‘চাঁদের আলো’খ্যাত বাংলা চলচ্চিত্রের বর্ষীয়ান নির্মাতা শেখ নজরুল ইসলাম মারা গেছেন। শনিবার (২২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। 

শেখ নজরুল ইসলামের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা গাজী মাহবুব এবং ‘চাঁদের আলো’ চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী রুমানা ইসলাম। 

আরো পড়ুন:

দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে শাহরুখ খানের বক্তব্য

সাঁইত্রিশে গায়কের মৃত্যু, মেয়েকে নিয়ে শেষ পোস্ট ভাইরাল

গাজী মাহবুব বলেন, “বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা শেখ নজরুল ইসলাম আমার ওস্তাদজি। তিনি ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ নভেম্বর রাত ১১টা ৩০ মিনিটে মারা যান।” 

রবিবার (২৩ নভেম্বর) নিজ জেলা নাটোরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে বলেও জানান তিনি।

পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ১৬ নভেম্বর দুপুরে তিনি মাইল্ড স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এরপর তাকে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিউতে নেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখলেও পুরোপুরি শারীরিক উন্নতি হয়নি। শনিবার রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বরেণ্য নির্মাতা। 

১৯৩৫ সালের ৭ নভেম্বর নাটোরের কালিগঞ্জ থানার পিপরুল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শেখ নজরুল ইসলাম। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। 

জহির রায়হান ও খান আতাউর রহমানের সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু করেন শেখ নজরুল ইসলাম। ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় তার পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘চাবুক’। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নির্মাণ করেছেন অসংখ্য সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র।  

তার নির্মিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো—‘নদের চাঁদ’, ‘এতিম’, ‘নাগিন’, ‘মাসুম’, ‘ঈদ মোবারক’, ‘আশা’, ‘পরিবর্তন’, ‘নতুন পৃথিবী’, ‘দিদার’, ‘সালমা’, ‘বউ শাশুড়ি’, ‘কসম’, ‘বিধাতা’, ‘স্ত্রীর পাওনা’, ‘চাঁদের হাসি’, ‘চক্রান্ত’, ‘সিংহ পুরুষ’, ‘সব খতম’ প্রভৃতি। 

অভিনেতা হিসেবেও তার উপস্থিতি ছিল। ষাটের দশকে জনপ্রিয় সিনেমা ‘সাত ভাই চম্পা’ সিনেমায় অভিনয় করেন শেখ নজরুল ইসলাম। এছাড়া জহির রায়হানের ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ (অসমাপ্ত) সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজের পাশাপাশি একটি চরিত্রেও অভিনয় করেন।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র শ খ নজর ল ইসল ম চলচ চ ত র পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সিরামিক শিল্পের সক্ষমতা তুলে ধরতে ঢাকায় শুরু হচ্ছে চার দিনের ‘সিরামিক এক্সপো’

বাংলাদেশের সিরামিক শিল্পকে বিশ্ববাজারে আরও ভালোভাবে পরিচিত করাতে ঢাকায় শুরু হচ্ছে চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ‘সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ ২০২৫’।

রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ২৭ নভেম্বর শুরু হবে এ মেলা, চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলার আয়োজক বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ)।

আজ রোববার পল্টনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে বিসিএমইএ। সংগঠনটি জানায়, সিরামিক এক্সপোতে বাংলাদেশসহ ২৫টি দেশ থেকে ১৩৫টি প্রতিষ্ঠান ও ৩০০ ব্র্যান্ড অংশ নেবে। তাদের পাশাপাশি এ খাতের ৫০০ জন আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি ও ক্রেতা অংশ নেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিসিএমইএ সভাপতি মইনুল ইসলাম। মেলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মেলা কমিটির চেয়ারম্যান ও বিসিএমইএর সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দীন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. মামুনুর রশীদ ও আবদুল হাকিম, সহসভাপতি রাশীদ মাইমুনুল ইসলাম ও পরিচালক মো. জিয়াউল হক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৭ নভেম্বর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করার কথা। ২৯ নভেম্বর মেলার একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেনের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

বিসিএমইএ সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, দেশে ইতিমধ্যে টেবিলওয়্যার, টাইলস ও স্যানিটারিওয়্যারসহ বিভিন্ন খাতের ৭০টির বেশি কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব পণ্যের স্থানীয় বাজার বছরে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার। গত ১০ বছরে এ শিল্পে উৎপাদন ও বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ১৫০ শতাংশ। বর্তমানে ৫০টির বেশি দেশে বাংলাদেশের সিরামিক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। এর মাধ্যমে বছরে আয় হচ্ছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এ শিল্প খাতে মোট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের।

মেলা কমিটির চেয়ারম্যান ও বিসিএমইএ সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দীন বলেন, সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ-২০২৫ দেশের চতুর্থ ও এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। এতে থাকবে তিনটি সেমিনার, জব ফেয়ার বা চাকরি মেলা, বিটুবি ও বিটুসি মিটিং, লাইভ ডেমোনস্ট্রেশন, স্পট অর্ডার, র‍্যাফেল ড্র ও নতুন পণ্যের উদ্বোধন। সিরামিক প্রস্তুতকারক, রপ্তানিকারক ও সরবরাহকারীরা এ মেলায় তাদের নতুন পণ্য, আধুনিক প্রযুক্তি ও নিজেদের দক্ষতা বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার সুযোগ পাবেন।

ইরফান উদ্দীন আরও বলেন, সিরামিক শিল্পে প্রযুক্তির ব্যবহার ভবিষ্যৎকে পুরোপুরি বদলে দেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। অটোমেশন, উন্নত ডিজিটাল প্রিন্টিং, রোবোটিক হ্যান্ডলিংসহ আধুনিক প্রযুক্তি সিরামিক শিল্পে বড় পরিবর্তন আনবে। এর মাধ্যমে উৎপাদন আরও দ্রুত, নির্ভুল ও সাশ্রয়ী হবে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী স্মার্ট টাইলস ও সেন্সর ইন্টিগ্রেটেড পণ্যের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়বে। প্রেমিক এক্সপোতে এ ধরনের প্রযুক্তির সঙ্গে আমাদের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ তৈরি হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চার দিনব্যাপী এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

এবারের সিরামিক এক্সপোর মূল পৃষ্ঠপোষক হিসবে আছে শেলটেক সিরামিকস। এ ছাড়া প্লাটিনাম স্পনসর হিসেবে রয়েছে ডিবিএল সিরামিকস, আকিজ সিরামিকস ও মেঘনা সিরামিক। গোল্ড স্পনসর হিসেবে রয়েছে মীর সিরামিক, আবুল খায়ের সিরামিক, এইচএলটি ডিএলটি ও সাকমি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ