Prothomalo:
2025-05-01@05:42:17 GMT

বিলেতে জমজমাট বাংলা ইফতারি

Published: 25th, March 2025 GMT

যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরের বাংলাদেশি অধ্যুষিত ইস্ট লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপল পাতাল রেলস্টেশন থেকে বের হলে হাতের ডানে-বাঁয়ে সারিবদ্ধ খাবারের রেস্তোরাঁ। এখানকার প্রায় প্রতিটি রেস্তোরাঁই বাংলাদেশি মালিকানাধীন। রমজান মাসজুড়ে রেস্তোরাঁগুলোর সামনে শামিয়ানা টানিয়ে বাহারি পদের ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসেন রেস্তোরাঁর কর্মীরা।

২২ মার্চ বিকেলের দিকে সেখানে পৌঁছে দেখা গেল, সামনে সারি করে ক্রেতারা পছন্দের ইফতারি কিনছেন। শেফরা প্রস্তুত করছেন গরম গরম মুখরোচক খাবার। আর ওয়েটাররা বুকিং করা গ্রাহকদের জন্য টেবিল প্রস্তুত, আনুষঙ্গিক গোছগাছ ও খাবার পরিবেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

একই চিত্র প্রতিটি রেস্তোরাঁয়। স্টেশন থেকে বের হয়ে ডান পাশের ফিস্ট অ্যান্ড মিস্ট রেস্তোরাঁয় ঢুকতেই একজন ওয়েটার এসে জানতে চাইলেন বুকড করা আছে কি না। ‘না’ উত্তর দিলে তিনি জানিয়ে দিলেন কোনো সিট খালি নেই, বুকিং দিয়ে আসতে হবে।

ইস্ট লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপল রোডের বুফে রেস্তোরাঁগুলোর মধ্যে বেঙ্গল টাইগার, ফিস্ট অ্যান্ড মিস্ট, সোনারগাঁ ও গ্র্যান্ড রসই বেশ প্রসিদ্ধ। শতাধিক আসনবিশিষ্ট এসব রেস্তোরাঁয় ইফতারের আগে তিলধারণের জায়গা থাকে না। রেস্তোরাঁগুলোতে দেশি খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে মেটানোর চেষ্টা করা হয় গ্রাহকের রসনাবিলাস। তা ছাড়া পঞ্চখানা, আল হামরা, ঢাকা বিরিয়ানির ইফতারিও বেশ প্রসিদ্ধ। ব্রিকলেনের ক্যাফে গ্রিল ও গ্রামবাংলা রেস্তোরাঁয়ও ইফতারের সময় চোখে পড়ার মতো ভিড় দেখা যায়।

বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে থাকলেও ইফতারে বাংলা খাবারের স্বাদ নিতে চান বিলেতপ্রবাসী বাংলাদেশিরা। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী পাতলা খিচুড়ি থেকে শুরু করে শাহি জিলাপি, ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, গ্রিলড চিকেন, তন্দুরি চিকেন, হালিম, সমুচা, বিরিয়ানি, চিকেন টিক্কা, ল্যাম চপ, চিকেন উইংসহ নানা পদের দেশি পদ দিয়ে ইফতারি সাজান রেস্তোরাঁ মালিকেরা। পাশাপাশি থাকে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর বাহারি ফল ও জুসের সমাহার। প্রবাসী বাংলাদেশি আসাদ মিয়া বলছিলেন, দেশি খাবার ছাড়া ইফতার করে তৃপ্তি পান না। তাই তো রেস্তোরাঁ কিংবা বাসায় দেশি খাবার বেছে নেন।

হোয়াইটচ্যাপলের বেঙ্গল টাইগার রেস্তোরাঁর পরিচালক নাসির আহমদ শাহীন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, একজন রোজাদার ব্যক্তির চাহিদা বিবেচনা করে তাদের রেস্তোরাঁয় দেশীয় ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক ও স্বাস্থ্যকর খাবারের সমন্বয়ে ইফতারে বুফে সুবিধা রেখেছেন। একজন গ্রাহক ১৪ দশমিক ৯৯ পাউন্ডে এখানে ইফতার করতে পারছেন। তবে আসন পেতে দু–তিন দিন আগে বুকিং দিয়ে রাখতে হচ্ছে।

স্টেপনিগ্রিন রোডের গ্র্যান্ড রসই রেস্তোরাঁয় ১৭ দশমিক ৯৫ পাউন্ডে পছন্দসই খাবার দিয়ে ইফতার করতে পারছেন রোজাদাররা। এখানে ১১ বছরের কম বয়সীদের জন্যও রয়েছে ৯ দশমিক ৯৫ পাউন্ড খরচ করে ইফতার করার সুযোগ।

হোয়াইটচ্যাপলের নিউ রোডে সলিসিটর ইমতিয়াজ আহমেদের অফিস। প্রায়ই তিনি তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে ইফতার করেন বুফে রেস্তোরাঁগুলোর কোনো একটিতে। ইমতিয়াজ আহমেদ বললেন, স্বাদ ও সাধ্যের মধ্যে ইফতারে তাঁর পছন্দ বুফে ইফতার। কারণ, এখানে অনেকগুলো আইটেম থেকে নিজের পছন্দের খাবার দিয়ে ইফতার করা যায়। ছুটির দিনগুলোতে পরিবার নিয়ে তিনি এসব রেস্তোরাঁয় ইফতার করেন।

২০২১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে সাড়ে ছয় লাখের বেশি বাংলাদেশি বাস করেন, যা সে দেশের মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ। বর্তমানে সংখ্যাটি সাত লাখের বেশি হবে। অনিয়মিত অভিবাসীরা এর আওতাভুক্ত নন। এখানকার বাংলাদেশিদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ইস্ট লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসহ লন্ডনের বিভিন্ন এলাকায় আবাস গড়েছেন। অন্যান্য শহরের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি বাস করেন বার্মিংহাম, ওল্ডহাম, ম্যানচেস্টার, লোটন, নিউক্যাসল, কার্ডিফ, গ্লাসগো ও এডিনবরায়। তা ছাড়া যুক্তরাজ্যের প্রতিটি ছোট শহরেও বাংলাদেশিদের অবস্থান আছে।

ইফতার পার্টি সংস্কৃতি

রমজান মাসজুড়ে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর আয়োজনে চলে ইফতার পার্টি। ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক সম্প্রীতি ও বিদেশে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রয়াস থেকেই এসব ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়ে থাকে। উপস্থিতির সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে ঠিক করা হয় ভেনু৵। কেউ কেউ রেস্তোরাঁর হলরুম, কেউ কেউ বড় কোনো হল ভাড়া করে আয়োজন করেন ইফতার অনুষ্ঠান।

ফ্রেন্ডস হেল্পিং সোসাইটি নামের একটি সামাজিক সংগঠনের সভাপতি শামীম আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেহেতু আমরা ভিনদেশে থাকি এবং সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করছি, তাই সমাজের পরিচিতজনদের নিয়ে একসঙ্গে ইফতার আয়োজন আমাদের সামাজিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইফত র ক পছন দ

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন

মাকিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে চুক্তি বাতিলকারী দেশগুলোর জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা নিয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর তার সেই বার্তাটি হচ্ছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দাঙ্গাবাজ দেশ, যাকে বিশ্বাস করা যায় না।

শুল্ক স্থগিতাদেশের সময় চীন ছাড়া সবদেশকে বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করার জন্য ট্রাম্প যে ৯০ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন, সেই সময়ের মধ্যে চীনা কর্মকর্তারা বিদেশী সরকারগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ঠেলে দেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, একবার এই চুক্তিগুলো কার্যকর হয়ে গেলে, তিনি চান মার্কিন মিত্ররা ‘একটি দল হিসেবে চীনের সাথে যোগাযোগ করুক’, যাতে মার্কিন পক্ষ আলোচনায় আরো বেশি সুবিধা পায়।

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যন্ত মার্কিন মিত্ররা নিরাপত্তার জন্য ওয়াশিংটনের উপর নির্ভর করে এবং অর্থনৈতিকভাবে ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করার জন্য তাদের উৎসাহ রয়েছে। অবশ্য চীন আরো সমান তালে শুল্ক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্পের শেষ বাণিজ্য যুদ্ধের পর থেকে বেইজিং মার্কিন রপ্তানি থেকে তার অর্থনীতিকে মুক্ত করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। দেশটিতে নিবেদিতপ্রাণ এবং সক্রিয় সৈন্য সংখ্যার বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক বাহিনী রয়েছে।

শি ট্রাম্পের সাথে ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং তার সরকার ‘পাল্টাপাল্টি’ শুল্ক বাতিলের দাবি জানাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলছে যে, অন্য পক্ষ, অর্থাৎ চীনকে উত্তেজনা কমানোর প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে, চীন নিজেকে নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থার একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে উপস্থাপন করছে এবং অন্যান্য দেশকে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে।

সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর আমেরিকান স্টাডিজের পরিচালক উ জিনবো বলেন, “এটি কেবল চীন-মার্কিন সম্পর্কে নয়। এটি আসলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে।”

গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতিবিদদের সাথে দেখা করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া উ জানান, অন্যান্য সরকারেরও বুঝতে হবে বেইজিংয়ের প্রচেষ্টা তাদের উপকার করেছে। 

তিনি বলেন, “যদি চীন আমেরিকার বিরুদ্ধে না দাঁড়াত, তাহলে আমেরিকা কীভাবে তাদের ৯০ দিনের বিরতি দিত।  চীনের উপর শুল্ক আরোপের ফলে ট্রাম্প অন্যান্য দেশের উপর শুল্ক আরোপ বন্ধ করার জন্য আবরণ পেয়েছেন। তাদের এটা উপলব্ধি করা উচিত।”

চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই সোমবার ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ব্রিকস ব্লকের দেশগুলোকে ট্রাম্পের দাবি প্রতিহত করার জন্য বেইজিংয়ের সাথে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। 

তিনি বলেছেন, “আপনি যদি নীরব থাকেন, আপস করেন এবং পিছু হটতে চান, তাহলে এটি কেবল বুলিকে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।”

তার এই বক্তব্যের কয়েক ঘন্টা পরে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইংরেজি সাবটাইটেলসহ একটি ভিডিওতে ওয়াশিংটনকে ‘সাম্রাজ্যবাদী’ শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, গত শতাব্দীতে জাপানি রপ্তানি সীমিত করার মার্কিন পদক্ষেপ তোশিবার মতো কোম্পানিগুলোকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

ওয়াং ই বলেছেন, “একজন ধর্ষকের কাছে মাথা নত করা ঠিক তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বিষ পান করার মতো, এটি কেবল সংকটকে আরো গভীর করে তোলে। চীন পিছু হটবে না যাতে দুর্বলদের কণ্ঠস্বর শোনা যায়।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
  • বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার 
  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
  • ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
  • অবশ্যম্ভাবী নাটকীয়তায় জমজমাট আইপিএল, দেখে নিন সমীকরণ
  • ৫০ পেরোনো নারীর খাদ্যাভ্যাস যেমন হতে হবে
  • যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
  • জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব