বগুড়ায় শ্রমিক লীগ নেতাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
Published: 4th, May 2025 GMT
বগুড়ায় মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি পদপ্রার্থী শ্রমিক লীগ নেতা আনোয়ার হোসেনকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় শহরের চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আনোয়ার হোসেন বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং জেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি আমিনুল ইসলামের চাচা। আমিনুল ইসলাম বর্তমানে একাধিক হত্যা মামলার আসামি হিসেবে আত্মগোপনে আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, আনোয়ার হোসেনকে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনী কার্যালয় থেকে আটক করে পুলিশ পিকআপে তুলছিল। এ সময় তাঁর সমর্থকেরা পুলিশ সদস্যদের ঘিরে ফেলেন এবং পরে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মঈনুদ্দিন বলেন, মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে কয়েকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের মামলার অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে নজরুল ইসলাম নামের একজন প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আনোয়ার হোসেনের বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে শ্রমিকেরা তাঁকে পুলিশের কাছ থেকে নিয়ে যান। পরে দেখা গেছে, তাঁর বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো সক্রিয় মামলা নেই। ২০২১ সালে একটি বিস্ফোরক মামলা থাকলেও সেই মামলায় তিনি জামিনে আছেন।
আরও পড়ুনশ্রমিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫ নেতার প্রার্থিতা বাতিলে সময় বেঁধে দিল এনসিপি১৬ ঘণ্টা আগেনির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও বগুড়া আদালতের কৌঁসুলি আবদুল বাছেদ জানান, কয়েকজন প্রার্থীর স্বাক্ষর জাল করে মনোনয়ন দাখিল করার অভিযোগ আসায় যাচাই-বাছাই ও শুনানির জন্য গতকাল বিকেলে প্রার্থীদের সশরীর উপস্থিত থাকতে বলা হয়। এ সময় কয়েকজন প্রার্থী সশরীর উপস্থিত হয়ে অভিযোগ খণ্ডন করেন। শুনানি শেষে বের হওয়ার পর পুলিশ ক্রীড়া সম্পাদক প্রার্থী নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে জাল স্বাক্ষরের অভিযোগে আপত্তি দাখিল করা হয়েছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি) ও গণ-অধিকার পরিষদের শ্রমিক উইং এসব আপত্তি তোলে। বিভিন্ন শ্রমিকেরা শুক্রবার মিছিল নিয়ে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় ঘেরাও করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানান।
২৩ মে বগুড়া জিলা স্কুলে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ১৩তম ত্রিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৩০টি পদে ভোট গ্রহণ হবে। ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ৪৭২।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কজন প র র থ ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
নরসিংদীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক
নরসিংদীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে, দেখা দিচ্ছে শয্যা সংকট। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তার মশা নিধনে ড্রেনগুলো দ্রুত পরিষ্কারের জন্য পৌরসভার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসেই প্রায় ১০০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। অক্টোবর মাসের প্রথম তিনদিনে ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রতিদিনই জ্বর, শরীর ব্যথা ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে আসছেন রোগীরা। যাদের অবস্থা গুরুতর, তাদেরকেই ভর্তি করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাঁশবাগানে পাওয়া সেই নবজাতক মারা গেছে
রোগীর স্বজন নাসরিন আক্তার বলেন, “আমার ভাই পাঁচদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। প্রথমে বুঝতেই পারিনি তার ডেঙ্গু হয়েছে। এখন প্লাটিলেট কমে গেছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, অবস্থা গুরুতর। খুব দুশ্চিন্তায় আছি। হাসপাতালের চিকিৎসকরা যথাসাধ্য করছেন, শয্যার সংকট আর ওষুধের জোগান সবসময় মেলে না।”
আরেক রোগীর বাবা মো. সাহেব আলী বলেন, “আমার ছোট ছেলের বয়স ১০ বছর। জ্বর নিয়ে ভর্তি করাতে হয়েছিল তাকে। ওর ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। হাসপাতালে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। আমরা গরিব মানুষ, ছেলেকে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সমর্থ্য নেই।”
হাসপাতালের সামনে অপেক্ষমাণ এক রোগীর চাচা মাহবুব হোসেন বলেন, “হাসপাতালে জায়গা হচ্ছে না। ডেঙ্গু যে এত ভয়াবহ হবে বুঝতে পারিনি। প্রশাসন যদি আগে ব্যবস্থা নিত, তাহলে এমন অবস্থা হতো না।”
স্থানীয় কলেজছাত্র জুবায়ের হোসেন বলেন, “জুলাইয়ের শেষ দিক থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে, অথচ পৌরসভা থেকে মশা নিধনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হয়নি অনেকদিন। আমরা খুব চিন্তায় আছি। শুধু ওষুধ আর হাসপাতাল দিয়ে এই রোগ ঠেকানো যাবে না। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, “বিভিন্ন কারণে এডিস মশার প্রজনন বাড়ছে। প্রতিদিন প্রচুর রোগী আসছেন জ্বর নিয়ে। অনেকেরই অবস্থা গুরুতর। সীমিত সামর্থ্যে আমরা চেষ্টা করছি সাধ্যমতো সেবা দিতে। রোগীর চাপ ক্রমেই বাড়ছে।”
ঢাকা/হৃদয়/মাসুদ