চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘মিনার’ অর্থসহ কোরআন বিতরণ কর্মসূচি পালন করেছে।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে ‘আল কোরআন একাডেমি লন্ডন’ এর সৌজন্যে অন্তত প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থীদের মাঝে এ কোরআন বিতরণ করা হয়।

মিনারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.

আ ক ম আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে ও সদস্য মাসউদুর রহমান ফাহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, মিনারের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইব্রাহীম। প্রধান আলোচক ছিলেন, আল কোরআন একাডেমি লন্ডনের চেয়ারম্যান হাফেজ ড. মুনির উদ্দিন আহমদ।

অন্যদের মাঝে আরো বক্তব্য দেন, বাইতুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আবু নোমান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ আলী, পিএসসিজি শিক্ষাবিদ গবেষক ও কবি কর্নেল (অব.) আশরাফ আল দীন, ইমপ্রেস নিউটেক্স কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেডের পরিচালক মাওলানা নুরুল আমিন মাহদী, চবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব হাফেজ আবু দাউদ মুহাম্মদ মামুন প্রমুখ।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আল কোরআন একাডেমি লন্ডনের চেয়ারম্যান ড. মুনির উদ্দিন আহমদ বলেন, “কোরআনের সঙ্গে যারাই সম্পৃক্ত ছিল তারাই শ্রেষ্ঠ হয়েছে। আগামীদিনে এ জাতির পরিবর্তনের জন্য তোমাদের হাতে একটি অস্ত্র প্রয়োজন, সেই অস্ত্রের নাম কোরআন। এ কোরআনকে তোমাদের হাতে দিয়ে তোমাদের উপর একটি দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছি। এ কোরআন দিয়ে তোমরা এ দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করে দেবে।”

মিনারের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, “গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রোডাকটিভ রমাদান নামে একটা প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ করে। বর্তমানে এ রকম প্রোগ্রামে হামলার কোন সম্ভাবনা নেই। মিনার আপনাদের জন্য অনেক কিছু নিয়ে আসবে। তবে আমাদের একার পক্ষে পৌঁছানো সম্ভন নয়। আপনাদের সকলের প্রচেষ্টা ও সহযোগিতা থাকতে হবে।”

তিনি বলেন, “অনুবাদসহ এই কোরআন পড়ে আপনারা বুঝতে পারবেন, কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা। আমাদের এ সময়টা যৌবনের সময়, যে ব্যক্তি এ যৌবনের সুরক্ষা দিবে আল্লাহ তাকে পুরস্কৃত করবেন। মিনার প্রতি বছর এরকম অনুষ্ঠান করবে।”

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, “কোন ধর্মের প্রতি আমাদের বিদ্বেষ নেই, সব ধর্মের মর্যাদা সমান। আপনাদের কোরআন দেওয়া হলে ঘরে সাজিয়ে রাখেন। এটা না করে কোরআন পড়ে এর মর্ম ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। এতে করে নৈতিকতা উন্নত হলে সমাজে বিশৃঙ্খলা থাকবে না।”

তিনি বলেন, “এখন হলগুলোতে দখলদারিত্বের অবসান হয়েছে। ক্যাম্পাসে সব ধর্ম বাধাহীনভাবে পালন করতে পারছে শিক্ষার্থীরা। ইসলাম এমন ধর্ম, যেখানে সব ধর্ম নিরাপদে থাকে। আমাদের ধর্ম সবচেয়ে বেশি কল্যাণময়। আমাদের দেশের বাস্তবতা হলো- নিয়মিত নামাজ পড়ে, অথচ অফিসে টাকার জন্য ফাইল আটকায় রাখে।”

তিনি আরো বলেন, “প্রকৃত ধর্মচর্চা করলে এমন হওয়ার কথা না। আমাদের মাঝে যে জ্ঞান রয়েছে তা আল্লাহ তায়ালার দেওয়া। দুর্নীতিবাজদের ধর্মের মাধ্যমে সরল সঠিক পথে আনতে হবে। আপনাদের হাতে তুলে দেওয়া কোরআন নিয়মিত পড়বেন।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আপন দ র ক রআন

এছাড়াও পড়ুন:

সমালোচনাকারীরা কার পক্ষে বলছেন: ফয়েজ আহমদ

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশের কিছু ধারা নিয়ে যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁদের প্রশ্ন করেছেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেছেন, তাঁরা দেশের নাগরিক নাকি কার পক্ষে কথা বলছেন?

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ এই সমালোচনাকে স্বাগতও জানিয়েছেন।

আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি ভবনে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫, জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সাইবার সুরক্ষা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুমোদিত হওয়ার বিষয়ে অবহিতকরণ সভা হয়। এই সভায় ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এসব কথা বলেন। গত বৃহস্পতিবার এই তিন অধ্যাদেশের অনুমোদন হয়।

এই সভায় তিনটি অধ্যাদেশ অনুমোদন হওয়ার বিষয়টি কেক কেটে উদ্‌যাপন করা হয়।

ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ বাস্তবায়নে ১৮ মাস সময় দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ফয়েজ আহমদ বলেন, ‘ডেটা সেন্টার করতে কয় দিন লাগে? আমরা বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের দিক থেকে ডেটা সেন্টার বাস্তবায়ন করছি তিনটা। একটা না, তিনটা করছি। সেখানে আমরা ভেন্ডরকে ছয় মাস থেকে এক বছর সময় দিয়েছি।’

সরকার যদি এক বছরের মধ্যে ডেটা সেন্টার করতে পারে বেসরকারি প্ল্যাটফর্ম কেন ১৮ মাসের মধ্যে করতে পারবে না—এই প্রশ্ন তোলেন ফয়েজ আহমদ। সমালোচকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশের নাগরিক নাকি কার পক্ষে কথা বলছেন? সুতরাং আমি এই প্রশ্নগুলো তুলতে চাই এই জন্য যে আজকে আমাদের বোঝাপড়ার গভীরতায় যাওয়ার সময় হয়েছে। বিরোধিতার ক্ষেত্রে বিরোধিতা করে আমাদের অগ্রযাত্রাকে কেউ ব্যাহত করতে পারবে না।’

ফয়েজ আহমদ বলেছেন, ‘দেখুন আজকের পত্রিকায় যে কিছু কথা আমরা দেখলাম সেটা হচ্ছে যেই গভীর এবং ডিপ কারিগরি ইনসাইটের মাধ্যমে এবং গভর্ন্যান্স স্কোপের মাধ্যমে আমরা যে আইনটা তৈরি করেছি ছয় মাসের অধিক সময়ে দিনের পর দিন রাতের পর রাত খেটে, সেটা যদি ৬ ঘণ্টায় কোনো পরামর্শ না করে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া আপনি যদি রিপোর্ট করে দেন তাহলে অবধারিত হবে সেখানে ভুল বক্তব্য আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আমি গণমাধ্যমকে অনুরোধ করব আমাদের সঙ্গে প্রশ্ন করুন, আমাদের কাছে আসুন জিজ্ঞেস করুন জানা-বোঝার ভিত্তিতে রিপোর্ট করুন।’

ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ নিয়ে গতকাল শনিবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক বিবৃতিতে বলেছে, গোপনীয়তার আশ্রয় ও তড়িঘড়ি করে অধ্যাদেশ অনুমোদন হয়েছে। এ ছাড়া আজ রোববার সকালে প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদে অধ্যাদেশটির অপব্যবহারের ঝুঁকি এবং কর্তৃপক্ষের অবাধ ক্ষমতার বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

অধ্যাদেশ করতে গিয়ে সরকার অনেক বেশি পরামর্শ করেছে জানিয়ে এই বিশেষ সহকারী বলেন, ব্যবসায়িক সম্প্রদায়, মেটা, গুগলের মতো টেক প্ল্যাটফর্মসহ বাংলাদেশে যারা আছে, সবার সঙ্গে আলাদা করে পরামর্শ হয়েছে।

ফয়েজ আহমদ বলেন, ‘আইন দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমাদের করতে হয়েছে। কিন্তু এই দ্রুততার কারণে আমরা কোয়ালিটি কম্প্রোমাইজ (মানে আপস) করিনি।’

দ্রুততার কারণে সাইবার সুরক্ষা আইনে একটা ভুল ছিল। সেটা এবার সংশোধন করেছেন বলে জানান ফয়েজ আহমদ। নতুন আইনে যদি কোনো ধরনের ভুল থাকে, তাহলে সেটাও সংশোধন হবে বলে জানান তিনি। যেকোনো ধরনের সমালোচনাকে স্বাগত জানান এবং আলোচনা-সমালোচনার জন্য তাঁরা উন্মুক্ত আছেন বলে জানান।

ফয়েজ আহমদ বলেছেন, কর্তৃপক্ষকে অবাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে জুডিশিয়াল অথরিটি রাখা হয়েছে।  নাগরিকেরাও এই জুডিশিয়াল কাউন্সিলে সালিসের জন্য যেতে পারবে। এই আইনে কোনো জামিন-অযোগ্য ধারা নেই। তিনি আরও বলেন, ‘উপাত্তের মালিকানা ব্যক্তির। ব্যক্তির পক্ষে জিম্মাদার যেটা সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণের যে স্তরগুলো তাতে কর্তৃপক্ষ দেখবে যে আসলে ওই প্রতিষ্ঠানের এই কাজের সক্ষমতা আছে কি না। এখন এটাকে যদি আপনি অধিক ক্ষমতা বলেন তাহলে আমার কিছু করার নেই।  আমি অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বলব এই ক্ষমতা দেওয়ার দরকার আছে।’

সরকার মেটা, গুগলসহ দেশীয় প্ল্যাটফর্মগুলোকে দায়বদ্ধ করে এই আইনের আওতায় এনেছে। এই কাজ করার জন্য তাঁর সহকর্মীদের প্রশংসা করা উচিত বলে জানান ফয়েজ আহমদ। তিনি বলেন, অনেক বেশি জ্ঞান, অনেক বোঝাপড়া অনেক গভীরতার মধ্য দিয়ে আইনগুলো তাঁরা তৈরি করেছেন।

বিদেশি পরামর্শক এনে নীতি করার যে ধারণা এত দিন ছিল, তা থেকে সরে এসে নিজস্ব সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে এবং তৈরি হয়েছে বলে জানান ফয়েজ আহমদ। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। কিছুদিনের মধ্যেই তাঁরা আইন প্রকাশ করবেন বলে জানান। আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারের মধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথাও জানান।

আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মামুনুর রশীদ ভূঞার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, বিসিসির নির্বাহী পরিচালক মো. আবু সাঈদ প্রমুখ।

আরও পড়ুনব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ: কর্তৃপক্ষের অবাধ ক্ষমতায় অপব্যবহারের ঝুঁকি৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুনামগঞ্জে অবৈধভাবে বালু তোলায় ভাঙনের ঝুঁকিতে স্কুল-কলেজ, প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • সমালোচনাকারীরা কার পক্ষে বলছেন: ফয়েজ আহমদ