দয়া করে নিজেদের দায়িত্বের প্রতি সুবিচার করুন
Published: 17th, October 2025 GMT
জুলাই যোদ্ধাদের দাবি দাওয়া মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, “আমরা সরকারকে বলব, দয়া করে নিজেদের দায়িত্বের প্রতি সুবিচার করুন। আমরা আর কাউকে রাস্তায় দেখতে চাই না। আরো অনেকে দাবি-দাওয়া নিয়ে নেমেছে। অনেক দাবি-দাওয়া আর জুলাই যোদ্ধাদের দাবি-দাওয়া এক না।”
আরো পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন বিলম্ব হলে তা হবে জাতির সাথে গাদ্দারি: তাহের
নাটোরে পিআরসহ ৫ দাবিতে জামায়াতের জনসভা
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর মিরপুরে এক শ্রমিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই জাতীয় সনদ সই অনুষ্ঠানে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ ওপর পুলিশি হামলায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা বার বার দাবি করেছি, তাদেরকে (‘জুলাই যোদ্ধাদের’) স্বীকৃতি দিন, সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিন, তাদের প্রতি মর্যাদা দেখান। কিন্তু না, আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে আজকে তারা সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অবস্থান নিয়েছে। আমরা শুনেছি এখন সরকার বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন।”
“কিন্তু এর মাঝে কিছু অসুন্দর কাজ হয়েছে কিনা আমি নিশ্চিত না। যদি হয়ে থাকে আমি ব্যথিত, দুঃখিত, লজ্জিত। এরা জালিমের হাতে মার খেয়েছে, আজকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের পুলিশের হাতে যদি মার খায় এই লজ্জা আমি কোথায় রাখব,” বলেন দলটির আমির।
শফিকুর রহমান বলেন, “আগস্ট বিপ্লব এমনিতেই হয়নি বরং এজন্য অনেক ত্যাগ ও কুরবানির প্রয়োজন হয়েছে। মূলত, ছাত্র, তরুণ-যুবক ও শ্রমিক সমাজের ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের কাছে স্বৈরাচারি শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে বিদেশে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। এজন্য রাজপথে অনেকেই জীবন দিয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। অনেকে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি- বাকরিসহ জীবন-জীবিকার অনুসঙ্গ হারিয়েছেন। ভিটে ছাড়া করা হয়েছে অনেককেই। এমনকি বিরোধী মতের লোকজনদের বাড়িঘর ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে আশ্রয়হীন করা হয়েছে।”
তিনি বলেন,“জুলাই বিপ্লবের এক হাজার শহীদের তালিকা আমাদের হাতে আছে। এদের মধ্যে ৬০ শতাংশই শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। অন্যরা ৪০ শতাংশ। আবার শ্রমিকদের অধিকাংশ একেবারে প্রান্তিক শ্রেণির। মূলত, দেশ ও জাতির যেকোন ক্রান্তিকালেই শ্রমিক সমাজ সবসময় ঐতিহাসি ভূমিকা পালন করেছে। তাই দেশে ন্যায়- ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় শ্রমিকদেরকে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবে হবে।”
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমিরে আব্দুর রহমান মুসার সভাপতিত্বে ও ঢাকা-১৫ আসনের সদস্য সচিব ও মিরপুর পুর্ব থানার আমীর শাহ আলম তুহিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোহম্মদ তসলিম ও ঢাকা মহনগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র আম র সরক র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ফুটফুটে কন্যা শিশুর জন্ম দিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী
শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের লংগরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে এক কন্যা শিশু।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এফুটফুটে কন্যাশিশুটির মা হন তিনি। এ ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে কেউ ওই নারীর পরিচয় জানে না। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই মানসিক ভারসাম্যহীন নারী দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। রাতে তিনি লংগরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে ঘুমাতেন।
শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ স্কুলের পরিত্যক্ত ভবন থেকে নবজাতকের কান্নার শব্দ শুনে এলাকাবাসী ছুটে যান। গিয়ে তারা দেখেন, ওই নারী একটি কন্যা শিশুর জন্ম দিয়েছেন। তারা দ্রুত মা ও নবজাতককে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান এবং তাদের খাবার ও প্রাথমিক সেবা প্রদান করেন। শিশুটি সুস্থ থাকলেও মানসিক ভারসাম্যহীন মা দুর্বল হয়ে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. মোশারফ হোসেন ননী বলেন, “বাচ্চা প্রসবের খবর পেয়ে আমরা সামাজিকভাবে শিশুটির আলাদা সেবার ব্যবস্থা করেছি। শিশুটির প্রতি আমরা সবাই মায়া অনুভব করেছি। মা ও শিশুর শারীরিক অবস্থা ভালো আছে। এখন তাদের সেবা প্রয়োজন। তবে দীর্ঘমেয়াদি সেবা ও নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।”
শ্রীবরদী সমাজসেবা অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, “আমরা বিষয়টি জানার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে প্রতিনিধি পাঠিয়েছি। হাসপাতালে সমাজসেবা শাখা রয়েছে। তারাই চিকিৎসা সহায়তা দেবে। এরপর নবজাতক ও ওই নারীর পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে শ্রীবরদী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নিবার্হী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হাসিব-উল-আহসান বলেন, “মা ও নবজাতকের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও সমাজসেবা কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। তাদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হবে। এছাড়াও ওই নারীর ঠিকানা সম্পর্কে খোঁজ নিতে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে।”
ঢাকা/তারিকুল/এস