ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল থেকে মধুর ক্যান্টিন পর্যন্ত সড়কটি গত কয়েকবছর থেকে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। মঙ্গলবার দুপুরে রাস্তাটি অবিলম্বে মেরামতের দাবিতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, পুরো রাস্তাটি খানাখন্দে ভরা। বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তাটি ব্যবহার অযোগ্য এবং ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত এ সড়কে বিজয় একাত্তর হল, কবি জসীমউদ্দীন হল, শেখ মুজিবুর রহমান হল, মাস্টার দা সূর্যসেন হল, আইবিএ, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, কলা অনুষদের হাজারো শিক্ষার্থী চলাচলে ভোগান্তির শিকার হন।

তারা দাবি জানান, উল্লেখিত রাস্তা দ্রুত মেরামতের পদক্ষেপ নিতে হবে। বৃষ্টির মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই কাজ শেষ করার যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। সড়ক মেরামতের কাজে টেকসই ও মানসম্মত উপকরণ ব্যবহার করতে হবে, যেন বারবার মেরামতের প্রয়োজন না হয়। এতে পানি নিষ্কাশনের যথার্থ ব্যবস্থা রাখতে হবে।

স্মারকলিপি প্রদানকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আছেন সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র আব্দুল কাদের, অর্থনীতি বিভাগের নাহিয়ান ফারুক, আরবি বিভাগের আবু সাঈদ, সুলতানা, সাদিয়া ইয়াসমিন ঐতিহ্য ও লিমন হাসান প্রমুখ।

আব্দুল কাদের বলেন, রাস্তার বেহাল দশার দরুণ শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে নানারকম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ নিরসনে রাস্তা মেরামতের জন্য আমরা কোষাধ্যক্ষ স্যারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক স ম রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

দুপুরের আড্ডায় বাড়ে সম্পর্কের উষ্ণতা

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) দুপুর মানেই ব্যস্ততার শেষভাগ আর সম্পর্কের উষ্ণতার শুরু। ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশনের চাপ—সবই দুপুর গড়িয়ে এলেই যেন মিলিয়ে যায়। প্রতিটি বিভাগেই এমন কিছু জায়গা আছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা এসে খুঁজে পায় নিশ্বাস নেওয়ার ফুরসত, কিছু গল্প এবং অনেকটা হাসি। 

তেমনই দৃশ্য দেখা যায় যবিপ্রবির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (এআইএস) বিভাগের বারান্দার ব্যালকনিতে; যেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন দিনের সবচেয়ে প্রাণবন্ত সময়টি। কেউ রেলিং ধরে আছেন, কারো হাতে পানির বোতল, কারো হাতে চায়ের কাপ, কারো চোখ স্থির দূরের পানে। বাতাসে দোল খাওয়া গাছের পাতা, নিচে সবুজের বিস্তার; সব মিলিয়ে তৈরি হয় এক প্রশান্তি। দৃষ্টি আরো দূরে গেলে দেখা যায় যশোরের গ্রামাঞ্চলের অংশ বিশেষ, যা মনে করিয়ে দেয় ফেলে আসা বাড়ি আর পেরিয়ে আসা কৈশোরের স্মৃতি। এই সময়টুকুই তাদের দৈনন্দিন চাপ আর ক্লাসের ব্যস্ততার আড়ালে এক কোমল বিশ্রামের মুহূর্ত। 

বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন কবির বলছিলেন, ক্লাস শেষে আড্ডা দিলে যেন সব ক্লান্তি গলে যায়। আজ কী খেলা, কালকের ক্লাসে কী হবে কিংবা একদম অপ্রয়োজনীয় তর্ক; সবই এখানে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যালকনিতে দাঁড়ালেই মনে হয়, দিনের অর্ধেক স্ট্রেস কোথায় হারিয়ে গেল।”

তিনি আরো বলেন, পরীক্ষা সামনে বলে এখন পড়াশোনার চাপ একটু বেশি। কিন্তু, আড্ডায় ঢুকলেই সেই চাপ কোথায় মিলিয়ে যায়। হাসাহাসি, খুনসুটি, কারো সমস্যার কথা শোনা, কারো নতুন প্রেম বা নতুন আইডিয়ার গল্প—এসব মিলিয়ে ক্যাম্পাস যেন তখনই সবচেয়ে জীবন্ত মনে হয়।”

বন্ধুত্বও এখানে তৈরি হয় খুব সহজে। আগে চেনা ছিল না, একদিন ক্লাস শেষে দাঁড়িয়ে থাকা, তারপর কয়েকদিন আড্ডা, কোনো এক দুপুরে মনে হয়, এরা শুধু সহপাঠী নয়, বরং নিজের মানুষ। সম্পর্কের উষ্ণতা যেন এই আড্ডার মধ্যেই জন্ম নেয়।

শিক্ষার্থীরা বলেন, এসব আড্ডাই তাদের ক্যাম্পাস জীবনের প্রাণ। মনোরম পরিবেশ, শীতের মৃদু রোদ, নিরিবিলি হাওয়া—সব মিলিয়ে যে আবহ তৈরি হয়, তা না দেখলে বোঝানো কঠিন। শীতের দুপুরে রোদে বসে থাকা শিক্ষার্থীদের হাসির শব্দ দূর পর্যন্ত ভেসে যায়। তখন মনে হয়, জীবনের সবচেয়ে সহজ সুখ হয়ত এই কয়েকটি মুহূর্তেই লুকানো।

শিক্ষার্থীদের কথায় বার বার একই অনুভূতি ফিরে আসে। এই আড্ডা না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন অর্ধেক ফাঁকা হয়ে যেত। কারণ, এই চত্বরগুলোতে দাঁড়িয়ে শুধু গল্পই হয় না, বোনা হয় প্রতিদিনের স্মৃতি, অভ্যাস এবং একসাথে বেড়ে ওঠার সময়গুলো।

একদিন তারা হয়ত এই আড্ডার জায়গা থেকে অনেক দূরে যাবে, থাকবে চাকরি, ব্যস্ততা, পরিবার, শহরের চাপ। কিন্তু, কোনো দুপুরে হঠাৎ বাতাসে পরিচিত গন্ধ ভেসে এলে মনে পড়বে আজকের সেই ব্যালকনিটা, হাসির শব্দ, ক্লাসের পরের তর্ক আর সেই মুহূর্তের উষ্ণতা। তখন মনে পড়বে ব্যালকানিতে সেই সোনালি আড্ডাগুলোর স্মৃতিগুলো।

ঢাকা/ইমদাদুল/জান্নাত 

সম্পর্কিত নিবন্ধ