চুরির অভিযোগে ২ কিশোরের মাকে ‘নাকে খত’: বিএনপির সেই নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি
Published: 5th, May 2025 GMT
ফেনীতে দুই কিশোরের বিরুদ্ধে হাঁস ও কবুতর চুরির অভিযোগে তাদের মায়েদের নাকে খত দেওয়ানোর ঘটনায় সালিসে নেতৃত্ব দেওয়া সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেলুকে দলীয় সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (৪ মে) রাতে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নারী অবমাননার ঘটনায় তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে সন্ধ্যায় সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুর রহমান বকুল ও সদস্য সচিব আমান উদ্দিন কায়সার স্বাক্ষরিত আরেক বিজ্ঞপ্তিতে দেলুর সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন বলেন, “মানবাধিকারের লঙ্ঘনকারী কোনো ঘটনার দায় দল নিতে পারে না। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে তার সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।”
এর আগে গত ১ মে রাতে ইউনিয়নের মধ্যম মাথিয়ারা এলাকায় চুরির অভিযোগে দুই কিশোরকে প্রকাশ্যে মারধর ও তাদের মায়েদের ‘নাকে খত’ দিয়ে জনসম্মুখে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, দেলোয়ার হোসেন দেলু লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। এসময় দুই কিশোরের মা নাকে খত দিয়ে ক্ষমা চাইছেন। ভিডিওর অন্য অংশে দেখা যায়, কিশোরদের লাঠি দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দশ দিন আগে মাথিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি থেকে হাঁস ও কবুতর চুরি হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় দুই কিশোরকে সন্দেহ করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে সালিশ বৈঠক ডাকা হয়। সালিশে সভাপতিত্ব করেন দেলোয়ার হোসেন দেলু। সালিশে দুই কিশোরের সঙ্গে তাদের মায়েদেরও ডাকা হয়। পরে অভিযুক্ত কিশোরদের মারধর করা হয়। তাদের মায়েদের বলা হয়, সন্তানদের সঠিকভাবে গড়ে তুলতে না পারার দায়ে তাদের নাকে খত’ দিয়ে জনসম্মুখে ক্ষমা চাইতে হবে।
অভিযুক্ত এক কিশোরের মা বলেন, “আমার ছেলে যদি ভুল করে থাকে, তার বিচার হতে পারে। কিন্তু, আমাকে সবার সামনে এভাবে অপমান করা হবে, তা কল্পনাও করিনি।”
আরেক কিশোরের মা বলেন, “আমি কোনো অন্যায় করিনি। শুধু একজন মা হওয়ার কারণে আমাকে এত বড় অপমান সহ্য করতে হলো।”
তবে দেলোয়ার হোসেন দেলু বলেন, “আমি কাউকে মারিনি। অভিযুক্ত কিশোরদের মায়েরা আমার কাছে আবদার করেছিলেন—বিষয়টি যেন সামাজিকভাবে মীমাংসা করা হয়। তারাই স্বেচ্ছায় নাকে খত দিয়েছেন।”
এ বিষয়ে ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা নাসরীন কান্তা বলেন, “নারীকে এভাবে হেনস্তা করার অধিকার কারো নেই। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.
ঢাকা/সাহাব উদ্দিন/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র স
এছাড়াও পড়ুন:
ইংল্যান্ড সিরিজে ভারতের ৩–১ ব্যবধানে জয় দেখছেন টেন্ডুলকার
এবার ভারতের পক্ষে বাজি ধরা কঠিনই হওয়ার কথা। দলে নেই বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো ক্রিকেটার। নেই চেতেশ্বর পূজারা, রাহানেরাও। ১৩ বছর পর পূজারা-কোহলি-রোহিত-রাহানে-অশ্বিন ছাড়া টেস্টে নামবে ভারত। মানে নতুন যুগের সূচনা করতে যাচ্ছে দলটি।
তবু ইংল্যান্ডের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে ভারতের জয় দেখছেন কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার। ক্রিকেটবিষয়ক পোর্টাল ইএসপিএনক্রিকইনফোকে বৃহস্পতিবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শচীন ২০০৭ সালে রাহুল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডে ভারতের শেষ সিরিজ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। এবার নেতৃত্বে শুবমান গিল। তাঁর এই দল নিয়ে টেন্ডুলকার আশাবাদী। কিংবদন্তি ভারতের জয় নিয়ে বলেছেন, ‘আমি ৩-১ ব্যবধানে ভারতের পক্ষেই সিরিজের ফল ধরে রেখেছি।’
আমার পরামর্শ থাকবে—বাইরের কে কী বলছে, সেসব নিয়ে ভাবার দরকার নেই। শুবমান আক্রমণাত্মক, না রক্ষণাত্মক, না সে যথেষ্ট তৎপর—এসব শুধু মতামত। এসব দলের বাইরে থাকা লোকজনের মতামত।শচীন টেন্ডুলকারশচীনের বাজি যেমন ভারতের পক্ষে তেমনি ইংল্যান্ডের সাবেক দুই ক্রিকেটার নাসের হুসেইন ও গ্রায়েম সোয়ানেরও বাজি ইংল্যান্ডের পক্ষে। নাসের এই সিরিজে ইংল্যান্ডের ৩-১ ব্যবধানে ও সোয়ান ৪-১ ব্যবধানে জয় দেখছেন।
আরও পড়ুনজিএসএলের সঙ্গে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজের সংঘাত, রংপুরের দলে কে আছেন কে নেই২ ঘণ্টা আগেপাঁচ টেস্টের এই সিরিজ ভারত খেলবে শুবমান গিলের নেতৃত্বে। মাত্র ২৪ বছর বয়সে ভারতের টেস্ট দলের অধিনায়ক হয়েছেন গিল। গত ২৪ মে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন টেস্ট অধিনায়ক ঘোষণা করে বিসিসিআই।
নতুন অধিনায়ক গিলকে পরামর্শ দিয়েছেন টেন্ডুলকার, ‘আমার পরামর্শ থাকবে—বাইরের কে কী বলছে, সেসব নিয়ে ভাবার দরকার নেই। শুবমান আক্রমণাত্মক, না রক্ষণাত্মক, না সে যথেষ্ট তৎপর—এসব শুধু মতামত। এসব দলের বাইরে থাকা লোকজনের মতামত। ওর ভাবার বিষয় হলো, ড্রেসিংরুমে যেটা আলোচনা হয়েছে সেটা মাঠে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না। সিদ্ধান্তগুলো দলের স্বার্থকে সামনে রেখেই নেওয়া হচ্ছে কি না—সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
অ্যান্ডারসন–টেন্ডুলকার ট্রফি।