৪৫তম বিসিএসে ৩ লাখ ৪৬ হাজার চাকরিপ্রত্যাশী আবেদন করেছিলেন। কিন্তু চূড়ান্ত ফলে দেখা গেল এক ভিন্ন চিত্র। বিপুলসংখ্যক পরীক্ষার্থী থাকার পরও যোগ্য প্রার্থীর অভাবে ৫০২টি ক্যাডার পদ ফাঁকা থাকছে। বিশেষ করে কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডারে এই সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। পরিবার পরিকল্পনা (মেডিকেল অফিসার) এমসিএইচ–এএফপি সমমানের ৪৪১টি শূন্য পদের বিপরীতে মাত্র একজন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

গত বুধবার রাতে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৪৫তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তিতে ২ হাজার ৩০৯ ক্যাডার নিয়োগের কথা থাকলেও পিএসসি ১ হাজার ৮০৭ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে। ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, সাধারণ ও কারিগরি ক্যাডারের জন্য একই ধরনের সিলেবাস বা একীভূত পরীক্ষার কারণে বিশেষায়িত পদগুলোয় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না।

৪৪১ পদের বিপরীতে পাস ১ জন!

ফল বিশ্লেষণে সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারে। পরিবার পরিকল্পনা (মেডিকেল অফিসার) এমসিএইচ–এএফপি সমমানের ৪৪১টি শূন্য পদের বিপরীতে মাত্র একজন উত্তীর্ণ হয়েছেন। অর্থাৎ এই একটি ক্যাডারেই ৪৪০টি পদ ফাঁকা থাকছে।

এর বাইরে বিসিএস স্বাস্থ্য (সহকারী সার্জন) পদে ৪৫০ পদের বিপরীতে ৪১৮ প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। এখানেও ৩২টি পদ পূরণ করা সম্ভব হয়নি। সব মিলিয়ে চিকিৎসকদের জন্য নির্ধারিত এই দুই খাতেই ৪৩২টি পদ শূন্য থাকছে।

এ ছাড়া বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারেও যোগ্য প্রার্থীর অভাব দেখা গেছে। প্রভাষক পদে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে ২০টি, দর্শনে ৬, পদার্থবিজ্ঞানে ৬, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে ২ এবং সম্পদ ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ও ইতিহাসে একটি করে পদ ফাঁকা রয়েছে।

আরও পড়ুন৪৫তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ১৮০৭ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগে সুপারিশ২৬ নভেম্বর ২০২৫

কেন এই সংকট

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিসিএসের সিলেবাসের সীমাবদ্ধতার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিসিএস পরীক্ষা মূলত সাধারণ ও কারিগরি—এই দুই ধরনের ক্যাডারের জন্য নেওয়া হলেও পরীক্ষাপদ্ধতি প্রায় অভিন্ন। প্রশাসন, পররাষ্ট্র বা পুলিশের মতো সাধারণ ক্যাডার এবং চিকিৎসক, প্রকৌশলী বা কৃষিবিদের মতো কারিগরি ক্যাডারের প্রার্থীদের প্রায় একই সিলেবাসে পরীক্ষা দিতে হয়।

বর্তমান নিয়মে লিখিত পরীক্ষায় ৭০০ নম্বর বরাদ্দ থাকে সাধারণ বিষয়ের ওপর, আর পেশাগত বা টেকনিক্যাল বিষয়ের জন্য থাকে মাত্র ২০০ নম্বর। ফলে বিশেষায়িত ক্যাডারের প্রার্থীদের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান যাচাইয়ের সুযোগ খুবই কম থাকে। অন্যদিকে দীর্ঘ ও জটিল সাধারণ সিলেবাসের বেড়াজালে অনেক দক্ষ পেশাজীবী প্রতিযোগিতায় টিকতে পারেন না।

প্রয়াত লেখক–গবেষক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড.

আকবর আলি খান তাঁর ‘অবাক বাংলাদেশ: বিচিত্র ছলনাজালে রাজনীতি’ বইয়ে এই সংকট নিয়ে লিখেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘বিশেষজ্ঞ নিয়োগে এ ধরনের একীভূত পরীক্ষা বিশ্বের অন্য কোথাও নেই। চিকিৎসক, কৃষিবিদ ও বিজ্ঞানীদের মূল জ্ঞান যাচাই করার সুযোগ যথেষ্ট নেই। প্রাথমিক ও লিখিত পরীক্ষায় বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন স্বল্প, আর অন্যান্য বিষয়ে অপ্রয়োজনীয় নম্বর বরাদ্দ করা হয়।’

আরও পড়ুন৫০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, স্বাস্থ্য ৬৫০, প্রশাসনে ২০০, ক্যাডার ও নন–ক্যাডারে শূন্য পদ ২১৫০২৬ নভেম্বর ২০২৫

ভিন্ন চিত্র ৪৮তম বিশেষ বিসিএসে

সাধারণ বিসিএসের এই সংকটের বিপরীতে ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এই বিশেষ বিসিএসের ফলে ৩ হাজার ১২০ চিকিৎসক উত্তীর্ণ হন। এর মধ্যে সহকারী সার্জন পদে ২ হাজার ৮২০ জন এবং সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে ৩০০ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত সব পদই এতে পূরণ হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চাকরিপ্রার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ‘৪৮তম বিসিএস বিশেষ হওয়ায় সেখানে প্রশ্ন করা হয়েছিল বিশেষায়িত ক্যাডারের কথা বিবেচনা করে। আবেদনকারীরা বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান প্রয়োগ করার সুযোগ পেয়েছিলেন, ফলে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া সহজ হয়েছে। কিন্তু সাধারণ বিসিএসে একজন ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ারকে তাঁর নিজের বিষয়ের চেয়ে সাহিত্য বা সাধারণ জ্ঞানে বেশি দক্ষ হতে হয়, যা অযৌক্তিক।’

পিএসসির বক্তব্য

দীর্ঘদিনের সমালোচনা ও বাস্তবতার নিরিখে অবশেষে বিসিএস সিলেবাস হালনাগাদ ও আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে পিএসসি। এ লক্ষ্যে ১৬ নভেম্বর ঢাকায় পিএসসি ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) যৌথ উদ্যোগে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিলেবাস পরিবর্তনের প্রাথমিক রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করা হয়। পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেশের পটভূমিটা একটু ভিন্ন রকমের। এখানে সরকারি চাকরিতে আন্তক্যাডার বৈষম্য রয়েছে। এর ফলে প্রকৌশলী ও চিকিৎসকেরা বিসিএসে তাঁদের জন্য নির্ধারিত কারিগরি পেশার ক্যাডার ছেড়ে প্রশাসন, পুলিশ ও পররাষ্ট্র ক্যাডারের দিকে ঝুঁকছেন। একজন ব্যক্তির পেশা বেছে নেওয়ার সাংবিধানিক অধিকার আমরা খর্ব করতে পারি না। তবে বিশেষায়িত পদের জন্য বিশেষ বিসিএস নিয়মিত চালু করা গেলে এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব।’

আরও পড়ুনহার্ভার্ড–অক্সফোর্ডসহ বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফ্রি অনলাইন কোর্স, যেভাবে আবেদন২৭ নভেম্বর ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব শ ষ ব স এস পদ র ব পর ত ত পর ক ষ ব স এস র ব স এস স চ ক ৎসক প রক শ র জন য ণ হয় ছ প এসস

এছাড়াও পড়ুন:

জাহান্নামের আগুন যাদের দিয়ে প্রথম জ্বালানো হবে

কিয়ামতের দিন সবাই দাঁড়িয়ে থাকবে আল্লাহর সামনে। হিসাব শুরু হবে। আর আশ্চর্যের বিষয় হলো, সবার আগে যাদের ব্যাপারে ফয়সালা হবে, তাদের মধ্যে তিন শ্রেণির মানুষকে টেনে-হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে এই ভয়ঙ্কর দৃশ্য বর্ণনা করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি—প্রথমে আনা হবে একজন শহীদকে। আল্লাহ তাকে তাঁর নেয়ামতগুলো স্মরণ করিয়ে দেবেন। সে চিনতে পারবে। আল্লাহ জিজ্ঞাসা করবেন, “এসব নেয়ামতে তুমি কী আমল করেছ?”

সে বলবে, “আপনার পথে জিহাদ করেছি, শহীদ হয়েছি।” আল্লাহ বলবেন, “মিথ্যা বলছ! তুমি লড়েছ যাতে লোকে বলে ‘কী সাহসী!’ আর তাই বলা হয়েছে।” তারপর নির্দেশ হবে, তাকে মুখের ওপর টেনে জাহান্নামে ছুড়ে ফেলা হবে।

দ্বিতীয়জন আসবে একজন আলেম, যে ইলম শিখেছে, শিখিয়েছে, কোরআন তিলাওয়াত করেছে। আল্লাহ নেয়ামতগুলো দেখাবেন। সে চিনবে। জিজ্ঞাসা হবে, “কী আমল করেছ?” সে বলবে, “ইলম শিখেছি, শিখিয়েছি, আপনার জন্য কোরআন পড়েছি।” আল্লাহ বলবেন, “মিথ্যা! তুমি শিখেছ যাতে লোকে বলে ‘আলেম’, কোরআন পড়েছ যাতে বলে ‘কারী’। আর তাই বলা হয়েছে।”

তারপর তাকেও মুখের ওপর টেনে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

আরও পড়ুনজান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের পথ২৫ জুলাই ২০২৫

তৃতীয়জন আসবে একজন ধনী, যাকে আল্লাহ সব ধরনের সম্পদ দিয়েছিলেন। নেয়ামত দেখানো হবে। সে বলবে, “আপনার পছন্দের প্রতিটি পথে খরচ করেছি।” আল্লাহ বলবেন, “মিথ্যা! তুমি খরচ করেছ যাতে লোকে বলে ‘কী দানশীল!’ আর তাই বলা হয়েছে।” তারপর তাকেও একই পরিণতি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৬৮৮)

ইমাম নববী (রহ.) এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এটি রিয়া বা লোক দেখানোর গুনাহের ভয়াবহতা ও শাস্তির কঠোরতা প্রমাণ করে। সব আমলেই ইখলাস বাধ্যতামূলক। আল্লাহ বলেছেন, “তাদেরকে কেবল এই নির্দেশই দেওয়া হয়েছিল যে তারা খাঁটি দিলে আল্লাহর ইবাদত করবে।” (সুরা বাইয়িনাহ, আয়াত: ৫)

জিহাদ, ইলম, দান—এসবের যত প্রশংসা এসেছে, তা কেবল তাদের জন্য যারা খাঁটি মনে আল্লাহর জন্য করেছে (নববী, শারহু সহিহ মুসলিম, ৫/৪৬, দারু ইহইয়াইত তুরাসিল আরাবী, বৈরুত, ১৩৯২ হি.)

প্রথম শ্রেণি: নামের জন্য জিহাদকারী

যে জিহাদ করে কেবল নাম-যশের জন্য, গোত্রের গৌরবের জন্য, বা লুটের মালের লোভে—তার জিহাদ আল্লাহ কবুল করবেন না।

এক ব্যক্তি রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেউ লুটের জন্য লড়ে, কেউ নামের জন্য, কেউ দেখানোর জন্য—কে আল্লাহর পথে?” তিনি বললেন, “যে লড়ে যাতে আল্লাহর কালিমা সবচেয়ে উঁচু হয়, সে-ই আল্লাহর পথে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৮১০; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৯০৮)

এই হাদিস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জিহাদের মর্যাদা কেবল নিয়তের ওপর নির্ভর করে। নাম-যশের জন্য রক্ত ঝরালেও তা বাতিল।

দ্বিতীয় শ্রেণি: নামের জন্য ইলম ও কোরআনের হাফেয

দ্বিতীয় শ্রেণিটি আমাদের সময়ের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা। যারা ইলমের পোশাক পরে, উঁচু পদে বসে, ফতোয়া দেয়, কোরআন পড়ে—কিন্তু নিজের জীবনে আমল করে না।

আজকাল এমন মানুষের সংখ্যা দুঃখজনকভাবে বেড়েছে। অনেকে দ্বীনের নামে বড় বড় পদে আসীন, কিন্তু তাদের কথা ও কাজের মাঝে আকাশ-পাতাল ফারাক। তারা ইসলামের দুশমনদের সঙ্গে হাত মেলায়, শরীয়তের সঙ্গে খেলা করে, আলেমদের গালি দেয়।

রাসুল (সা.) বলেছেন, “কোরআন তোমার পক্ষে সুপারিশ করবে, না হয় বিপক্ষে দলিল হবে। প্রত্যেক মানুষ সকালে উঠে নিজেকে বিক্রি করে—হয় মুক্তি পায়, নয় ধ্বংস করে।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪২৩)

আরও পড়ুনজান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের পথ২৫ জুলাই ২০২৫

নাওয়াস ইবন সামআন (রা.) থেকে বর্ণিত, কিয়ামতে কোরআন ও তার আমলকারীদের আনা হবে। সুরা বাকারা ও আলে ইমরান তাদের পক্ষে তর্ক করবে (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৯৪০)

মোল্লা আলী কারী (রহ.) বলেন, যে কেবল পড়ে কিন্তু আমল করে না, সে কোরআনের আহল নয়। কোরআন তার বিরুদ্ধে সাক্ষী হবে (মোল্লা আলী কারী, মিরকাতুল মাফাতিহ শারহু মিশকাতিল মাসাবিহ, ৪/৬২৭, দারুল ফিকর, বৈরুত, ২০০২)

আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) বলেছেন, “কোরআন হেফজ করা মানে তার হরফ হেফজ করা নয়, তার হুদুদ কায়েম করা।” (তাযকিরাতু আফদালিল আযকার, পৃ. ৬৮, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, বৈরুত, ২০০৫)

হাসান বসরী (রহ.) বলেছেন, “কেউ বলে, ‘আমি পুরো কোরআন পড়েছি, একটা হরফও ফেলিনি।’ অথচ তার চরিত্রে, আমলে কোরআনের ছাপ নেই। এরা আসলে কোরআনকে পুরোপুরি হারিয়েছে।” (ইবনুল মুবারক, কিতাবুয যুহদ, পৃ. ২৭৪, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, বৈরুত, ১৯৯৭)।

ইমাম কুরতুবী (রহ.) বলেন, “কোরআন যার পক্ষে সে আমল করে, যার বিপক্ষে সে আমল করে না।” (তাযকিরাতু আফদালিল আযকার, পৃ. ৮৭, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, বৈরুত, ২০০৫)

আলী (রা.) বলেছেন, “হে ইলমের বাহক! আমল করো। আসল আলেম সেই যার ইলম ও আমল মিলে যায়।” (সুনানু দারিমী, ১/৭৩, দারু ইহইয়াইত তুরাসিল আরাবী, বৈরুত, ১৪০৭ হি.)

রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, “আল্লাহর সম্মান করা মানে বয়স্ক মুসলিমকে সম্মান করা, কোরআনের হাফেযকে সম্মান করা—যে তার মধ্যে অতিরঞ্জন করে না, দূরে সরে যায় না।” (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৮৪৫)

মোল্লা আলী কারী এর ব্যাখ্যায় বলেন, অতিরঞ্জন মানে রিয়া, বাড়াবাড়ি তাজবীদ; দূরে সরে যাওয়া মানে আমল না করা, ভুলে যাওয়া। দুটোই নিন্দনীয়। (মিরকাতুল মাফাতিহ, ৮/৭০৬-৭০৭, দারুল ফিকর, বৈরুত, ২০০২)

তৃতীয় শ্রেণি: নামের জন্য দানকারী

যারা দান করে কেবল নাম-যশের জন্য, তাদের দানও বাতিল। আলেমরা বলেন, আল্লাহর পথে দান গোপন রাখাই উত্তম। রাসূল (সা.) বলেছেন, সাত শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ নিজের আরশের ছায়ায় স্থান দেবেন—তাদের মধ্যে একজন সে, যে এমন গোপনে দান করে যে, তার বাঁ হাতও জানে না ডান হাত কী খরচ করেছে (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৬০; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৪৭২)

শেষ কথা: ইখলাসই সবকিছু

এই হাদিস আমাদের হৃদয়ে গভীরভাবে গেঁথে দেয় যে, সবচেয়ে বড় জিহাদ, সবচেয়ে উঁচু ইলম, সবচেয়ে বেশি দান—কোনোটাই কাজে আসবে না যদি নিয়ত খাঁটি না হয়। আমল কবুলের চাবিকাঠি ইখলাস। আজ আমরা যারা ইলমের দাবি করি, কোরআন পড়ি, দান করি—নিজেদের প্রশ্ন করি: আমি কার জন্য করছি? লোকের মুখে প্রশংসা শোনার জন্য, না আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য?

যারা ইলম ও কোরআনের দায়িত্ব নিয়েছেন, তাদের ওপর দায়িত্ব আরও বেশি। তারা যদি আমল না করেন, তবে কোরআন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হবে। আসুন, আমরা নিজেদের সংশোধন করি। ছোট আমল হলেও খাঁটি নিয়তে করি। কিয়ামতের সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য যেন আমাদের জন্য না হয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইখলাস দান করুন এবং জাহান্নাম থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

আরও পড়ুনউত্তম ব্যবহার হৃদয়ের জান্নাত১৮ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আলতাফ চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাল জেলা বিএনপি
  • ব্যাট–প্যাড কিনতে পেছাচ্ছে বিপিএল
  • বরগুনায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণর দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড
  • শ্রীপুরে কথা–কাটাকাটির জেরে ৫ সহপাঠীকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ, কিশোর পলাতক
  • দুদকের পরিধি বাড়ছে, আসছে নতুন নিয়ম
  • ডেঙ্গুতে মাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু
  • ৪৫তম বিসিএস: নন-ক্যাডারের ফল প্রকাশ, ৫৪৫ প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ
  • জাহান্নামের আগুন যাদের দিয়ে প্রথম জ্বালানো হবে
  • ৪৫তম বিসিএসের ফল প্রকাশ, ১৮০৭ জন মনোনয়ন