মানবজীবন দীর্ঘ হতেই পারে। কিন্তু সব দীর্ঘজীবনই মহিমান্বিত হয় না। দীর্ঘ সে জীবন যদি ত্যাগ স্বীকারের হয়, অপরের কল্যাণে হয়, তবে সে জীবন একই সঙ্গে হয় সফল।

দীর্ঘ ও সফল জীবনের এক উদাহরণ ড. মাহাথির মোহাম্মদ। তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। আধুনিক মালয়েশিয়ার স্থপতি, যিনি প্রথম দফায় (১৯৮১-২০০৩) দীর্ঘ ২২ বছর সফলভাবে দেশটির নেতৃত্ব দিয়েছেন। মালয়েশিয়াকে করেছেন একটি আধুনিক ও সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র।

ড.

মাহাথির চল্লিশের দশকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় সিতি হাসমাহর। পরিচয় থেকে অন্তরঙ্গতা, এরপর বিয়ে। সিতি হাসমাহও ওই মেডিকেলেরই শিক্ষার্থী ছিলেন।

দ্বিতীয় দফায় (২০১৮-২০২০) রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসেন ৯৪ বছর বয়সে। তাঁর কর্মস্পৃহা, উদ্যম রীতিমতো তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। এখন ১০০ বছর বয়সেও প্রায় সুস্থ জীবন যাপন করছেন মাহাথির।

২০২৩ সালে ঢাকার বাংলা একাডেমির সবুজ চত্বরে হয়ে যাওয়া লিট ফেস্টে একটি সেশনে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন মাহাথিরকন্যা মেরিনা মাহাথির। তিনি একজন সুপরিচিত মানবাধিকারকর্মী ও লেখক। মাহাথিরকে নিয়ে তাঁর লেখা বই ‘দ্য অ্যাপল অ্যান্ড দ্য ট্রি’ নিয়েই মূলত আলোচনা হচ্ছিল। সেখানে মানবাধিকারসহ অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ছোট্ট করে উঠে এল মাহাথিরের দীর্ঘ জীবনের প্রসঙ্গও।

সেই জায়গা থেকেই এ লেখার অনুপ্রেরণা। আসলেই তো! মাহাথিরের দীর্ঘ ও সফল জীবনের প্রকৃত রহস্যটা কী?

মাহাথিরের রাজনৈতিক জীবন, বিরোধী মত দমন, মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে তাঁর সীমিত অঙ্গীকার—এসব নিয়ে কম আলোচনা, তর্কবিতর্ক হয়নি। এখনো হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁর জীবনবোধ, একনিষ্ঠতা, নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাও আলোচনায় এসেছে।

কিন্তু যে মানুষ শত বছর বয়সেও কর্মক্ষম থাকেন, সেই মানুষটি ভিন্ন।

মাহাথিরের জীবনের পাণ্ডুলিপি

মাহাথিরের জীবনের পাণ্ডুলিপিতে চোখ বুলিয়ে আসা যাক। জন্ম মালয়েশিয়ার কেদাহ রাজ্যের প্রধান শহর আলোর সেতারে। তাঁর দাদা ভারতের কেরালা থেকে সেখানে অভিবাসী হন। বিয়ে করেন এক মালয় নারীকে।

ছোটবেলা থেকেই তুখোড় মেধাবী ছিলেন মাহাথির। বাবা মোহাম্মদ ইস্কান্দার, যিনি ছিলেন একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রধান শিক্ষক, শৈশবেই ছেলের মধ্যে শৃঙ্খলা ও একাগ্রতার বীজ বপন করে দিয়েছিলেন। পড়াশোনা করতে গিয়ে তাই খেলাধুলায় মনোযোগ দিতে পারেননি মাহাথির।

ড. মাহাথির চল্লিশের দশকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় সিতি হাসমাহর। পরিচয় থেকে অন্তরঙ্গতা, এরপর বিয়ে। সিতি হাসমাহও ওই মেডিকেলেরই শিক্ষার্থী ছিলেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে মেডিকেল কলেজ বন্ধ থাকে। এ সময় মাহাথির কফি, চকলেট বিক্রি করে কিছু উপার্জন করেন।

১০০তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে কেক কাটছেন মাহাথির মোহাম্মদ

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ বন র প ল জ বন

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন

অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।

এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।

অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’

এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।

আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
  • ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার