আমি যখন ছাত্র ছিলাম প্রচুর কাজ করতাম। সব সময় বলতাম। শুধু শুধু আঁকলে হয় না। সেটা তৈরি করতে হয়। অবজারবেশন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি যতই বড় বড় কথা বলি, আমি তো একজন নারী। এটা চরম বাস্তব সত্য। তবে শিল্পীসত্তা আমাদের এক। আমি এটাকে প্রাধন্য দিই বেশি। একজন শিল্পী ছেলে বা মেয়ে বড় কথা নয়। কিন্তু যেহেতু আমার দেশের প্রেক্ষাপটে আমাকে বিচরণ করতে হয়। আমি কিন্তু উদার হতে পারি না। অনেক বাধাগ্রস্ত হয়েছি সেই সময়ে।
তবে পরিবার সাপোর্ট দিত। এখনও মনে হয় পরিবেশটা সেই রকম স্বচ্ছ হয়নি। আমি আশাবাদী, এমন পরিবেশ আগামীতে হয়তো থাকবে না। সার্বিকভাবে মেয়েদের সেভাবে কাজ করাটা কঠিন। আমাদের সময় ছিল। কিন্তু আমি ভিন্নভাবে কাজ করার চেষ্টা করতাম। আমি একাই বেরিয়ে যেতাম। আমার সাথে ছেলে বন্ধুরা বা ব্যাচমেট আমাকে নিতে ভয় পেত। বলত তোদের নিলে ঝামেলা হয়। এমনতিতেই সহযোগিতা করত। তবে জুনিয়র ছেলেরা কাজ শেখার জন্য আমার সাথে মিশত এবং সঙ্গে নিত। সত্যিকারভাবে আমি চিত্রশিল্পী হবো। এই উদ্দেশ্য নিয়ে চারুকলায় আসিনি। আমাদের পরিবারে সবাই কমবেশি আঁকাআঁকি করতেন। ম্যাট্রিক পাস করার পর ভর্তি হই। নিজের ভেতর তখন কাজ করার আলাদা আগ্রহ সৃষ্টি করে ফেলি। পরিশ্রমের বিকল্প নেই। আমাকে কোনো কাজ দিলে, সেটা নিয়ে গভীর মনোযোগী হয়ে যেতাম। সবার থেকে আলাদা কিছু করতে মরিয়া হয়ে যেতাম। এভাবে কাজ করতে করতেই নিজেকে জানান দিয়েছি। আমি যখন শিক্ষার্থী ছিলাম, তখন থাকতাম গোপীবাগে বা হলে। আমি চারুকলায় আসতাম রিকশাতে। তখন অনুধাবন করতাম একজন মেয়ে বাইরে কাজ করতে ছেলেদের মতো পারে না। নিজের মতো করে ড্রয়িংটা করতে পারতাম না। তো যাই হোক রিকশাতে চলার সময় চারপাশ দেখতাম। সেগুলো আমাকে ব্যাপক কাজে দিত আঁকাআঁকিতে।
আড্ডা-তর্কে সঙ্গী যারা
আমাদের সময় যারা ছিলেন তারা অনেক বিখ্যাত হয়ে গেছেন, কেউ কেউ চলে গেছেন। শাহাবুদ্দিন ভাই, অলোক রায় ওনারা বড় ভাই হিসেবে অনেক স্নেহ করতেন। আমি কাজপ্রিয় মানুষ ছিলাম। অনেকেই মনে করে আমি কম কথা বলি। সংসারজীবন বা সামাজিক জীবন বলেন আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ। আমি ফেরেশতা নয় কিন্তু আমি নিজের মতো করে চলি। আমি প্রচণ্ড সততা নিয়ে চলি। ছবি বিক্রির জন্য কখনও ক্রেজি হয়ে যাই না।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রতারক পুরুষ বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে, তবে আল্লাহ সব দেখেন’
ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা—দু’জায়গাতেই অভিনয় গুণে জায়গা করে নিয়েছেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। পর্দার চরিত্রে যেমন সাহসী, বাস্তব জীবনেও তেমনি সরব ও স্পষ্টভাষী।
বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাবনার উপস্থিতি সবসময়ই আলোচনায় থাকে। নিয়মিত ছবি ও ভাবনার টুকরো অংশ প্রকাশ করায় অনেক সময় কটাক্ষের মুখেও পড়েছেন এই অভিনেত্রী। গতকাল রাতে ভাবনা তার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে নারীর সঙ্গে পুরুষের বিশ্বাসঘাতকতার একটি চিত্রায়ণ করেছেন এই অভিনেত্রী।
আরো পড়ুন:
‘খুকুমণির’ বিয়ে
রাজবাড়িতে বসবে মধুমিতার বিয়ের আসর!
এ বিষয়ে আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, “একজন প্রতারক পুরুষ তার বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে। কিন্তু যে নারীকে সে আঘাত করেছে, তাকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহ তা প্রকাশ করেন। প্রতিটি মিথ্যা, যা সে পেছনে বলেছে, নীরবে ভাঙা প্রতিটি প্রতিশ্রুতি, কান্নার প্রতিটি মুহূর্ত, অথচ পুরুষটি ভান করেছে সব ঠিক আছে। তবে আল্লাহ সব দেখেন, যা সে দেখতে পায় না।”
কোনো গোপন বিষয় চিরকাল গোপন থাকে না। এমন তথ্য স্মরণ করে ভাবনা বলেন, “একজন পুরুষ ভাবেন, তার কর্ম ঢাকতে সে যথেষ্ট চতুর। কিন্তু কোনো গোপন বিষয় চিরকাল গোপন থাকে না। তাকে ধ্বংস করার জন্য আল্লাহ সত্য প্রকাশ করেন না। বরং সেই নারীকে জীবনভর কষ্ট পাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য এটি করেন।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, “বিশ্বাসঘাতকতা হয়তো গোপনে করা হয়। কিন্তু তার প্রকাশ হলো ঐশ্বরিক সুরক্ষা। আল্লাহ যখন পর্দা সরিয়ে দেন, তা শাস্তি নয় বরং এটা উদ্ধার। আমি এখন গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আলহামদুলিল্লাহ।”
তবে ভাবনা কেন এ ধরনের একটি পোস্ট নিজের ফেসবুকে দিয়েছেন, তার পেছনের কারণ জানা যায়নি। কিন্তু তার ভাবনার সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন নেটিজেনরা।
ঢাকা/শান্ত