বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধিদল।

আজ রোববার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। পরে বৈঠকের বিষয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় বিএনপি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন অ্যাডভাইজার টু দ্য বাংলাদেশ মিশন চিফ ক্রিস পাপাজর্জিউ।

বিএনপি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিএনপির প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, জিয়াউদ্দিন হায়দার ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।

বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হলে আর্থিক খাত, করব্যবস্থা ও সামাজিক খাতের সংস্কার জরুরি। বিএনপি বিশ্বাস করে, একটি জবাবদিহিমূলক ও স্বচ্ছ আর্থিক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়।

বৈঠকে আইএমএফের চলমান মিশনের পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদনের প্রাথমিক ফলাফল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনার মূল বিষয়গুলো ছিল মূল্য সংযোজন করের হরমোনাইজেশন ও ছাড় হ্রাস বা বিলোপের নতুন টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স, করপোরেট কর বৃদ্ধি করে জিডিপি-টু-ট্যাক্স রেভিনিউ অনুপাত উন্নত করা, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার এবং সামাজিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি।

আইএমএফ প্রতিনিধিদল বিএনপির প্রস্তাবিত নীতি-অগ্রাধিকার ও সংস্কারভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করে। বৈঠকটি উভয় পক্ষের মধ্যে ভবিষ্যতে নীতিগত সংলাপ ও সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রত্যাশা জাগিয়ে তোলে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

পে কমিশনের সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তী সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

নতুন পে কমিশন গঠনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আগামী সরকার-এ কথা জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

রবিবার (৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “পে কমিশনের বিষয়ে আমরা এখন কিছু বলতে পারছি না। বিষয়টি আগামী সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। তবে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি, প্রাথমিক কাজগুলো শুরু হয়েছে। পরবর্তী সরকার চাইলে এটি বাস্তবায়ন করতে পারবে।”

আইএমএফ আলোচনা ও সংস্কার অগ্রগতি

আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) সঙ্গে চলমান আলোচনার প্রসঙ্গে তিনি জানান, আগামী ১৫ নভেম্বর সংস্থাটির সঙ্গে তার চূড়ান্ত আলোচনা হবে। “আইএমএফের সঙ্গে আমার জুম মিটিং হয়েছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। তারা মনে করছে আমরা যেভাবে সংস্কার ও সমন্বয়ের কাজ করছি, সেটা ইতিবাচক,” বলেন অর্থ উপদেষ্টা।

তিনি আরও বলেন, “ওদের কিছু সুপারিশ আছে, যেমন রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। এটা আমি স্বীকার করি—আমাদের ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত এখনো কম। এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। অনেক মানুষ ট্যাক্স দিতে চায় না, আবার এনবিআর দুই মাস বন্ধ থাকার কারণে রাজস্ব আয়ে ধাক্কা লেগেছে। আমরা এখন তা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।”

অর্থ উপদেষ্টা জানান, আইএমএফ সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছে। “বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা ও খাদ্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে তারা। খাদ্যখাতে আমরা তুলনামূলক ভালো অবস্থানে আছি,” বলেন তিনি।

নির্বাচনের আগে সংস্কারের অবস্থা

নির্বাচনের তিন মাস বাকি, এমন প্রেক্ষাপটে সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে আমরা যা করেছি, সেটাকে সুসংগঠিত করাই এখন লক্ষ্য। সংস্কার তো একদিনে শেষ করা যায় না, এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আমরা এটিকে একটি সমন্বিত প্যাকেজ আকারে সাজিয়ে আগামী সরকারের কাছে হস্তান্তর করব।”

তিনি আরও জানান, রাজস্ব সংস্কারের জন্য একটি স্বতন্ত্র কমিটি ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে। “কিছু অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদকে নিয়ে কমিটি করেছি, তারা স্বাধীনভাবে সুপারিশ দেবেন,” বলেন তিনি।

ব্যাংকিং খাতই বড় চ্যালেঞ্জ

দেশের ব্যাংকিং খাতকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “ব্যাংকিং সেক্টরে সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখন ধীরে ধীরে অন্যান্য ক্ষেত্রেও আমরা পদক্ষেপ নেব। এসব কার্যক্রম পরবর্তী সরকারের জন্য একটি দিকনির্দেশনা তৈরি করবে।”

আইএমএফের পরবর্তী কিস্তি

অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে আইএমএফের ঋণের ষষ্ঠ কিস্তি পাওয়া যাবে কিনা—এমন প্রশ্নে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছি যে, এখন কিস্তি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। আইএমএফ চায় নতুন রাজনৈতিক সরকার আসার পর তারা রিভিউ সম্পন্ন করুক। ফেব্রুয়ারির দিকে, নির্বাচনের সঙ্গে মিলিয়ে, তারা পুনরায় পর্যালোচনায় আসবে এবং এরপর সিদ্ধান্ত নেবে।”

তিনি বলেন, “আমরা যা যা সংস্কার করছি, আইএমএফ তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তারা দেখতে চায় নতুন সরকার কতটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখে। সেটিই এখন মূল বিষয়।”

ঢাকা/এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পে কমিশনের সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তী সরকার: অর্থ উপদেষ্টা
  • সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের নতুন বেতনের সিদ্ধান্ত নেবে আগামী সরকার: অর্থ উপদেষ্টা