অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে এনজিও গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। 

বুধবার (১৯ নভেম্বর) আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি নওগাঁ সদর এলাকার বাসিন্দা। সিআইডির মিডিয়া বিভাগ থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা

সিআইডি জানায়, নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বাদী অভিযোগ করেন নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিওতে তিনিসহ আরো অনেক সদস্য সঞ্চয় জমা দান, মাসিক ডিপিএস, এককালীন ঋণ গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেন। ভুক্তভোগী ছাড়াও আরো অনেকে আলাদাভাবেও এককালীন আমানত হিসাবে অর্থ জমা করেন। প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ পেতেন গ্রাহকরা। বাদীর আমানত হিসেবে মোট ২০ লাখ টাকা ছিল। এছাড়াও ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায়শই অর্থ উত্তোলন, জমা দেওয়াসহ আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন হতো। গ্রেপ্তার তনু আলোচিত প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ছিলেন।

সিআইডি জানায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ পেতেন গ্রাহকরা। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এ হারে লভ্যাংশ দেওয়া হতো। পরবর্তী সময়ে বিষয়টি পরিচালকরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করলে সাধারণ মানুষ ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ এ গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়। বিনিয়োগকারীরা বেশিরভাগই ছিল দরিদ্র জনগোষ্ঠী। ২০২৪ সালের আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা তাদের জমা করা কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।

পরবর্তী সময়ে গত বছরের নভেম্বর মাসে পুনরায় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ অফিসে উপস্থিত হয়ে বাদীসহ অন্যান্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের কোনো প্রকার অর্থ দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে অফিস থেকে জোর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে। মামলার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় এ পর্যন্ত মো.

নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স আইড স আইড

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে দুই গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পৃথক দুটি পরিবহনে আগুন দিয়ে নাশকতার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৪০ জন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও দুষ্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

হামলাকারীরা দলীয় স্লোগান ও রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিয়ে পরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশ জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছে। 

জানাগেছে, গত শনিবার (১৫ নভেম্বর) ভোরে নাফ পরিবহন নামের একটি মিনিবাস (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৩৩৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ অফিসের মেইন গেটের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

এরআগে , গত ১২ নভেম্বর রাতে তিনি দুই যাত্রী নিয়ে জালকুড়ি এলাকায় পৌঁছালে ২০/২৫ জন ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এসময় তারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকে। পরবর্তীতে তারা তাঁর সিএনজিতে (ঢাকা-থ-১১-৯৯২১) পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। 

দুটি নাশকতার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং জড়িতদের শনাক্তে আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলছে বলে জানা গেছে।

মিনিবাসে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শনিবার ভোরে মিনিবাস চালক সোহাগ মিয়া (৩৮) স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন যে নাফ পরিবহন নামের একটি মিনিবাস (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৩৩৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ অফিসের মেইন গেটের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ভুক্তভোগী চালক দাবি করেন, এতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পরে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুড়ে যাওয়া মিনিবাসটি জব্দ করে হেফাজতে নেয়।

অন্যদিকে সিএনজি চালক মো. বাবুল মিয়া (৫৪) অভিযোগ করেন, গত ১২ নভেম্বর রাতে তিনি দুই যাত্রী নিয়ে জালকুড়ি এলাকায় পৌঁছালে ২০/২৫ জন ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এসময় তারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকে।

পরবর্তীতে তারা তাঁর সিএনজিতে (ঢাকা-থ-১১-৯৯২১) পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ সিএনজিটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, আমরা প্রতিটি নাশকতার ঘটনা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ইতোমধ্যে পৃথক দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত দ্রুত গতিতে চলছে। জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করছে, তারা যেই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • চলতি বছরে যেসব সিনেমার প্রস্তাব ফেরান আমির
  • নোয়াখালীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
  • জাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরীক্ষার খাতা অবমূল্যায়ন ও ট্যাগিংয়ের অভিযোগ
  • সিদ্ধিরগঞ্জে দুই গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা