Samakal:
2025-12-09@17:24:31 GMT

নেপালে হারে শুরু বাংলাদেশের

Published: 20th, April 2025 GMT

নেপালে হারে শুরু বাংলাদেশের

কাবাডি টেস্ট সিরিজে হারে শুরু বাংলাদেশ নারী দলের। আজ রোববার নেপালের ললিতপুলের সাতদোবাতোয়া তায়কোয়ানদো হলে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক নেপালের কাছে ৪১-১৮ পয়েন্টে হেরে যায় বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয়টি আজ একই ভেন্যুতে হবে। 

শক্তিতে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে নেপাল নারী দল। এসএ গেমস ও এশিয়ান গেমসে নেপালের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ নারী দল। এ ছাড়া শারীরিক গড়নেও এগিয়ে নেপাল দল। ম্যাচে এই সুবিধা বেশ ভালোভাবে কাজ লাগিয়েছে তারা। শুরু থেকেই পয়েন্ট বাড়িয়ে নিতে থাকে স্বাগতিক দল। বোনাস পয়েন্টে এগিয়ে যায় তারা। পাশাপাশি প্রথমার্ধে একটি লোনা পায় নেপাল। ১৮-৬ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে নেপাল। দ্বিতীয়ার্ধেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। একই ছন্দে খেলে ম্যাচ নিজেদের আয়ত্তে রাখে নেপাল। এই অর্ধে আরও দুটি লোনা পায় নেপাল। হারের জন্য ভ্রমণ ক্লান্তি ও ইনজুরিকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ দলের কোচ শাহনাজ পারভিন মালেকা, ‘আমরা গতকালই (শনিবার) ঢাকা থেকে এখানে এসেছি। তাই সেভাবে বিশ্রামের সময় পাইনি। এ ছাড়া আমাদের দুই থেকে তিনজন খেলোয়াড় ইনজুরিতে আছে। এই ম্যাচ থেকে যে সমস্যাগুলো আমরা বুঝতে পেরেছি; আশা করছি, সেগুলো কাটিয়ে পরের ম্যাচগুলোতে আমরা ভালো কিছু করব। নেপাল নিয়মিত অনুশীলনে ছিল। কিন্তু আমরা ঈদের কারণে ছুটিতে গিয়েছিলাম। তাই আমাদের অনুশীলনের কিছুটা ঘাটতি ছিল। তবে আশা করছি, আগামীকালের (সোমবার) ম্যাচে আজকের তুলনায় অনেক ভালো খেলবে বাংলাদেশ।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষকেরা একাধিক চাকরি করলে এমপিও বাতিল

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা, ২০২৫ জারি করেছে। নতুন নীতিমালা অনুসারে, এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক বা কর্মচারী একই সঙ্গে একাধিক চাকরি বা লাভজনক পদে নিয়োজিত থাকতে পারবেন না। এর মধ্যে সাংবাদিকতা ও আইন পেশাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ নিয়ম ভঙ্গ করলে এমপিও বাতিল করা যাবে।

এ ছাড়া এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের (বদলি) সুযোগ রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে এমপিওভুক্ত (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদেরও প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া যাবে। কোন স্তরের স্কুল ও কলেজে কতজন জনবল হবে এবং নিয়োগের শর্তসহ নানা বিষয় রয়েছে ৬১ পৃষ্ঠার নীতিমালায়।

এই নীতিমালা নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, নীতিমালায় অনেক ইতিবাচক বিষয় থাকলেও কিছু কিছু বিষয় বৈষম্যের সৃষ্টি করবে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতি মাসে সরকার থেকে বেতনের মূল অংশ এবং কিছু ভাতা পান। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৬ লাখের বেশি শিক্ষক–কর্মচারী এমপিওভুক্ত রয়েছেন। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে আছেন ৩ লাখ ৯৮ হাজার, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে প্রায় পৌনে ২ লাখ এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে আছেন ২৩ হাজারের বেশি শিক্ষক–কর্মচারী। তাঁরা এত দিন সরকারের কাছ থেকে মাসে মূল বেতন, ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পেয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি আন্দোলনের মুখে সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ১৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই অর্থ দুই ধাপে দেওয়া হবে। প্রথম ধাপে ১৫ শতাংশের মধ্যে সাড়ে ৭ শতাংশ (ন্যূনতম ২ হাজার টাকা) ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। বাকি সাড়ে ৭ শতাংশ ২০২৬ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।

গত রোববার জারি করা এ নীতিমালায় বলা হয়েছে, এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক-কর্মচারী একই সঙ্গে একাধিক কোনো পদে, চাকরিতে বা আর্থিক লাভজনক পদে নিয়োজিত থাকতে পারবেন না। যদি কেউ তা করেন, তদন্তে প্রমাণিত হলে সরকার তাঁর এমপিও বাতিলসহ বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে।

নীতিমালায় আর্থিক লাভজনক পদ বলতে সরকারের দেওয়া কোনো ধরনের বেতন, ভাতা, সম্মানী এবং বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিকতা বা আইন পেশায় কর্মের বিনিময়ে বেতন, ভাতা বা সম্মানীকে বোঝাবে।

‘নতুন নীতিমালায় অনেক ইতিবাচক দিক আছে। কিন্তু কিছু বিষয় বৈষম্য ও অস্থিরতার সৃষ্টি করবে’দেলাওয়ার হোসেন আজিজী, সদস্যসচিব, এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট।  জনবল ও বদলি

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি) প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তাকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নৈশপ্রহরী, আয়া, অফিস সহায়কসহ মোট পদ হবে ১৯টি। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (ষষ্ঠ থেকে দশম) ২৬টি; উচ্চমাধ্যমিকে (ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ) ৩২; উচ্চমাধ্যমিক কলেজে ১৬, স্নাতক (পাস) কলেজে ১৮, স্নাতক (সম্মান) কলেজে ১৮, স্নাতকোত্তর কলেজে ১৮টি পদ থাকবে। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অতিরিক্ত শ্রেণি শাখার অনুমোদন পেলে শিক্ষকের সংখ্যাও বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কোনো একটি ধর্মের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ বা তার বেশি হলে সেই ধর্মের জন্য একজন করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যাবে।

কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুমোদিত জনবলকাঠামোর অতিরিক্ত শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োজিত রাখলে অতিরিক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক সুবিধার শতভাগ সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে।

নতুন এমপিও নীতিমালায় বলা হয়েছে, এনটিআরসিএর সুপারিশে নিয়োগপ্রাপ্তসহ সব এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক, প্রদর্শক ও প্রভাষকদের কোনো প্রতিষ্ঠানে পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে সমপদে ও সমস্কেলে (বেতন) প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের জন্য মন্ত্রণালয় নীতিমালা প্রণয়ন করে জনস্বার্থে আদেশ জারি করতে পারবে। প্রসঙ্গত, বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির সুযোগ নেই।

বর্তমানে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ হয় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীন পরীক্ষা ও সুপারিশের ভিত্তিতে। তবে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং কর্মচারী পদে নিয়োগ পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে হয়ে আসছে। এসব পদে নিয়োগে দুর্নীতি–স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আছে। এখন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, সুপার, সহকারী সুপার পদেও এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এ ছাড়া সম্প্রতি বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজে কর্মচারী নিয়োগে এত দিন ধরে চলা নিয়মও পরিবর্তন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন নিয়মে এ নিয়োগে পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতা থাকছে না। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটির মাধ্যমে এসব পদে নিয়োগে পরীক্ষা, মূল্যায়ন ও নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে। এ কমিটিতে পরিচালনা পর্ষদের কেউ থাকতে পারবেন না।

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষকদের তাঁদের মূল বিষয় ছাড়াও প্রয়োজনে অন্যান্য বিষয়ে পাঠদান করতে হবে। প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষকে সপ্তাহে ন্যূনতম পাঁচটি এবং উপাধ্যক্ষ বা সহকারী প্রধান শিক্ষককে ন্যূনতম আটটি ক্লাস নিতে হবে।

ক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগের সুযোগে ক্ষোভ

নীতিমালা অনুসারে সরকার প্রয়োজন মনে করলে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপযুক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা বা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের প্রেষণে নিয়োগ দিতে পারবে। তবে এ নিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মধ্যে আপত্তি উঠেছে। তাঁরা মনে করছেন, এর ফলে তাঁদের অবমূল্যায়নের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।

অবশ্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আগে নীতিমালায় উল্লেখ না থাকলেও সরকার চাইলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যেকোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান পদে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে পারত। কয়েক বছর আগে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের দুই কর্মকর্তাকে দুই মেয়াদে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়ার উদাহরণ রয়েছে।

‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’-এর সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী প্রথম আলোকে বলেন, নতুন নীতিমালায় অনেক ইতিবাচক দিক আছে। কিন্তু কিছু বিষয় বৈষম্য ও অস্থিরতার সৃষ্টি করবে। একজন শিক্ষকের স্বপ্ন থাকে, একদিন প্রতিষ্ঠানপ্রধান হবেন। কিন্তু সেখানে ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিলে কর্মরত শিক্ষকদের সেই সুযোগ বন্ধ হবে। ফলে এটি নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা আছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা এটি মেনে নেবেন না।

তবে এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০ হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে দু-একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া এমন নজির কম। তারপরও বিষয়টি পরে ঠিক করে দেওয়া হবে।

শিক্ষকনেতা দেলাওয়ার হোসেন বলেন, নতুন নীতিমালায় সহকারী শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু সহকারী প্রধান ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের ক্ষেত্রে সে সুযোগ রাখা হয়নি। অথচ প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে ঘিরেই একটি চক্র গড়ে ওঠে। তাই এই পদেও বদলির সুযোগ রাখা উচিত। এ ছাড়া শিক্ষকদের কোনো কোনো পদে বেতন গ্রেড ১১তম, আবার কোনো কোনো পদে ১০তম রাখা হয়েছে—এটি বৈষম্যের সৃষ্টি করবে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান বলেন, গ্রেডের বিষয়ে তাঁরা হাত দেননি। এটি আগেও ছিল। আর এমপিওভুক্ত সব শিক্ষকই বদলির সুযোগ পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ