পান। তাঁরা ভাবেন, এত বড় বই পড়ার জন্য সময় কোথায়? অথচ সাহিত্যচর্চার অন্যতম গুণই হলো সময় ও মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রযুক্তিনির্ভর জীবন থেকে সামান্য সময় আলাদা রেখে বই পড়ার অভ্যাস ফিরিয়ে আনাই হতে পারে সমাধান। ধীর পঠনই দীর্ঘ মেয়াদে গভীর চিন্তা, ভাষাবোধ ও কল্পনাশক্তিকে টিকিয়ে রাখতে পারে।
ডিজিটাল বিশ্বে যেখানে প্রতিটি নোটিফিকেশন মনোযোগ কেড়ে নেয়, সেখানে একটানা ৫০০ পৃষ্ঠা পড়ার ক্ষমতা হয়তো একধরনের বিপ্লব। সেই বিপ্লবের দীক্ষাই এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিতে শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, সাহিত্য কেবল তথ্য নয়, অভিজ্ঞতারও এক গভীর সাধনা।
সূত্র: দ্য টাইমস
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মন য গ
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে যুবলীগ নেতা দ্বীন ইসলামকে বিএনপিতে পূর্নবাসনের অভিযোগ
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপিকে ৯টি ওয়ার্ড কমিটি করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি।
কমিটি গঠন নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদুল্লাহ্ মুকুল ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম।
কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর যুবলীগ নেতা দ্বীন ইসলামকে পূর্নবাসন করছে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদুল্লাহ মুকুল এবং সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম।
জানা গেছে, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠনের লক্ষ্যে জিওধরা এলাকায় যুবলীগ নেতা দ্বীন ইসলামের কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটিতে যুবলীগ নেতা দ্বীন ইসলামের হাতে দায়িত্ব দেয়ার নানান গুঞ্জন উঠেছে যা নিয়ে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
একজন যুবলীগ নেতাকে পাশে নিয়ে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদুল্লাহ্ মুকুল ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের কমিটি গঠন উপলক্ষে আলোচনা সভা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে।
যুবলীগ নেতা দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা ও প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে নিয়ে যুবককে রাস্তায় ফেলে মারধর করে কুপিয়ে জখম করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। যার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে।
তিনি কলাগাছিয়া ইউনিয়নের আলতাব প্রধানের ছেলে তার পুরো পরিবার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর। যার ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর থানা যুবদল নেতা দ্বীন ইসলাম প্রধান তিনি ৫ আগস্টের পূর্বে ফ্যাসিস্ট দোসর জি এম আরাফাত, রাজাকার নাতী মাহমুদুল হাসান শুভ সহ তার পরিবারের সঙ্গে শাহ নিজাম, সাবেক মেয়র আইভি ও যুবলীগ নেতা খান মাসুদ সহ আওয়ামীলীগের নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ৫ আগস্টে পালিয়ে যাওয়ার পর ভোল্ট পাল্টিয়ে যুবদলে সক্রিয় হয় বিএনপির নেতাদের ম্যানেজ করে।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, আগে করতো যুবলীগ এখন করে বিএনপি। তার পুরো পরিবার আওয়ামীলীগের সুবিধাভোগী। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আদমপুর চৌরাস্তা এলাকায় যুবদলের নামে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে নিয়ে রাস্তায় ফেলে কুপিয়েছে। তার দুই ভাই এলাকায় মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে। তাদের অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হলেও কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না।
এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল জানান, কোন স্বৈরাচার দোসর যুবদল বা বিএনপি করতে পারবে না এবং তারা কোন কমিটিতেও স্থান পাবে না।
এদিকে এবার সেই আলোচিত-সমালোচিত যুবলীগ নেতার হাতেই ওয়ার্ড কমিটির দ্বায়িত্ব তুলে দিতে যাচ্ছেন কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি-সেক্রেটারি। যা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠছেন দীর্ঘ দিনের ত্যাগী নির্যাতিত পোড় খাওয়া রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।sheikh