আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাই ও খসড়া তালিকা প্রস্তুতের কাজ শুরু করেছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে আগামী রোববার সিলেট বিভাগের ৪ জেলার ১৯টি সংসদীয় আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে বসছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আগামী রোববার বেলা তিনটায় বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে এই বৈঠক হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ১৯টি আসনে দলের ৬০ থেকে ৭০ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন। বৈঠকে সবাইকে ডাকা হয়েছে।

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কয়েক মাস ধরেই সিলেটের ১৯টি সংসদীয় আসনে দল ও অঙ্গ–সহযোগী সংগঠনের নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সক্রিয় আছেন। প্রতিটি আসনেই একাধিক নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাঁরা তৃণমূলে নিজেদের শক্তি জানান দিতে প্রায় প্রতিদিনই বড় ধরনের সমাবেশ ঘটাচ্ছেন। এতে স্থানীয় পর্যায়ে দলের ভেতরে প্রকাশ্যে–অপ্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব-বিভেদও তৈরি হয়েছে।

একই সূত্রের তথ্যানুযায়ী, সিলেট বিভাগের প্রার্থী নির্ধারণ ও যাচাই–বাছাইয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মূলত সব মনোনয়নপ্রত্যাশীকে ডেকে কথা বলার জন্যই বৈঠকটি তিনি আহ্বান করেছেন। বৈঠক থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের এ বার্তা দেওয়া হবে, দল সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে যখন একক প্রার্থী ঘোষণা দেবে, তখন সব মনোমালিন্য ভুলে দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে সবাইকে কাজ করতে হবে।

সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জেলা পর্যায়ে দলকে সুসংগঠিত করার পাশাপাশি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগ্রহ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এলাকায় কাজ করছেন। করোনা মহামারি, বন্যাসহ ভোটারদের বিভিন্ন সমস্যায় তিনি পাশে দাঁড়িয়েছেন। বৈঠকে তিনিও যোগ দেওয়ার দাওয়াত পেয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

গণতন্ত্র উত্তরণের পরীক্ষায় আমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গণতন্ত্র উত্তরণের যে পরীক্ষা, সেই পরীক্ষায় আমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে। আমাদের সমস্ত বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যেতে হবে। গণতন্ত্রই হচ্ছে একমাত্র ব্যবস্থা যে ব্যবস্থায় সব ধরনের মানুষের বিকাশের সুযোগ করে দেয়।’

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সদর উপজেলা ও রুহিয়া থানা বিএনপির এক বর্ধিত সভায় যোগদানের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথাগুলো বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের ৩১ দফা দেখেছেন। সেই ৩১ দফায় বলা আছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে যে ধারাগুলো আছে, অ্যামেন্ডমেন্ট (সংশোধন) করব। সংসদ সদস্যদের সব স্বাধীনতা থাকবে। শুধু রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা—এই বিষয়গুলোয় একমত হতে না পারলেও দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেব না। বাকি সব বিলেই সদস্যদের স্বাধীনতা থাকবে, তাঁরা কথা বলতে পারবেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যে গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠা করা, প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে আগামী নির্বাচনে আমরা অংশ নিচ্ছি। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। আমাদের সঙ্গে যারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে, সেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখছি। আশা করছি, সবাই মিলে গণতন্ত্রকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। এই সময়টাতে আমাদের রাজনৈতিক কোনো ভুল পদক্ষেপের কারণে আমরা যেন আবার ফ্যাসিস্টদের নির্যাতনের কবলে না পড়ি। অর্থাৎ ফ্যাসিস্টদের আমরা আর ফেরত দেখতে চাই না।’ কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে যারা আমাদের সঙ্গে থেকে সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই অমত পোষণ করেছেন, এটা হতেই পারে। তার জন্য সেটাকে লক্ষ্য করে রাস্তায় আন্দোলন, এটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ যে দাবিগুলো তারা তুলছেন, সেই দাবিগুলো নির্বাচনের পরে যে পার্লামেন্ট গঠিত হবে, সেই পার্লামেন্টে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।’

সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সংবাদকর্মী ভাইদের কাছে একটাই অনুরোধ জানাব, আপনারা রাষ্ট্রের একটা অন্যতম স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের একটা খুঁটি হচ্ছেন আপনারা। আপনাদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এবং বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র টিকে থাকুক। এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের নিয়ম, সেখানেই গণতন্ত্রের সাফল্য। আমরা প্রত্যাশা করি আমাদের সংবাদমাধ্যমের কাছে, শুধু চটকদার বা বেশি বিক্রি হবে—এ ধরনের সংবাদ ছাপিয়ে আমরা যেন মূল জায়গা থেকে সরে না যাই। আরেকটি বড় মাধ্যম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। এ মিডিয়াতে অনেক অপপ্রচার হয়। এখানে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য অনেক কিছু প্রচার করা হয়, যাতে সত্য থাকে না। সেগুলোকে বাছাই করে রাজনৈতিক কর্মীকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’

এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন, রুহিয়া থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপারেশন কিলোফ্লাইটের ক্যাপ্টেন সাহাবউদ্দিন আহমেদ বীর উত্তম আর নেই
  • গণতন্ত্র উত্তরণের পরীক্ষায় আমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে: মির্জা ফখরুল