চাঁদপুরের কচুয়ায় ছেলের দায়ের কোপে বাবার মাথা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। পালিয়ে যাওয়ার সময় হত্যাকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।

শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে কচুয়া উপজেলার বাইছারা নোয়াপাড়া প্রধানীয়া বাড়িতে আব্দুল খালেক নামে ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করে তার ছেলে মো. হোসাইন (৩০)।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বাবা ও ছেলের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হোসাইন ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে বাবার মাথা ও শরীরে একের পর এক কোপ দিতে থাকে। ঘটনাস্থলেই আব্দুল খালেকের মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরিবারের দাবি, হোসাইন দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন।

আব্দুল খালেকের বড় ছেলে নোমান সরকার বলেছেন, আমার ভাই এমন ভয়ঙ্কর কাজ করবে, কখনো ভাবিনি। ও মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। এমন নৃশংসতায় আমরা সবাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রুহুল আমিন সাংবাদিকদের বলেছেন, খবর পেয়ে এসে দেখি, লাশ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এমন ঘটনা আমাদের এলাকায় আগে কখনো ঘটেনি। হত্যাকারীর বিরুদ্ধে অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা হওয়া উচিত।

চাঁদপুরের কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.

আজিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের পর পালানোর সময় স্থানীয়রা হোসাইনকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। আব্দুল খালেকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।

ঢাকা/জয়/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

টাইটানিক যাত্রীর সোনার ঘড়ি বিক্রি হলো সাড়ে ২৮ কোটি টাকায়

শত বছরের বেশি আগে ডুবে যাওয়া টাইটানিক জাহাজের এক মৃত যাত্রীর কাছ থেকে পাওয়া একটি পকেটঘড়ি রেকর্ড দামে বিক্রি হয়েছে। গতকাল শনিবার যুক্তরাজ্যে এক নিলামে ১৭ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ডে এটি বিক্রি হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৮ কোটি ৪৭ লাখ ১১ হাজার টাকা (১ পাউন্ড সমান ১৫৯.৯৫ টাকা হিসাবে)।

১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কগামী টইটানিক জাহাজটি আটলান্টিক মহাসাগরে বিশাল বরফখণ্ডে (হিমশৈল) ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়। এতে মারা যান দেড় হাজারের বেশি যাত্রী। তাঁদেরই একজন মার্কিন ধনকুবের ইসিডর স্ট্রাউস। তিনি ছিলেন ওই জাহাজের অন্যতম ধনী যাত্রী। ওই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী আইডাও মারা গেছেন।

জাহাজ ডুবে যাওয়ার কয়েক দিন পর আটলান্টিক মহাসাগর থেকে ইসিডর স্ট্রাউসের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর সঙ্গে পাওয়া জিনিসের মধ্যে ছিল জুলস ইয়ুরগেনসেন কোম্পানির তৈরি ১৮ ক্যারেটের সোনার ঘড়ি।

জাহাজ ডুবে যাওয়ার কয়েক দিন পর আটলান্টিক মহাসাগর থেকে স্ট্রাউসের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর সঙ্গে পাওয়া জিনিসের মধ্যে ছিল জুলস ইয়ুরগেনসেন কোম্পানির তৈরি ১৮ ক্যারেটের সোনার ঘড়ি।

স্ট্রাউস দম্পতির পরিবারের কাছে থাকা এ ঘড়ি গতকাল যুক্তরাজ্যের উইল্টশায়ারে হেনরি অ্যালরিজ অ্যান্ড সন অকশনার্স নামের প্রতিষ্ঠান আয়োজিত নিলামে বিক্রি হয়েছে।

জার্মান বংশোদ্ভূত ইসিডর স্ট্রাউস ছিলেন একজন মার্কিন ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ। তিনি নিউইয়র্কের বিখ্যাত মেসি’স ডিপার্টমেন্ট স্টোরের মালিকদের একজন ছিলেন।

ধারণা করা হয়, টাইটানিক ডুবে যাওয়ার সময় স্ট্রাউসের স্ত্রী আইডা স্বামীকে রেখে একা লাইফবোটে উঠতে রাজি হননি। বলেছিলেন, তিনি স্বামীর সঙ্গেই মরতে চান। পরে আইডা স্ট্রাউসের আর সন্ধান পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুননিলামে ৩ লাখ পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে টাইটানিকের যাত্রীর চিঠি২৭ এপ্রিল ২০২৫

টাইটানিকের আনুষ্ঠানিক কাগজে লেখা এবং জাহাজে থাকা অবস্থায় পাঠানো আইডা স্ট্রাউসের একটি চিঠিও গতকালের নিলামে ১ লাখ পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে।

এ ছাড়া টাইটানিকের যাত্রীদের একটি তালিকা ১ লাখ ৪ হাজার পাউন্ডে এবং উদ্ধারকৃত যাত্রীদের পক্ষ থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ আরএমএস কারপাথিয়ার ক্রুদের দেওয়া একটি সোনার পদক ৮৬ হাজার পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে।

টাইটানিক–সংক্রান্ত স্মারকসামগ্রী নিয়ে আয়োজিত এ নিলামে মোট আয় হয়েছে ৩০ লাখ পাউন্ড।

স্ট্রাউসের পকেটঘড়িটি রাত ২টা ২০ মিনিটের দিকে এসে থেমে গিয়েছিল। মূলত ওই সময়েই টাইটানিক জাহাজটি পানিতে তলিয়ে যায়।

ধারণা করা হয়, ১৮৮৮ সালে আইডা তাঁর স্বামীর ৪৩তম জন্মদিনে ঘড়িটি উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। ঘড়িটির ওপর স্ট্রাউসের আদ্যক্ষর খোদাই করা আছে।

উদ্ধারের পর ঘড়িটি স্ট্রাউসের পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছিল। পরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ঘড়িটি সংরক্ষিত থাকে। একপর্যায়ে ইসিডরের প্রপৌত্র কেনেথ হলিস্টার ঘড়িটি মেরামত করান। এটি আবার সচল হয়।

নিলামকারী অ্যান্ড্রু অ্যালড্রিজ মনে করেন, ঘড়িটি রেকর্ড দামে বিক্রি হওয়ার মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, টাইটানিকের কাহিনির প্রতি মানুষের এখনো আগ্রহ আছে। তিনি আরও বলেন, ‘নারী, পুরুষ বা শিশু—প্রত্যেক যাত্রীরই একটি গল্প ছিল। আর ১১৩ বছর পরও সে গল্পগুলো স্মারকসামগ্রীর মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে।’

টাইটানিক থেকে ৭০০-এর বেশি যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা জাহাজ আরএমএস কারপাথিয়ার ক্যাপ্টেনকে উপহার হিসেবে দেওয়া একটি সোনার পকেটঘড়ি গত বছর ১৫ লাখ ৬০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি হয়েছিল। দামের দিক থেকে এটি সে সময় রেকর্ড করেছিল।

আরও পড়ুনটাইটানিকের যাত্রী মার্কিন ধনকুবেরের সেই সোনার ঘড়ি রেকর্ড দামে বিক্রি২৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ