ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীরা ব্যাগসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হাতে নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন—এমন দৃশ্য আজ রোববার সকাল থেকে চোখে পড়ে।

শুক্র ও শনিবার মিলিয়ে কয়েক দফায় ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ভূত জরুরি পরিস্থিতিতে আগামী ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রোববার বিকেল পাঁচটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা হল ছাড়ছেন।

আজ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মেয়েদের হলের অনেক শিক্ষার্থী বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। ছেলেদের হলগুলো থেকেও শিক্ষার্থীরা বের হচ্ছেন। আর যাঁরা এখনো যাননি, তাঁরা কিছুটা দ্বিধায় আছেন।

আবার কিছু শিক্ষার্থী বলছেন, হুট করে হল ছাড়তে বলায় তাঁরা বিপদে পড়েছেন। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, টিউশন আছে। অনেকে চাকরি করেন। হল বন্ধ থাকলে তাঁরা কোথায় থাকবেন এই কদিন।

অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী বলছেন, বাধ্যতামূলক হল ত্যাগের নির্দেশ সংকটের স্থায়ী সমাধান নয়। কোনো আশ্বাস না দিয়েই হল বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

আবার কয়েকজন বলেছেন, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সেখানকার শিক্ষার্থীরা কর্মচারীদের ভবন দখলে নিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁদের সরানোর জন্যই প্রশাসন হল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।

তবে কোনো কোনো শিক্ষার্থী প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা হল ত্যাগও করছেন। তাঁরা বলছেন, হলে থাকতে আতঙ্কিত বোধ করছেন। কারণ, হল পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ।

গত শুক্রবারের ভূমিকম্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। গতকালও অন্তত ৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

গতকাল রাতে আতঙ্কিত হয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের ছাত্রীরা বাইরে বের হয়ে আসেন। তখন কয়েকজন ছাত্রী ‘প্যানিক অ্যাটাক’ করেন বলে জানা যায়।

এমন পরিস্থিতিতে হল ছাড়াটাকেই তুলনামূলক ভালো বিকল্প হিসেবে দেখছেন বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের এক শিক্ষার্থী।

সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইসমাইল নাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি হল ছাড়বেন নাকি থাকবেন, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নন।

আরও পড়ুনভূমিকম্প-পরবর্তী জরুরি পরিস্থিতি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ দিন বন্ধ ঘোষণা১৪ ঘণ্টা আগে

গতকাল রাতে কয়েকজন শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন তিন দফা দাবিতে। আজ সকালে অবশ্য তাঁদের সেখানে দেখা যায়নি। তাঁদের তিন দফা দাবিগুলো হলো—বাধ্যতামূলক হল বন্ধ ঘোষণা স্থগিত করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আবাসনের ফিজিবল সলিউশন দেখানো। ঝুঁকিপূর্ণ হলের শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা টাওয়ারে তুলে নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করা (যত দিন না নতুন ভবনের কাজ শেষ না হয়)। এই দুই দফা মেনে নেওয়ার পর হল বন্ধ করা হলে কর্মকর্তা-কর্মচারী-শিক্ষকদের কোয়ার্টারসহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করতে হবে।

আরও পড়ুনভূমিকম্পে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত, আগামীকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত১৬ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জন শ ক ষ র থ ভ ম কম প বলছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও বিদেশিদের হাতে বন্দর ইজারা দিতে সরকার মরিয়া

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আমরা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বশ্যতা অস্বীকার করেছিলাম। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারও বিদেশি কোম্পানিকে দেশের সমুদ্রবন্দর ইজারা দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল–বাসদের (মার্ক্সবাদী) এক জনসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। ৭ নভেম্বর রুশ বিপ্লবের ১০৮তম বার্ষিকী ও বাসদের (মার্ক্সবাদী) ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।

জনসভায় বাসদ (মার্ক্সবাদী) দলের প্রধান সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, ‘গণ–অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন কলকারখানার শ্রমিকেরা যখন বকেয়া মজুরির দাবিতে আন্দোলন করেছে, আন্দোলন দমনে সরকার পুলিশ বাহিনী দিয়ে শ্রমিক হত্যা করেছে। অথচ জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শ্রমজীবী মানুষের জীবনের অবদান সবচেয়ে বেশি। আবার বিদেশি কোম্পানিকে দেশের সমুদ্রবন্দর ইজারা দেওয়ার জন্য মরিয়া সরকার। অথচ জুলাই অভ্যুত্থানে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বশ্যতা আমরা অস্বীকার করেছিলাম।’

গণ–অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশা থাকলেও সেটি পূরণ হয়নি বলেও মন্তব্য করেন মাসুদ রানা। তিনি বলেন, মব তৈরি করে নারীকে আক্রমণ, মাজার ভাঙা, বাউলদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। কোনোটাই অন্তর্বর্তী সরকার ঠেকাতে পারেনি। এই সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ।

জনসভা শুরুর আগে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শাহবাগ থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি কাঁটাবন, সায়েন্সল্যাব মোড় ঘুরে আবার শাহবাগে এসে শেষ হয়। জনসভায় সারা দেশের কয়েক হাজার নেতা–কর্মী অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভূমিকম্প-পরবর্তী পরিস্থিতি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ
  • ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতিতে ঢাবি ১৫ দিন বন্ধ
  • ভূমিকম্প পরবর্তী জরুরি পরিস্থিতি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ দিন বন্ধ ঘোষণা
  • ভূমিকম্প মোকাবিলায় ২ সপ্তাহ বন্ধ থাকবে ঢাবি, হল খালি করার নির্দেশ
  • আমরা বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে আছি
  • এইচ–১বি বাতিলের পথে যুক্তরাষ্ট্র: প্রযুক্তি খাতে পরিবর্তনের শঙ্কা
  • অভিনয় ছেড়ে ধর্মে মনোযোগী অভিনেত্রী
  • গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও বিদেশিদের হাতে বন্দর ইজারা দিতে সরকার মরিয়া