গ্যাস সংকটের কারণে ১৬১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন নরসিংদীর ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৭টি ইউনিটের সবকটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘‘গত দুই বছর ধরে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সংকট চলছে। গ্যাস সংকটের কারণে গত ১৩ জুন বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৪ নম্বর ইউনিট, ৯ জুন ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৫ নম্বর ইউনিট ও ১৪ জুন হতে ৩৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৭ নম্বর ইউনিটের উৎপাদন একেবারে বন্ধ রয়েছে।’’

মো.

এনামুল বলেন, ‘‘সরকার সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করার কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস বন্ধ করে দিয়েছে। বিকল্পভাবে গ্যাস সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। গ্যাস সরবরাহ করলেই পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হব।’’

আরো পড়ুন:

শনিবার ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না সুনামগঞ্জে

জমিতে বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

তিনি আরো বলেন, ‘‘এ তিনটি ইউনিট পুরোপুরি চালু করার মতো অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩ নম্বর ইউনিটটি গত দুই মাস ধরে টারবাইনের রোটারের ব্লেডে সমস্যার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবে, তা মেরামতের শেষ পর্যায়ে। গ্যাস সংযোগ চালু করলে এটাও উৎপাদনে চলে আসবে।’’

বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের জুন মাসে ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৬ নম্বর ইউনিটে আগুন লেগে এর টারবাইন পুড়ে যায়। সেই থেকে ইউনিটটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

অপরদিকে, ১৯৬৭ সালে ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিটটি রাশিয়া টেকনোপ্রম এক্সপার্ট নির্মাণকাজ শেষ করলে ১৯৭৪ সালের জানুয়ারি মাসে মাত্র ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে এর যাত্রা শুরু হয়। পরে ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিটটি ১৯৭৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উৎপাদনে আসে।

এ দুটি ইউনিটে বারবার যান্ত্রিক সমস্যার কারণে গত আট বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ রেখেছে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। ১ ও ২ নম্বর ইউনিট দুটি ভেঙে নতুন করে আরেকটি ইউনিট স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

ঢাকা/হৃদয়/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব দ য ৎ উৎপ র ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অপেক্ষায় আছেন উদ্যোক্তারা: জিইডির প্রতিবেদন

নতুন ব্যবসা চালু করতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অপেক্ষায় আছেন বহু উদ্যোক্তা। সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সর্বশেষ মাসিক অর্থনৈতিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

জিইডির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আসন্ন নির্বাচন যদি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক গতিপথ ঠিক করে এবং নতুন সরকার এসে ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করা, আর্থিক ও ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা, জ্বালানি নিশ্চয়তাসহ বিভিন্ন সংস্কারের উদ্যোগ অব্যাহত রাখে, তাহলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ফিরে পাবে।

জিইডির ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় অর্থনীতি নিয়ে সতর্ক আশাবাদ দেখিয়েছে জিইডি। জিইডি বলছে, একদিকে অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে স্থায়ী মূল্যস্ফীতি, ব্যবসায়িক আত্মবিশ্বাস ও দুর্বল ব্যাংকিং খাত স্থানীয় চাহিদা ও বেসরকারি বিনিয়োগকে সীমিত করতে পারে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ভালো অবস্থায়

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান আগের তুলনায় ভালো হয়েছে বলে মনে করছে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। গত বছরের নভেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। এ ছাড়া প্রবাসী আয়ের ধারাবাহিক প্রবাহ বেড়েছে, যা দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অবস্থান ভালো হওয়ার বড় কারণ।

জিইডির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে চলতি বছরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বা বহির্বাণিজ্যের সূচকে অস্থিরতা ছিল। রপ্তানি আয়ের সূচকও ওঠানামা করেছে। বিশেষ করে ২০২৫ সালের এপ্রিল ও জুনে রপ্তানি আয়ে পতন দেখা যায়। তবে অক্টোবরে এই সূচকের অবস্থানে উন্নতি দেখা যায়। তৈরি পোশাকশিল্পের রপ্তানির সূচকে বছরের অর্ধেক সময় পর্যন্ত ধীরগতি দেখা গেলেও পরবর্তী সময়ে উন্নতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের নভেম্বরে মোট রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০২৫ সালের অক্টোবরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার।

প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমছে। এর কারণ খাদ্যের দাম স্থিতিশীল হচ্ছে ও সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ সরবরাহের শৃঙ্খলে স্থিতিশীলতা ও আমদানি করা পণ্যের চাপ কম থাকায় চলতি বছরের অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরে ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমার বড় কারণ হচ্ছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরের ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবরে ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে নেমে এসেছে।

মূল্যস্ফীতিতে চালের অবদান ৪৭ শতাংশ

খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে চাল। জিইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে চালের অবদান ছিল ৪৭ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় সামান্য কম। আর মাছ ও মাংসের ভূমিকা ছিল যথাক্রমে ৩৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ ও ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। তবে পর্যাপ্ত মৌসুমি সরবরাহ ভালো থাকায় সবজির দাম কম ছিল। তাই সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমাতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে সবজি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কারকাজ শেষে হবিগঞ্জ-৫নং কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ বেড়েছে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট
  • সরকারকে না জানিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা : বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • জামালপুরে সারের দাবিতে কৃষকদের সড়ক অবরোধ
  • রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অপেক্ষায় আছেন উদ্যোক্তারা: জিইডির প্রতিবেদন
  • নারায়ণগঞ্জে পানি সরবরাহ খাতে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন 
  • ছাত্র সংসদ নির্বাচন হঠাৎ স্থগিত, উপাচার্যের দপ্তরের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান  
  • সরকার কড়াইল বস্তির বাসিন্দাদের অধিকারের তোয়াক্কা করছে না: জোনায়েদ সাকি
  • মুক্তিযুদ্ধের সরল গল্পের বাইরের গল্প
  • এবার পদ্মা ও মেঘনা কোম্পানিতে ডিজেল ‘গায়েব’, দেড় লাখ লিটার গেল কোথায়