দেশের অন্যতম প্রধান তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন করা হয়েছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই মানবন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

ঢাকা-গোপালগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচলের দাবিতে মানববন্ধন

পাঁচ দাবিতে জেলায় জেলায় জামায়াতের মানববন্ধন

মানববন্ধনে আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের সহ-সভাপতি (ভিপি) জিএমএম রায়হান কবীরের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরবঙ্গের ৮ জেলার শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।

এ সময় উপস্থিত বক্তারা উত্তরবঙ্গের কৃষি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং কোটি মানুষের জীবিকার উন্নয়নের লক্ষ্যে চীনের সহায়তায় আগামী নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরুর তাগিদ দেন এবং ভারতের কাছ থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি জানান।

জাকসুর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ফেরদৌস আল হাসান বলেন, “তিস্তা শুধু উত্তরবঙ্গের বিষয় নয়, এটি দেশের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণ। ভারত বর্ষায় কোনো সতর্কতা ছাড়াই পানি ছেড়ে লাখ লাখ ঘর-বাড়ি ডুবিয়ে দেয়, লাখ লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করে দেয়। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে সেচ ব্যবস্থা অকার্যকর করে ফেলে‌, ফলে কোনো ফসল আবাদ হয় না।”

তিনি বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে টিকে থাকতে তিস্তার ন্যায্য হিস্সা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে নভেম্বরের মধ্যে চীনা অর্থায়নে এটি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাই।”

জাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “তিস্তা ভারত-বাংলাদেশের অভিন্ন নদী হওয়া সত্ত্বেও এটি পশ্চিমবঙ্গের জন্য আশীর্বাদ এবং বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষায় আমাদের ডুবিয়ে মারে, শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে ফসল চাষাবাদে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায়। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের কাছে আমরা আশা করেছিলাম, তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন। কিন্তু এই সরকার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। সরকারকে জোরালোভাবে বলতে চাই, ভারতীয় যেকোনো চাপকে উপেক্ষা করে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করুন; আমরা দেশবাসী আপনাদের সঙ্গে থাকব।”

জাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.

সোহেল আহমেদ বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের মিত্র রাষ্ট্র (ভারত) মৈত্রীর পরিচয় দেননি। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিলকে গুম করার মাধ্যমে ভারতের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বুঝা গেছে। আমাদের মেরুদণ্ড সোজা করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। তিস্তায় ভারতের বাঁধের কারণে উত্তরবঙ্গের আট জেলা সরাসরি আক্রান্ত। প্রতিবেশী মৈত্রী দেশ হিসেবে তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে।”

নভেম্বরের মধ্যে চীনা সহায়তায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জমির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, জাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সদস্য শফিউজ্জামান শাহীন, ও বাগছাসের যুগ্ম-আহ্বায়ক জিয়াউদ্দিন আয়ান প্রমুখ।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাত কলেজের ঐতিহ্য রক্ষার দাবি মাহমুদুর রহমান মান্নার

ঢাকার খ্যাতনামা সাত সরকারি কলেজের ঐতিহ্য রক্ষার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও ঢাকা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান মান্না।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এটা কোনো আলোচনাযর ব্যাপার নয় যে সাত কলেজের ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে। আমরা বরং বলি ইতিহাস রক্ষা করাই আমাদের কাজ।’

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাত কলেজের ঐহিত্য ও স্বাতন্ত্র্য সংরক্ষণের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। সাত কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যে কলেজগুলোকে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, সেগুলোর চেহারা যদি বদলে দেওয়া হয়, তাহলে ইতিহাস থেকে বিরাট একটি জায়গা মুছে যাবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই যে স্মৃতি, সেটিকে মুছে ফেলার চেষ্টা অন্যায়। আরও কলেজ বানান, আরও বিশ্ববিদ্যালয় বানান। আরও তো দরকার আমাদের কিন্তু একটা জিনিস যা আছে, যার নাম নিয়ে আছেন, সেটাকে মধ্যে দিতে হবে কেন? সেটিকে কেন বাদ দিয়ে দিতে হবে? সেটি রক্ষা করার পরেও তো আমরা সামনের দিকে যেতে পারি।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘১৫ বছর ধরে যাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা ইতিহাসের কান টেনে লম্বা করে দিতে চেয়েছেন। তাঁরা বোঝাতে চেয়েছেন, একজন মানুষ ইতিহাস তৈরি করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে যে ৩০ লাখ লোক জীবন দিয়েছেন, তাঁরা ইতিহাসে নেই, আছেন একজন লোক। এভাবে যদি শিক্ষার ইতিহাসও রচনা করতে চাওয়া হয়, তাহলে সেটির নাম হবে কুশিক্ষা।’

নিজের ঢাকা কলেজে অধ্যয়নের স্মৃতি রোমন্থন করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘ঢাকা কলেজ আমার কলেজ।…আমি আমার কলেজকে সেই রকমই দেখতে চাই।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা-গোপালগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচলের দাবিতে মানববন্ধন
  • তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মশালমিছিল
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দোকান উচ্ছেদ অভিযান বন্ধে ওষুধ ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
  • নেত্রকোনায় প্রধান শিক্ষককে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় স্ত্রী কারাগারে
  • নোবিপ্রবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ, শাস্তি দাবি
  • সাত কলেজের ঐতিহ্য রক্ষার দাবি মাহমুদুর রহমান মান্নার
  • পিরোজপুরে কর্মসূচি শেষে বাড়ি ফিরছিলেন জামায়াত নেতা, পথে দুর্বৃত্তের হামলায় আহত