শৈশব থেকেই মানুষ রং, রেখা আর ছবির প্রতি স্বভাবগতভাবে আকৃষ্ট থাকে। তাই ছোটদের গল্পনির্ভর চিত্রকাহিনি বা কমিকসের প্রতি আলাদা টান তৈরি হয়। এই আকর্ষণ থেকেই ধীরে ধীরে কমিকস ধারার বিকাশ ঘটেছে। বাংলাদেশে আধুনিক কমিকসের আগে শিশু-কিশোর পত্রিকার ইলাস্ট্রেটেড গল্প, চিত্রকাহিনি ও স্টোরিবোর্ড-ধর্মী ধারাই ছিল কমিকসের প্রথম রূপ। স্বাধীনতার পর শিশু-কিশোর সংস্কৃতিতে নতুন ধারার সৃষ্টি হয়। সেই ধারারই আধুনিক রূপ তৈরি করে ২০১৩ সালে একদল তরুণ শিল্পীর উদ্যোগে গড়ে ওঠে ঢাকা কমিকস, যা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়।

ঢাকা কমিকসের নিজস্বতা রয়েছে যেমন: দেশীয় বাস্তবতা, আধুনিকতা ও শক্তিশালী গল্প—এসব মিলিয়ে তাদের কাজ পাঠকের মন জয় করে নিয়েছে। এই জনপ্রিয়তারই ধারাবাহিকতায় এবার প্রকাশ পেল দেবী দুর্গার গল্পভিত্তিক অসাধারণ একটি কমিকস।

ঢাকা কমিকসের নিজস্বতা রয়েছে যেমন: দেশীয় বাস্তবতা, আধুনিকতা ও শক্তিশালী গল্প—এসব মিলিয়ে তাদের কাজ পাঠকের মন জয় করে নিয়েছে। এই জনপ্রিয়তারই ধারাবাহিকতায় এবার প্রকাশ পেল দেবী দুর্গার গল্পভিত্তিক অসাধারণ একটি কমিকস।

বাংলাদেশে দুর্গা দেবীর পরিচিতি কেবল ধর্মীয় নয়—এটি শৈল্পিক, লোকজ ও উৎসব–সংস্কৃতির গভীর অংশ। দক্ষিণ এশিয়ার পুরাণকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত করার জন্যও এমন একটি কমিকস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। দেশে প্রথমবারের মতো দেবী দুর্গাকে কেন্দ্র করে কমিকস প্রকাশিত হওয়াটা সত্যিই এক নতুন দিগন্তের শুরু। কৌশিক মজুমদারের সম্পাদনা ও অরিন্দম কুন্ডুর মনোমুগ্ধকর চিত্রায়ণ বইটিকে আরও বিশেষ করে তুলেছে।

বইটিতে দেখা যাবে দুর্গাপূজার সূচনা কীভাবে হলো, প্রথম কখন এই পূজার উল্লেখ পাওয়া যায় এবং কীভাবে মহিষাসুরবধের কাহিনি গড়ে উঠেছে। শুরুতেই তুলে ধরা হয়েছে মহিষাসুরের কঠোর তপস্যা ও সেই তপস্যায় তার পাওয়া বর, যেখানে ঘোষণা করা হয়, কোনো পুরুষ তাকে হত্যা করতে পারবে না। এই ক্ষমতায় সে মর্ত্য ও স্বর্গে অরাজকতা সৃষ্টি করলে দেবতারা ব্রহ্মার কাছে আশ্রয় নেন। তাঁদের সম্মিলিত শক্তি থেকেই জন্ম নেন নারীশক্তির প্রতীক দেবী দুর্গা। দেবতাদের দেওয়া দশ অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তিনি মহিষাসুরের মুখোমুখি হন।

‘দুর্গাপূজার গল্প’ কমিকস থেকে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র গল প

এছাড়াও পড়ুন:

বিতর্ক, বিচ্ছেদ—সব ছাপিয়ে এখনো জনপ্রিয় আবেদময়ী সেই নায়িকা

নস্টালজিক অতীতের মুহূর্ত শেয়ার করা থেকে নিজের নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে খোলামেলা কথা বলা—সব সময়ই সোচ্চার সত্তর দশকের ‘হার্টথ্রব’ জিনাত আমান। একসময়ের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া এই অভিনেত্রীর রয়েছে এক দুঃস্বপ্নের অতীত। তবে এসব পেছনে ফেলে ৭৪ বছর বয়সেও তিনি ইনস্টাগ্রামের জয় করে চলেছেন মিলেনিয়াল আর জেন-জিদের মন। নিজের বুদ্ধিদীপ্ত ও সাবলীল লেখনী দিয়ে তিনি যেভাবে সব বয়সী মানুষের কাছে নিজেকে প্রাসঙ্গিক রাখছেন, আজকের যুগের অনেক নামী তারকাও এখনো তা আয়ত্ত করতে পারেননি। তাঁর স্মৃতিচারণামূলক এ পোস্টগুলো হয়ে উঠেছে কালের সাক্ষী। আজ এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। এ উপলক্ষে আলো ফেলা যাক তাঁর জীবন ও ক্যারিয়ারে।

শুরুর গল্প
১৯৫১ সালের ১৯ নভেম্বর মুম্বাইতে জন্ম; তাঁর আগের নাম ছিল জিনাত খান। তাঁর বাবা আমানুল্লাহ খান ছিলেন একজন পাঠান মুসলিম, মা বর্ধিনী সিন্ধিয়া ছিলেন মহারাষ্ট্রের হিন্দু। আমানউল্লাহ খান ‘মুঘল-ই-আজম’ (১৯৬০) ও ‘পাকিজা’ (১৯৭২)-এর চিত্রনাট্যকার ছিলেন। আমানুল্লাহ খান তাঁর নাম সংক্ষিপ্তভাবে ‘আমান’ লিখতেন। তাই পরবর্তীকালে জিনাত তাঁর নামের শেষে আমান যুক্ত করেন মাত্র ১৩ বছর বয়সে জিনাতের মা-বাবার বিবাহবিচ্ছেদ হয়, যা তাঁর জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। স্কুল শেষ করার পর তিনি ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় লস অ্যাঞ্জেলেসে পড়াশোনা চালানোর জন্য যান। তবে তিনি স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করতে পারেননি। ভারতে ফিরে আসেন।

পাদপ্রদীপের আলোয় আসা
ভারতে ফিরে এসে জিনাত ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে ‘প্রথম প্রিন্সেস’ নির্বাচিত হন। সেই বছরের শেষ দিকে তিনি ‘মিস এশিয়া প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল’ টাইটেলও জিতে নেন। প্রথম ভারতীয় নারী হিসেবে তিনি এই খেতাব অর্জন করেন। টাইমস অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি শুধু মিস ইন্ডিয়া ও মিস এশিয়া প্যাসিফিক ১৯৭০ জিতিনি, আমি মিস ফোটোজেনিকও হয়েছিলাম। আমি নিজেই মেকআপ করতাম, চুল বাঁধতাম এবং পোশাক বাছতাম। সেই সময়ে কেউ সহায়তা করার ব্যবস্থা ছিল না। আমি শুধু নিজের সেরাটা দিয়েছি। এখনকার মেয়েদের বড় টিম থাকে, এটা আমি খুব পছন্দ করি।’ এই জয়ের মাধ্যমে তাঁর স্বীকৃতি মেলে এবং বলিউডে প্রবেশের পথ খুলে যায়।

‘প্রেম শাস্ত্র’ সিনেমার পোস্টার। আইএমডিবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ