কারখানা বন্ধের ঘোষণায় সাভারের সড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
Published: 25th, March 2025 GMT
ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরে কারখানা বন্ধের ঘোষণায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকাল সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে জিন্স ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির শ্রমিকেরা হেমায়েতপুর-সিংগাইর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের অনুরোধে অবরোধ প্রত্যাহার করে সড়কের পাশে অবস্থান নেন তারা।
জানা গেছে, বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’র ভিত্তিতে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করার কারণে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছিলেন।
আরো পড়ুন:
কালিয়াকৈরের সড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
ঈদের ছুটি বৃদ্ধির দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের জন্য সব মিলিয়ে ৮ দিন ছুটি ঘোষণা করে। এর মধ্যে সরকারি ছুটি ব্যতীত বাকি দিনগুলোতে শ্রমিকদের অর্জিত এবং জেনারেল ডিউটির মাধ্যমে সমন্বয় করার কথা। মালিকপক্ষ তাদের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত একদিন ছুটি দিয়েছে। শ্রমিকদের দাবি ৮ দিনের পরিবর্তে ১০ দিনের ছুটি। একইসাথে ঈদ উপলক্ষে চলতি মার্চ মাসের ২০ দিনের বেতন এবং ওভারটাইমের টাকাও পরিশোধের দাবি তোলেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের অভিযোগ, এসব দাবিতে গতকাল সোমবার কারখানার অভ্যন্তরে কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। এসময় মালিকপক্ষ কয়েকজন বহিরাগতকে কারখানায় প্রবেশ করালে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে এনিয়ে কারখানার অভ্যন্তরে হট্টগোল সৃষ্টি হলে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের নামে একটি মামলা দায়ের করে বলেও দাবি করেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানাটির একজন সুইং অপারেটর বলেন, “মূলত ঝামেলা শুরু হয়েছে গতকাল। বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে বসে ছিলেন। মালিকপক্ষ ৫/৬ জন বহিরাগতকে কারখানায় ঢোকালে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। পরে এটা নিয়ে একজন কর্মকর্তাকেও মারধর করা হয়, তিনি এখন হাসপাতালে আছেন যতদূর জানি। পরে আমাদের বলা হয়েছিল, আজ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু সকালে আমরা কারখানায় এসে দেখি, কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করছে কর্তৃপক্ষ।
এবিষয়ে সকাল থেকে একাধিকবার ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ সাভার মডেল থানার একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। ফোন রিসিভ না করায় তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
কারখানাটি বন্ধের নোটিশে বলা হয়, এতদ্বারা জিন্স ম্যানুফ্যাকচারিং কো.
নোটিশে আরও বলা হয়, পরবর্তীতে কারখানা খোলার অনুকূলে পরিবেশ সৃষ্টি হলে কারখানা খোলার তারিখ নোটিশের মাধ্যমে জানানো হবে।
ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক অবর ধ ম ল কপক ষ কর মকর ত র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।
এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।