খেলাফত মজলিস নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই জাতীয় সনদ ঘোষণা করলেও এখনো তার আইনি ভিত্তি তৈরি ও বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে পারেনি। এই জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি।

জনগণ এই সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছিল ফ্যাসিবাদীদের বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য। তাই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না থাকলে নির্বাচন ও সংস্কারের কোন মূল্য নেই। 

আমরা অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও গণভোটের মাধ্যমে তার শক্তিশালী আইনি ভিত্তি দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। আমরা নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি সংসদের উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, ফ্যাসিবাদীদের বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান, ফ্যাসিবাদী দল ও দোসরদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। 

খেলাফত মজলিস ঘোষিত ৬ দফা দাবি আদায়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচী হিসেবে খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে ২৭ অক্টোবর-২০২৫, সোমবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব চত্বরে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল চাষাঢ়া চত্বর প্রদক্ষিণ করে ডিআইটি চত্বরে এসে শেষ হয়।

খেলাফত মজলিসের নারায়ণগঞ্জ মহানগর সভাপতি হাফেজ কবির হোসেনের সভাপতিত্বে ও ফতুল্লা থানা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শরীফ মাহমুদের পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর সহ-সভাপতি অধ্যাপক শাহ আলম, ডাক্তার শামীম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক ও ৪ আসনের এমপি প্রার্থী ইলিয়াস আহমদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক মুফতী শেখ শাব্বীর আহমাদ, নুর মোহাম্মদ খান, জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক মুফতী আব্দুল গনী, মুহাম্মদ শরীফ মিয়াজী, ইসলামী যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক মাইদুল ইসলাম, জেলা সভাপতি রিফাত আহমদ সাজিদ, ইসলামী ছাত্র মজলিসের মহানগর সভাপতি মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ, জেলা সভাপতি আনাস আহমদ, খেলাফত মজলিসের জেলা সমাজকল্যাণ সম্পাদক আব্দুল করীম মিন্টু, মহানগর প্রচার সম্পাদক মুফতী তৌফিক বিন হারিছ, প্রমুখ৷ 

 

খেলাফত মজলিস নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো নাজুক। এখনো গুম, হত্যা, নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সাম্প্রতিক হিন্দুত্ববাদী উগ্র সংগঠনের অপতৎপরতা বৃদ্ধির কারণে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনকে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সরকারকে অবশ্যই অন্যায়ের বিপক্ষে ও ন্যায়ের পক্ষে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। 

 

খেলাফত মজলিসের ৬ দফা দাবিসমূহ:

১। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা

২। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা

৩। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা

৪। ফ্যাসিস্ট সরকারের সকল জুলুম নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা

৫। ফ্যাসিবাদী দল ও দোসরদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত

৬। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগে ব্যবস্থা গ্রহণ। 

 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র জন ত ন র য়ণগঞ জ জ ল ই সনদ মজল স র গ রহণ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগের ভোট পেতে একটি দল তাদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘একটি দল আওয়ামী লীগের ভোট প্রাপ্তির জন্য আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না।’

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন। বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, মিরপুর বাঙলা কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, তিতুমীর কলেজ, ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের নারীনেত্রী এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ও বর্তমান নেতারা অংশ নেন।

একটি দলকে ইঙ্গিত করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ইনিয়ে-বিনিয়ে বলছে যে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল। আমরা মাঝেমধ্যে জিজ্ঞাসা করি, সেই মুক্তিযুদ্ধ কি পাকিস্তানের পক্ষে ছিল? জনগণের সামনে কিছুদিন পরে তারা হয়তো বলবে যে তারাই একমাত্র মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, আমরা করিনি। এ রকম অনেক বক্তব্য আপনারা ভোটের ময়দানে শুনতে পাবেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ অনেক সচেতন। এখন আর ধর্মের বিড়ি বিক্রি করে বাংলাদেশের জনগণের সামনে ভোট চাওয়া যাবে না। তারপরও আমাদের মাঠে–ময়দানে পরিকল্পনা নিয়ে যেতে হবে।’

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যারা নিজের দেশের নাগরিককে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে হত্যা করেছে, নারী–শিশুনির্বিশেষে শতসহস্র মানুষকে হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, এই ইতিহাস যেন আমরা ভুলে না যাই।’

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত ‘শ্বেতপত্র’–এর কথা উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ যে পরিমাণ টাকা তছরুপ করেছে, সেটা দিয়ে বাংলাদেশের দুটি শিক্ষা বাজেট করা যায়। তিনটি স্বাস্থ্য বাজেট করা যায়। ব্যাংকিং ও নন–ব্যাংকিং ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর থেকে যে লুটপাট হয়েছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় যে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যেটি তছরুপ হয়েছে, সেটা দিয়ে ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেত। ১৪টি মেট্রো সিস্টেম নির্মাণ করা যেত। বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে ব্যাংকিং লুটপাটের মধ্য দিয়ে, সেটা বিলিয়ন ডলারে না বলে অঙ্কে বোধ হয় ২৯ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা প্রসঙ্গেও অনুষ্ঠানে কথা বলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক যাত্রাকে বিভিন্নভাবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য গণতন্ত্রের উত্তরণ হতে হবে। সেই গণতান্ত্রিক উত্তরণের একটি সফল ঘোষণা গতকাল হয়েছে, যেটাকে আমরা তফসিল বলছি, নির্বাচনী তফসিল।’

কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘কেউ কেউ বলেছে নো পিআর, নো ইলেকশন। কেউ কেউ বলেছে আগে স্থানীয় সরকার ইলেকশন, না হলে নো ইলেকশন। আর কেউ কেউ বলেছে একই দিনে গণভোট আর নির্বাচন হলে আমরা মানি না। আমি কারও নাম নিতে চাই না। তারা গণতন্ত্রের বিপক্ষের শিবির। তারা নিজেদের মতো করে গণতন্ত্র চায়। তাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা আলাদা।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আওয়ামী লীগের ভোট পেতে একটি দল তাদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • মর্গ্যান গার্লস স্কুলে পরীক্ষাকালীন সময়ে জামায়াত প্রার্থীর সভা,  ক্ষোভ
  • ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের পদত্যাগের চান মুঠোফোন ব্যবসায়ীরা, সার্ক ফোয়ারা মোড় অবরোধ