জুলাই-আগষ্ট আন্দোলনে হামলার ঘটনায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদালয়ে আনুমানিক ২১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। এতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতাকর্মী, আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়।

সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল (দ্রুত বিচার) ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারি মো.

আজমত আলী সমকালকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল রোববার (৪ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক ও বাংলা বিভাগের প্রথম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে ময়মনসিংহ দ্রুত বিচার আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন বলে জানান তিনি।

মো. আজমত আলী জানান, ভুক্তভোগী বাদী বিজ্ঞ আদালতে এই মামলাটি দায়েরের পর ওইদিন সন্ধ্যায় আদালতের বিচারক মোছা. নাসিমা খাতুন বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।      
 
নথি অনুযায়ী এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার জাকিবুল হাসান রনিকে। এছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য অন্যান্য আসামিরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মকর্তা ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আহসান লিমন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাব্বির আহম্মেদ ও নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, তরিকুল ইসলাম রানা, প্রকৌশল শাখার প্রকল্প পরিচালক (পিডি) জোবায়ের হোসেন, অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আ. হালিম, বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ হুমায়ন কবীর, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সহকারি রেজিষ্ট্রার ইব্রাহীম খলিল শান্ত, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সেকশন অফিসার আপেল মাহমুদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান মুনতাসির তানভীর জয়, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার নুসরাত জাহান শিমু, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোশাররাত শবনম, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষক ড. সেলিম আল মামুন, ড. উজ্জল কুমার, অর্থনীতির শিক্ষক ড. মো. নজরুল ইসলামসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭০ থেকে ৮০ জনকে এই মামলায় আসামি করা হয়।    

বাদীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত জুলাই-আগষ্টের সরকার পতনের আন্দোলন দমনে গত বছরের ৩ আগষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেন ছাত্রলীগ ও আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। ওই সমাবেশে তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে ক্যাম্পাসে সশস্ত্র মহড়া দেন। এর পরদিন গত বছরের ৪ আগষ্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে যাওয়ার প্রস্তুতিকালে আন্দোলনকারীদের ওপর আসামীদের পরস্পর যোগসাজসে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ছাত্রলীগ। এতে কমপক্ষে ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এ সময় আসামীরা বেশ কিছু মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস ভাঙচুর করে।

বাদী আশিকুর রহমান সমকালকে বলেন, প্রায় ৯ মাস পর দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আদালতে ন্যায়বিচারের জন্য মামলা করেছি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে আমার ওপর ছাত্রলীগ একাধিকবার হামলা মামলা করে। এসব ঘটনায় আমি আদালত ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করছি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ কর মকর ত ল ইসল ম আগষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার ৩৩ খাল দখলমুক্ত ও সবুজায়নে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ

ঢাকা শহরের ৩৩টি খাল ও লেক দখল ও দূষণ মুক্ত রাখতে এবং খালের দুই পাড়ে গাছ লাগিয়ে সবুজায়ন ও জীববৈচিত্র পুনরুদ্ধারের জন্য স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। সোমবার এসব খাল ও লেকের দুই পাড়ে বৃক্ষরোপন কাজে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সম্পৃক্তকরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ২৯টি খালের পাশাপাশি রাজউকের আওতাধীন লেকগুলোতে এবং ঢাকা দক্ষিণের ৪টি খালের পাড়ে গাছ লাগানো ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবে ডিএনসিসির নিয়োগ করা স্বেচ্ছাসেবকরা। খালের দুইপাড়ে গাছ লাগানোর জন্য গাছ সরবরাহ করবে ডিএনসিসি। নির্ধারিত এলাকার জন্য ডিএনসিসির নির্ধারিত মালী থাকবে যারা বৃক্ষরোপণে সহায়তা করবে। তাদের সাথে কাজ করবে স্থানীয় সেচ্ছাসেবক। এসব স্বেচ্ছাসেবক সোশাল ম্যাপিংসহ পরিকল্পনা ও নকশার মাধ্যমে খালের পাড়ে বিভিন্ন দেশি গাছ হিজল, জারুল লাগাবেন। 

ডিএনসিসির সাথে খাল দখল, দূষণ মুক্ত রাখতে এবং খালের দুইপাড়ে গাছ লাগানোর জন্য কাজ করবে যেসব স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান তারা হলো, রিভার অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট বাংলাদেশ, গ্রিন ভয়েস, কমিউনিটি ভলান্টিয়ার্স, কমিউনিটি টাউন ফেডারেশন, নগরাবাদ, সিডিসি, আশার আলো, ইয়ুথ মেন্টর, ব্রাইটস, আলোকিত করি, ফিনিস মনডিএল বাংলাদেশ, ইউএনডিপি, লাল সবুজ সোসাইটি, ইয়ং ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক, ইকো টাউন নেটওয়ার্ক গ্লোবাল এবং ও এবি ফাউন্ডেশন। 

স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝে তাদের সুবিধা অনুযায়ী খালের অংশ বন্টন করে দেওয়া হয়, যাতে তারা ডিএনসিসির সাথে সমন্বয় করে খাল দখল, দূষণ মুক্ত রাখতে এবং খালের দুই পাড়ে গাছ লাগানোর কাজে সহায়তা করতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ঢাকায় অবস্থিত পুকুরগুলো খুব শিগগির দৃষ্টিনন্দন হবে। ঢাকার জেলা প্রশাসক কিছুদিনের মধ্যে কয়েকটি পুকুর খনন ও পাড় বাঁধাই করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করবেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী মঈন উদ্দিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এ বি এম সামসুল আলম প্রমুখ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ