রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে ওভারপাস পেরিয়ে ভদ্রায় যাওয়ার পথে এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য চোখে পড়ছে। এখানে রাস্তার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া একটি বড় ড্রেনে মাছ শিকার করছেন অনেকে। প্রতিদিন সকাল-বিকেল এই ড্রেনের পাড়ে ভিড় করেন শৌখিন মাছশিকারিরা।

ড্রেনটি বেশ দীর্ঘ হলেও এর অন্তত ২০০ মিটার এলাকাজুড়ে দেখা গেল বড়শি ফেলে মাছ ধরছেন বেশ কয়েকজন। তাঁদের বড়শিতে বেশির ভাগই ধরা পড়ছে কই মাছ। কেউ কেউ আবার মাগুর মাছও পাচ্ছেন।

এই মাছশিকারিদের একজন দীপক সাহা। তাঁর বাড়ি নগরের ছোটবনগ্রাম এলাকায়। মাঝেমধ্যেই তিনি এখানে মাছ ধরতে আসেন। কথা বলতে বলতে তিনি আধা ঘণ্টাতেই ২০টির মতো কই মাছ ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমার মাছ ধরতে খুবই ভালো লাগে। কাজের ফাঁকে সময় পেলেই মাছ ধরতে বের হই। এখানে মাছ পাওয়া যায় বলে অনেকে বলেছে, তাই মাছ ধরতে এসেছি। সকাল ও বিকেলে অনেকে এখানে এসে মাছ ধরেন। ড্রেনে দেশি কই, মাগুরসহ বেশ কয়েক ধরনের মাছ পাওয়া যায়।’

দীপক সাহার পাশেই মাছ ধরছিলেন মো.

রানা। তিনি এসেছেন পবা উপজেলার হরিয়ান এলাকা থেকে। চার দিন ধরে তিনি এখানে মাছ ধরছেন। পিঁপড়ার ডিম টোপ হিসেবে ব্যবহার করে তিনি মাছ ধরছিলেন। তিনি বলেন, ‘মাছ ধরা একধরনের নেশা। এটা বুঝবেন না। আমি সব সময়ই মাছ ধরি। এখানে যাঁরা মাছ ধরছেন, তাঁদের সবার নেশা। তিন দিন বেশ মাছ ধরেছি। আজকে কিছুটা কম হয়েছে, তবে বড়শি ফেললে উঠছে।’

রাজশাহী নগরের জামালপুর এলাকায় ড্রেনে মাছ ধরছেন লোকজন

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ছ ধরছ ন ম ছ ধরত

এছাড়াও পড়ুন:

জয়েন্টের ব্যথা মানেই কি বাত? আর কী কী কারণে ব‍্যথা হতে পারে

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা ও কাজকর্মে জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নানা কারণে সন্ধিতে বা জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে। বেশির ভাগ মানুষ জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ব্যথা অনুভব করলেই ধরে নেন, হয়তো বাত হয়েছে। যদিও জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ব্যথার একটি অন্যতম প্রধান কারণ হলো বাত, তবে সব ব্যথাই বাত নয়। অনেক ক্ষেত্রেই এই ব্যথার উৎস হতে পারে মাংসপেশি, টেন্ডন, বা স্নায়ুতন্ত্র।

সব জয়েন্টের ব্যথা বাত নয়

প্রথমেই জানা দরকার, ‘বাত’ আসলে কোনো একক রোগ নয়। এটি মূলত আর্থ্রাইটিস বা গাঁটে প্রদাহের সাধারণ নাম, যার মধ্যে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, গাউটসহ আরও অনেক ধরনের রোগ অন্তর্ভুক্ত। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত জয়েন্ট ফুলে যায়, লালচে বা গরম অনুভূত হয় এবং নড়াচড়ায় ব্যথা বাড়ে। যেমন-
অস্টিওআর্থারাইটিস: বয়সজনিত কারণে জয়েন্টের ক্ষয় হলে বা ভেঙে গেলে দেখা দেয়।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস: এটি একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ভুল করে জয়েন্টে আক্রমণ করে।

জয়েন্টের আশপাশে ব্যথা সৃষ্টি হওয়ার আরও বেশ কিছু কারণ আছে—
টেন্ডিনাইটিস বা বার্সাইটিস: জয়েন্টের কাছের টেন্ডন (পেশি ও হাড়ের সংযোগকারী অংশ) বা বার্সা (জয়েন্টের ভেতরের তরল থলি)-তে প্রদাহ হলে ব্যথা হতে পারে।
আঘাত বা অত্যধিক ব্যবহার: খেলাধুলা বা অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে মাংসপেশি বা লিগামেন্টে টান লাগা।

নিউরোলজিক্যাল কারণ

অনেক সময় জয়েন্টের কাছাকাছি যে ব্যথা অনুভব হয়, তা আসলে সেই জয়েন্টের সমস্যা নয়, বরং স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা। নিউরোলজিক্যাল কারণে সৃষ্ট জয়েন্ট ব্যথার প্রধান উৎসগুলো হলো—  

নার্ভ কম্প্রেশন: মেরুদণ্ড থেকে বেরিয়ে আসা কোনো স্নায়ু বা নার্ভে চাপ পড়লে (যেমন: কোমরে ডিস্ক প্রোল্যাপস বা সায়াটিকা) সেই ব্যথা বাহু বা পায়ে অবস্থিত জয়েন্ট পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। একে রেফার্ড পেইন বলে। উদাহরণস্বরূপ, ঘাড়ের নার্ভে চাপ পড়লে কাঁধ বা কনুইতে ব্যথা হতে পারে।

পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি: ডায়াবেটিস বা অন্যান্য কারণে হাত-পায়ের প্রান্তীয় স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে জয়েন্টে বা তার আশপাশে জ্বালাপোড়া, তীব্র ব্যথা বা অসারতা অনুভূত হতে পারে।

অন্যান্য স্নায়বিক রোগ: কিছু স্নায়বিক রোগ, যেমন ফাইব্রোমায়ালজিয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে জয়েন্টের চারপাশে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা সৃষ্টি করে।

করণীয় কী?

যদি আপনার জয়েন্টের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়, সকালে বেশি থাকে, ফোলা থাকে বা এর সঙ্গে অসারতা বা ঝিনঝিন ভাব দেখা দেয়, তবে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিপদে না পড়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনি পরীক্ষা করে বাত নাকি স্নায়বিক কোনো সমস্যা, তা নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন।

আরও পড়ুনসহজ এই ১২টি উপায় মানলে মস্তিষ্ক থাকবে চাঙা ও কর্মক্ষম১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ