মানিকগঞ্জে বাউল শিল্পী আবুল সরকারের ধর্ম নিয়ে ‘কটূক্তি’র অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর তার মুক্তি ও শাস্তির দাবিতে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। 

রবিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তৌহিদী জনতা ও আলেম-ওলামারা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করলে একই সময়ে আবুল সরকারের ভক্তরা মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে শহরের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের পাশে বাউল ভক্তদের উপর হামলা চালায় তৌহিদী জনতার একটি অংশ।

এ ঘটনায় আহত হন অন্তত তিনজন বাউল ভক্ত। তারা হলেন- শিবালয়ের সাঁকরাইল গ্রামের আব্দুল আলিম, হরিরামপুরের ঝিটকার জহুরুল এবং সিংগাইরের তালেবপুর এলাকার আরিফুল ইসলাম। 

হামলার সময় তৌহিদী জনতার পক্ষের মাওলানা আব্দুল আলীম নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষকও আহত হন। এছাড়া হামলার শিকার আরো কয়েকজন দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। তাদের নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

পুলিশ জানায়, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার আশঙ্কা থাকায় আগে থেকেই আলাদা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তবুও বিক্ষোভ চলাকালে বিচ্ছিন্নভাবে বাউল ভক্তদের উপর হামলা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো.

আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “ঘটনাস্থলের পাশেই পুলিশ মোতায়েন ছিল। দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলছে।”

এর আগে সকাল ৯টায় বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তৌহিদী জনতার বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে জেলা ডাকঘরের সামনে সমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে বেরিয়ে বিক্ষিপ্তভাবে একটি অংশ বাউল ভক্তদের উপর হামলা চালায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় এক গানের আসরে ‘ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তি’র অভিযোগে বাউল শিল্পী আবুল সরকারকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত।

কারাগারে যাওয়া আবুল সরকার সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লী ইউনিয়নের পারতিল্লী এলাকার বাসিন্দা। তিনি এলাকায় বাউল শিল্পী ছোট আবুল সরকার নামে পরিচিত।

ঢাকা/চন্দন/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জনত র

এছাড়াও পড়ুন:

বসতঘরে একাই থাকতেন বৃদ্ধা, আগুনে পুড়ে মৃত্যু

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় নিজ বসতঘরে আগুনে পুড়ে জেওরা খাতুন (৮২) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে গোবিন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জেওরা খাতুন গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত আ. রব চৌধুরীর স্ত্রী। এই দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তাঁরা বিয়ে ও কাজের সুবাদে বাড়ির বাইরে থাকেন। গোবিন্দপুর গ্রামে একটি টিনের দোচালা ঘরে জেওরা খাতুন একাই থাকতেন।

জেওরা খাতুনের নাতি উপজেলার কালিকাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আ. ছাত্তার বলেন, গতকাল রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে তাঁর দাদি ঘুমিয়ে পড়েন। রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে ওই ঘরে আগুন লেগে যায়। অল্প সময়ের মধ্যে আগুন ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ওই বৃদ্ধা চিৎকার করে ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। একপর্যায়ে তিনি আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আগুনে মালামালসহ বসতঘরটিও পুড়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে।

ওই বৃদ্ধার বড় ছেলে মো. সোলেমান বলেন, ‘আগুনে পুইড়া আমার মা দুনিয়া থেকে এইভাবে চইলা যাইব, তা কোনো দিন চিন্তাও করি নাই। এহন আমি কারে মা ডাহুম।’
উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের একাধিক কর্মী জানান, তাঁরা ওই গ্রামে আগুন লাগার খবর পেয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে তাঁদের জানানো হয়, সেখানকার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহাম্মদ বলেন, তাঁরা বিষয়টি জেনেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা বা লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ