ঢাকার আশুলিয়ায় গ্যাস সিলিন্ডারে লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এতে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের চার ইউনিট কাজ করছে। 

শনিবার (১০ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়কের করিম মিয়ার দোকানে আগুনের সূত্রপাত হয়। রাত ৮ টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একটি মুদি দোকানে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু দোকানে অনেকগুলো গ্যাস সিলিন্ডার থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

আরো পড়ুন:

বেইলি রোডের আগুন নিয়ন্ত্রণে, ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার

বেইলি রোডে রেস্তোরাঁয় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট

ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার লিটন বলেন,  খবর পেয়ে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের দুই ইউনিট ও জিরাবো ফায়ার সার্ভিসের দুই ইউনিট ঘটনাস্থলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তবে এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের ওই কর্মকর্তা। 

ঢাকা/আরিফুল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগ ন ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বড় পরিসরে অংশ নিতে যাচ্ছেন বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বড় পরিসরে অংশ নিতে যাচ্ছেন বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা।

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণে কয়েক শ বিদেশি পর্যবেক্ষক যুক্ত হতে পারেন। এই তথ্য জানিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ২০০৮ সালের পর সর্বোচ্চসংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষক আসছেন আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণে।

ইসি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই), ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), কমনওয়েলথসহ আন্তর্জাতিক বেশ কিছু সংস্থা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যবেক্ষক যুক্ত হবেন বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক অংশ নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে, তাদের মধ্যে ইইউ প্রতিনিধিদলের কলেবর হবে সবচেয়ে বড়। ২৭ দেশের ইউরোপীয় এই জোট থেকে ১৫০–১৮০ সদস্যের প্রতিনিধিদল স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

মন্ত্রণালয়ের আরেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে প্রতিনিধিদল পাঠানোর আগ্রহ দেখানো হয়েছে, সেটির সদস্যসংখ্যা হবে ৫০–এর মতো। এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকবে আইআরআই। এ ছাড়া কমনওয়েলথ থেকে যে পর্যবেক্ষক দলটি আসার কথা, সেটির সদস্যসংখ্যা হতে পারে ৩০–এর মতো।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পর্যবেক্ষক পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন ইতিমধ্যে চিঠি পাঠানো শুরু করেছেন। এর অংশ হিসেবে তিনি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে প্রতিনিধিদল পাঠাতে ইউরোপীয় কমিশনের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তানীতি–বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি কাজা কালাসকে অনুরোধ জানিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদককে বলেছেন, বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে পর্যায়ক্রমে কমনওয়েলথসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক-আঞ্চলিক সংস্থা ও দেশকে চিঠি পাঠানো হবে।

নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানাবে নির্বাচন কমিশন। অহেতুক বিতর্ক তৈরি করতে পারে—এমন কাউকে (পর্যবেক্ষক) আনতে চায় না সরকার।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এই প্রতিবেদককে বলেন, গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশ সফর করে গেছে। সে সময় তারা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকবে আইআরআই। এই প্রতিনিধিদলে আইআরআই ও এনডিআইয়ের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক একাধিক সিনেটর, কংগ্রেস সদস্য, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা যুক্ত থাকবেন।

ইইউকে ইসির চিঠি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ১১ ডিসেম্বর ঘোষণা করেন সিইসি। বিষয়টি উল্লেখ করে সেদিনই সিইসি বাংলাদেশে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজা কালাসকে চিঠি লেখেন।

কাজা কালাসের কাছে পাঠানো চিঠিতে সিইসি নাসির উদ্দীন লিখেছেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও সততার সর্বোচ্চ মানদণ্ড নিশ্চিত করে আসন্ন নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর। নির্বাচনের সময় দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি ভোটারদের মধ্যে আস্থা স্থাপন করবে; পাশাপাশি নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও ফলাফলে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে আক্ষরিক অর্থেই তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পর্যবেক্ষক পাঠানোর অনুরোধ চিঠিতে জানান সিইসি। তিনি লিখেছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্ব, ভোটসংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড, ভোট গণনা, ভোট-পরবর্তী প্রক্রিয়াসহ নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের জন্য ইইউর নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলকে সানন্দে স্বাগত জানাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে বিধি ও নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইইউ প্রতিনিধিদলকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেবে।

জানতে চাইলে ইইউর প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র ব্রাসেলসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার মাসুদ আলম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গত সেপ্টেম্বরে ইইউর প্রাক্-নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ দল বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিল। সফরের পর প্রতিনিধিদল ইইউর কাছে মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা দেয়। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এবার বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইইউ।

বাংলাদেশে ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার সম্প্রতি বলেন, ২০০৮ সালের পর এই প্রথম ইইউ বাংলাদেশে একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে। এই দলে ১৫০ থেকে ২০০ জন সদস্য থাকতে পারেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ভোটের প্রায় ছয় সপ্তাহ আগে, অন্যরা ভোটের এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশে পৌঁছাবেন। এ ছাড়া ভোটের সময় স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগেও ইইউ সহায়তা করবে।

সবশেষ ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। ইসি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক পরিসরে এতসংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষকের উপস্থিতি সেবারের আগে কখনো ঘটেনি। সে তুলনায় পরের তিনটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে (দশম, একাদশ ও দ্বাদশ) বিদেশি পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি ছিল একেবারেই সীমিত ও নির্বাচিত। তা ছাড়া এই তিন নির্বাচনে বিদেশ থেকে যাঁরা পর্যবেক্ষণে এসেছিলেন, তাঁদের গুণমান নিয়েও প্রশ্ন ছিল। এখন ১৭ বছর পর সর্বোচ্চসংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ