শিক্ষিত মুসলমান মাত্রেরই আরবি ভাষা শেখার এক স্বাভাবিক আকাঙ্ক্ষা ও প্রচেষ্টা থাকা উচিত। এই ভাষার বিপুল গভীরতা ও কাঠামোগত জটিলতার কারণে হয়তো সবার পক্ষে সম্পূর্ণ আয়ত্ত করা সম্ভব হবে না, সেই জটিলতার স্বরূপ নিয়ে না হয় একটু পরেই কথা বলা যাবে; কিন্তু কর্মব্যস্ত জীবনের নানা ডালপালার মধ্যেও এটিকে একটি পার্শ্বপ্রকল্প হিসেবে রাখা যায়।

আরবির ধর্মতাত্ত্বিক গুরুত্ব

প্রত্যেক মুসলমানের আধ্যাত্মিক জীবনে আরবির সংযোগ এক অবিচ্ছেদ্য সত্য। প্রাত্যহিক এবাদতের মৌলিক ভিত্তিই আরবি, ইসলামে প্রবেশের প্রথম সাক্ষ্যটিও আরবিতে। সর্বোপরি আল্লাহর বাণী কোরআন পাঠ করতে হয় তার মূল ভাষাতেই।

ইসলামের মূল আকরগ্রন্থগুলো কেবল অনুবাদ অথবা কোনো ব্যাখ্যাকারের বয়ানের ওপর নির্ভর করে পুরোপুরি অনুধাবন করা প্রায় অসম্ভব। আরবির স্বভাবধর্মই এমন যে তার শব্দে শব্দে অর্থের বহুমাত্রিকতা, অলংকারের সূক্ষ্ম কারুকাজ এবং হাকিকত (অভিধার্থ) ও মাজাযের (লক্ষ্যার্থ) বিচিত্র জগৎ লুকিয়ে থাকে। পাঠক যখন কোনো অনুবাদ পড়েন, তিনি তখন মূলের একটি একমাত্রিক প্রতিচ্ছবিই কেবল দেখতে পান, তার সামগ্রিক ব্যঞ্জনা থেকে বঞ্চিত হন।

এর চেয়ে বড় দুর্ভাগ্য আর কী হতে পারে যে কোরআনের যে অলৌকিকতা, তার ভাষা, অলংকার আর জ্ঞানতত্ত্বের পরতে পরতে নিহিত, তা একজন মুসলমানের কাছে জীবনভর অগোচরেই থেকে যায়!

কোরআনের ভাষা সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘আমি একে আরবি ভাষার কোরআনরূপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পারো।’ (সুরা ইউসুফ, আয়াত: ২)

 আল্লাহ আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই এ কোরআন রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। বিশ্বস্ত আত্মা তা নিয়ে অবতরণ করেছে। তোমার অন্তরে অবতীর্ণ হয়েছে, যাতে তুমি সতর্ককারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। নাজিল হয়েছে এমন আরবি ভাষায়, যা বাণীকে সুস্পষ্ট করে দেয়।’ (সুরা আশ-শু‘আরা, আয়াত: ১৯২ - ১৯৫)

এখান থেকে বোঝা যায়, রাসুলুল্লাহ (সা.

)-এর অন্তরে কোরআনের কেবল ‘ভাব’ নাজিল করা হয়নি, যা তিনি নিজ ভাষায় প্রকাশ করেছেন; বরং ভাবের সঙ্গে এর বিশুদ্ধ, অলংকারপূর্ণ আরবি ভাষাও তাঁর প্রতি ওহি মারফত নাজিল করা হয়েছে।

আরও পড়ুনআরবি ভাষার শিকড় সন্ধান০৭ অক্টোবর ২০২৫

লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, উপমহাদেশে প্রচলিত প্রায় সব ইসলামি চিন্তাধারার প্রধান তাত্ত্বিকেরা আরবি ভাষা সরাসরি শেখার ওপর জোর দিয়েছেন। কওমি ও সুফি ধারার পথপ্রদর্শক শাহ ওলিউল্লাহ দেহলবী, সালাফি ধারার চিন্তানায়ক ইবনে তাইমিয়া কিংবা জামায়াতে ইসলামির তাত্ত্বিক আবুল আলা মওদুদি—সবাই একবাক্যে বলেছেন যে কোরআন ও সুন্নাহর মর্মমূলে পৌঁছাতে মূল আরবি শিক্ষার বিকল্প নেই।

ধর্মতাত্ত্বিক ইবনে কাইয়িমের উক্তিটি এ প্রসঙ্গে প্রণিধানযোগ্য, ‘কোরআনের মর্যাদা কেবল তারাই বুঝতে পারে, যারা আরবের ভাষা, তার ব্যাকরণ, অলংকারশাস্ত্র এবং তাদের কবিতা ও সাহিত্য সম্পর্কে জ্ঞান রাখে।’ (আল-ফাওয়াইদুল মুশাওয়িক ইলা উলুমিল কোরআন)

ইবনে তাইমিয়া আরও বলিষ্ঠভাবে বলেছেন, ‘আরবি ভাষা নিঃসন্দেহে দ্বীনেরই একটি অংশ এবং এই জ্ঞানার্জন এক আবশ্যক কর্তব্য। কারণ, কোরআন ও সুন্নাহ অনুধাবন করা ফরজ এবং আরবি ভাষা ছাড়া তা অসম্ভব। ইসলামের নীতি অনুযায়ী, যা ছাড়া কোনো আবশ্যক কর্তব্য পালন করা যায় না, তা অর্জন করাও আবশ্যক হয়ে দাঁড়ায়।’ (ইকতিদাউস সিরাতিল মুস্তাকিম)

আরবি শেখার পারিপার্শ্বিক ও পদ্ধতিগত সংকট

আরবির এতটা গুরুত্বের পরও এই অপরিহার্য কর্তব্যটি অনারব মুসলিম সমাজে এত অবহেলিত কেন? এর গভীরে তাকালে দুটি প্রধান কারণ আমাদের চোখে পড়ে। প্রথমটি আমাদের ভাষাতাত্ত্বিক ও বৈশ্বিক বাস্তবতা; দ্বিতীয়টি হলো অনারবদের জন্য আরবি শিক্ষাকে সহজ করার গবেষণার অভাব, অর্থাৎ আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার সংকট।

মানুষের আকৃতি, বর্ণ আর ভাষার এই যে ভিন্নতা—এ আল্লাহরই এক আশ্চর্য নিদর্শন। অথচ আমাদের সবার উৎস এক। পিতা আদম, মাতা হাওয়া। কিন্তু কালের ধারায় মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়েছে অগণিত জাতি, গোত্র, ভাষা ও বর্ণে। সেই সংখ্যা একমাত্র আল্লাহই জানেন। যেমন তিনি বলেছেন: ‘এবং তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে আছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃজন এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন আছে জ্ঞানবানদের জন্য।’ (সুরা আর-রূম, আয়াত: ২২)

ভাষার এই বৈচিত্র্য এক গভীরতর সত্যের দিকে ইঙ্গিত করে। মানুষ প্রজাতিগতভাবে এক ও অভিন্ন। কিন্তু তাদের ভাষার ভিন্নতা প্রমাণ করে যে আল্লাহ মানুষের স্বভাবের গভীরে চিন্তার ভিন্নতা গেঁথে দিয়েছেন। ভাষার নির্মাণ ও ব্যবহারে যে বৈচিত্র্য, তা–ও তাঁরই সৃষ্টি। ভাষার রূপ বদলায়। বদলায় উপভাষার মধ্য দিয়ে শব্দের সংক্ষিপ্তকরণে, বর্জন বা সংযোজনে। এভাবেই এক অভিন্ন উৎস থেকে জন্ম নেয় বহুবিধ ভাষা। (ইবনে আশুর, আত-তাহরির ওয়াত-তানভির, )

১. পারিপার্শিক ও বৈশ্বিক সংকট

তাই আরবি শেখার সংকটের প্রথম কারণটি বুঝতে হলে আমাদের দুটি প্রধান ভাষাগোষ্ঠীর দিকে তাকাতে হবে। বর্তমান পৃথিবীতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সাহিত্য বা রাজনীতির জগৎ মূলত ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবারের দ্বারা প্রভাবিত। বাংলা, হিন্দি, উর্দু ও ফারসি থেকে শুরু করে ইংরেজি, জার্মান, ফরাসি, রুশ—এই পরিবারের অন্তর্ভুক্ত।

এই ভাষাগুলোর একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো এগুলোর নমনীয়তা এবং দ্রুত পরিবর্তনশীলতা। পারস্পরিক প্রভাবের ফলে এবং নতুন শব্দ ও ধারণা গ্রহণের স্বচ্ছন্দ ক্ষমতার কারণে কয়েক শতাব্দী আগের ভাষাই আজ আমাদের কাছে দুর্বোধ্য মনে হতে পারে।

এ কারণেই এই পরিবারের একটি ভাষায় দক্ষ ব্যক্তির পক্ষে অন্য একটি ভাষা শেখা তুলনামূলকভাবে সহজ। সম্ভবত এ কারণেই প্রাক্ ব্রিটিশ ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম সালতানাতগুলোতে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল ফারসি, আরবি নয়।

এর বিপরীতে রয়েছে আফ্রো-এশীয় ভাষাপরিবার, যার সদস্য হিব্রু, আমহারিক ও আরবি। এই ভাষাগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এগুলোর ভাষাতাত্ত্বিক স্থিতিশীলতা। হাজার বছরেও এগুলোর মৌলিক কাঠামোর পরিবর্তন প্রায় ঘটেনি।

এর কারণ, এর শব্দতত্ত্ব (ইলমে সরফ) ত্রিব্যঞ্জনমূলের এক গাণিতিক শৃঙ্খলার ওপর প্রতিষ্ঠিত। নতুন শব্দের জন্ম হয় পুরোনো মূলকে কেন্দ্র করেই, নির্দিষ্ট ব্যাকরণিক ছাঁচে ফেলে। ফলে মূল এবং অর্থের মধ্যে এক গভীর, অন্তর্নিহিত যোগসূত্র বজায় থাকে। উপরন্তু, এর বাক্যগঠন (ভার্ব-সাবজেক্ট-অবজেক্ট) আমাদের পরিচিত ইন্দো-ইউরোপীয় (সাবজেক্ট-ভার্ব-অবজেক্ট) রীতির থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

আরও পড়ুনকোরআন কেন আরবি ভাষায়২৭ মে ২০২৫

এই ভাষাপরিবারের ধ্বনিমাধুর্য ও ছন্দ অত্যন্ত নান্দনিক; কিন্তু কিছু কণ্ঠ্যধ্বনি অন্য ভাষাভাষীর জন্য আয়ত্ত করা কঠিন। উচ্চারণের সামান্য বিচ্যুতিতে অর্থের আমূল পরিবর্তন ঘটে যেতে পারে। একটি ক্রিয়াপদের প্রায় শতাধিক রূপান্তর সম্ভব (লিঙ্গ, বচন, কাল ও বাচ্যভেদে)।

শব্দের ভেতর হরফের অবস্থানভেদে হরফের বাহ্যিক রূপ বদলে যায় এবং লেখার সময় হ্রস্ব-স্বরচিহ্ন প্রায়ই ঊহ্য থাকে—শিক্ষার্থীকে সঠিক উচ্চারণ শিখতে হয় দীর্ঘদিন অনুশীলন করে বা ব্যাকরণের কায়দাকানুন শিখে।

ভাষাতাত্ত্বিক এই জটিলতাই কিন্তু একদিক থেকে আশীর্বাদ। আরবির এই ব্যাকরণগত রক্ষণশীলতাই হাজার হাজার বছর ধরে এর বিশুদ্ধতাকে রক্ষা করেছে, যার ফলে আমরা আজও আকরগ্রন্থগুলো তার মূল রূপে পাঠ করতে পারি। আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় ভাষার জন্য এর চেয়ে বড় ইতিবাচকতা আর কী হতে পারে?

এ জন্যই হয়তো কোরআন সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, ‘বস্তুত এ উপদেশবাণী (কোরআন) আমিই অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই এর রক্ষাকর্তা।’ (সুরা হিজর, আয়াত: ১৫)

২. শিক্ষাপদ্ধতির সংকট

এ তো গেল পারিপার্শ্বিক কারণ। দ্বিতীয় এবং সম্ভবত অধিকতর গুরুতর কারণটি হলো আমাদের শিক্ষাপদ্ধতির সংকট। অনারবদের জন্য কীভাবে আরবি শিক্ষাকে সহজ ও কার্যকর করা যায়, তা নিয়ে ব্যবহারিক গবেষণার দীনতা চোখে পড়ার মতো। প্রচলিত পদ্ধতিতে আরবি শিখতে যে বিপুল সময় ও শ্রম দিতে হয়, তা অনেকের পক্ষেই অসম্ভব।

এই পদ্ধতিগুলো তো মানুষের হাতে তৈরি। এতে সীমাবদ্ধতা ও সংকট থাকা মোটেও অস্বাভাবিক না।

বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মনীষী আবুল হাসান আলী নদভী তাঁর আরব শিক্ষাগুরু খলিল উদ্ভাবিত সিলেবাস শেষ করার পর আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘আমার ধারণা, আমাদের মাদ্রাসাগুলোতে যে পদ্ধতিতে আরবি ভাষা ও সাহিত্য শেখানো হয়, তাতে প্রকৃত সাহিত্যবোধ তৈরি হওয়া সম্ভব নয়। প্রাচীন সিলেবাসের প্রাণহীন, নীরস গ্রন্থগুলো, বিশেষত অলংকারশাস্ত্রের সেই সব বই, যেগুলো আরবির অধঃপতনের যুগে অনারব পণ্ডিতদের দ্বারা রচিত—কোরআনের ভাব, ভাষা ও আলংকারিত্ব বোঝার জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত।’ (মেরি ইলমি ও মুতালায়াতি জিন্দেগি)

এই সংকট উত্তরণের চেষ্টায় পরবর্তীকালে নানা পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছে; কিন্তু সেগুলোও খুব সহজ, সংক্ষিপ্ত ও সুচিন্তিত নয়; যেখানে কর্মব্যস্ত মানুষ অবসর সময়ে ভাষাটা শিখতে পারেন।

যেমন আবুল হাসান নদভীর প্রবন্ধ-সংকলন গ্রন্থ মুখতারাতকে আরবি ভাষায় দক্ষতার একটি মাপকাঠি হিসেবে ধরা যেতে পারে। এ বইটি যে পড়তে পারেন, তিনি আরবির বিশাল জ্ঞানরাজ্যে প্রবেশের চাবিকাঠি পেয়ে গেছেন বলে ধরা যায়; কিন্তু সেই স্তর পর্যন্ত পৌঁছানোও এক দীর্ঘ ও শ্রমসাধ্য সাধনা। মাদানি নেসাব-প্রণীত সিলেবাসে, তিন বছর নিরবচ্ছিন্ন শুধু আরবি শেখায় সময় দিয়ে ছাত্ররা সাধারণত বইটি বোঝার স্তরে পৌঁছেন।

আমাদের বর্তমান কর্তব্য

আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আমাদের দুটি কাজ অত্যন্ত জরুরি।

প্রথমত, মুসলিম সমাজে আরবি শেখার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা।

দ্বিতীয়ত, শিক্ষাজগতের মননশীল ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা, যাঁরা প্রচলিত পদ্ধতির সংকটগুলো বিশ্লেষণ করে আরবি শেখার এক নতুন, সংক্ষিপ্ত কিন্তু দক্ষতানির্ভর শিক্ষাপদ্ধতি উদ্ভাবন করবেন।

এই উদ্যোগ না নিলে এক বিশালসংখ্যক মুসলমান তাদের ধর্মকে মূল উৎস থেকে বোঝা ও অনুভবের ফায়দা থেকে বঞ্চিত থেকে যাবেন। ফলস্বরূপ, জ্ঞানচর্চায় যে বিভাজন তৈরি হয়েছে, তা আরও গভীর হবে এবং ধর্মীয় ও জাগতিক শিক্ষার পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতা আমাদের চিন্তার জগৎকে আরও সংকীর্ণ করে তুলবে।

আরও পড়ুনআরবি না জেনেও কোরআনের সঙ্গ পাওয়ার ৭ উপায়১৯ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র ক রআন র অবত র ণ ম সলম ন এই ভ ষ গ রন থ অল ক র দ র জন র জন য আল ল হ আম দ র বল ছ ন আরব র র একট ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি: শেখ রেহানার মামলায় যুক্তিতর্ক ২৫ নভেম্বর

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি হবে ২৫ নভেম্বর।

ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল আলম আজ রোববার এই তারিখ ধার্য করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জানান, আজ মামলায় আসামিদের পরীক্ষা ও আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য ছিল। মামলায় গ্রেপ্তার থাকা একমাত্র আসামি রাজউকের সদস্য মোহাম্মদ খুরশিদ আলমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তবে তিনি এই মামলায় নিজের পক্ষে সাফাই দিতে রাজি হননি। মামলার অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় তাঁরা আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির সুযোগ পাচ্ছেন না।

এর আগে ১৮ নভেম্বর এই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করেন আদালত। মামলায় ৩২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।

গত ৩১ জুলাই এটিসহ তিন মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। অভিযোগ গঠনের শুনানির সময়ে আসামিরা পলাতক থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

পৃথক তিন মামলায় শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ ১৭ জন; আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, শেখ হাসিনাসহ ১৮ জন এবং রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ