ইরানে আগেও সরকার পরিবর্তনের ফল কী হয়েছিল
Published: 20th, June 2025 GMT
ইসরায়েল এবারের হামলার শুরু থেকেই ইরানের সরকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে নিজেদের সরকার পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা অবশ্য ইরানিদের রয়েছে। ১৯৫৩ সালের ওই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসা শাহ সরকার টিকেছিল ২৭ বছরের মতো। ১৯৭৯ সালের অভ্যুত্থানে তাদের পতন ঘটে, সূচনা হয় ইসলামী শাসনের। তখনকার ঘটনাক্রমের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিএনএন।
তেলক্ষেত্র
ইরানে ১৯৫৩ সালে যে অভ্যুত্থান হয়, তাতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোসাদ্দেগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্র। মোসাদ্দেগ ইরানিদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। দেশের তেলক্ষেত্র জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোসাদ্দেগ, যা ছিল তৎকালীন মার্কিন ও ব্রিটিশ সরকারের জন্য বড় ধরনের আঘাত।
স্নায়ুযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়
তেলক্ষেত্র জাতীয়করণের পদক্ষেপটি ইরানে জনপ্রিয় হিসেবে দেখা হয়। এটি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয় হিসেবেও বিবেচিত হয় কারও কারও কাছে।
শাহের শাসন জোরদার করা
১৯৫৩ সালের অভ্যুত্থানের লক্ষ্য ছিল, ইরানের রাজা মোহাম্মদ রেজা পাহলভিকে শাহ শাসক হিসেবে ক্ষমতায় বসানো এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জেনারেল ফজলুল্লাহ জাহেদিকে নিয়োগ দেওয়া।
অভ্যুত্থান
অভ্যুত্থানের আগে মার্কিন তদন্ত সংস্থা সিআইএ এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এসআইএস মিলে নানা অপপ্রচার ছড়িয়ে মোসাদ্দেগবিরোধী জনমত উস্কে দেয়। ১৯৫৩ সালে সিআইএ ও এসআইএস শাহপন্থি বাহিনীকে সংগঠিত করে এবং মোসাদ্দেগবিরোধী বড় বিক্ষোভ আয়োজন করে, যেখানে পরে সেনাবাহিনীও যোগ দেয়।
মার্কিন অর্থ
অভ্যুত্থানের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন জাহেদি। তাঁর সরকার যেন স্থিতিশীলতা অর্জন করে, সেজন্য গোপনে দুই দিনের মধ্যে ৫০ লাখ ডলার সরবরাহ করে সিআইএ, যা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন নথিতে প্রমাণিত হয়েছে।
মার্কিন স্বীকারোক্তি
২০১৩ সালে সিআইএর কিছু নথি প্রকাশ পায়, যেখানে প্রথমবারের মতো অভ্যুত্থানে সংস্থাটির ভূমিকার প্রমাণ প্রকাশ্যে আসে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের যে ভূমিকা ছিল, সেটা সবারই জানা। এর আগে ২০০৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও ওই অভ্যুত্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে নেন।
ফল হয় উল্টো
মোসাদ্দেগকে উৎখাতের পর যুক্তরাষ্ট্র শাহ পাহলভির প্রতি সমর্থন আরও জোরালো করে। কিন্তু বাইরের হস্তক্ষেপে ইরানিরা ক্রমে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং দশকের পর দশক ধরে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মনোভাব দানা বাঁধতে থাকে।
ইসলামী বিপ্লব
শাহ যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে ওঠেন। কিন্তু গত শতাব্দীর সত্তরের দশকের শেষ দিকে লাখ লাখ ইরানি তাঁর শাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আসেন। তাদের চোখে, শাহ সরকার ছিল দুর্নীতিগ্রস্ত ও অবৈধ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প এই যুদ্ধে জড়ালে তা ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। ট্রাম্প যুদ্ধে জড়ালে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ও তাদের মিত্ররা নতুন বৈরিতার মুখে পড়বে বলে মনে করেন মার্কিন সিনেটর ক্রিস মারফি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ১৯৫৩ স ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘তথ্য আপা’ প্রকল্পে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের অভিযান
‘তথ্য আপা: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্পে অনিয়ম ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ছিল মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘জাতীয় মহিলা সংস্থা’।
সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট দল এই অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
দুদক সূত্র জানায়, অভিযানের সময় প্রকল্পের ব্যয়–সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ দলিল সংগ্রহ করা হয়। এসব রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশনে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
এ প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তথ্যকেন্দ্র স্থাপন, নারীদের ডিজিটাল প্রশিক্ষণ, সচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে প্রকল্পের অর্থ ব্যয় ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল।
আরও পড়ুন ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পে ৫ মাস ধরে বেতন নেই, এখন অফিস ছাড়ারও নোটিশ১১ জানুয়ারি ২০২৫