মুহূর্তেই বাস-মাহিন্দ্রার সংঘর্ষ হয়, আহত অবস্থায় সবাই গড়িয়ে নিচের দিকে যাচ্ছিলেন
Published: 21st, June 2025 GMT
ময়মনসিংহের ফুলপুরে দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি আসনের অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বেপরোয়া গতিতে ছোটার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেছেন এক যাত্রী। তাঁর ভাষ্য, বাসটি দাঁড়ানো যাত্রী দিয়ে ঠাসাঠাসি অবস্থা ছিল। এ অবস্থায় চালকের এক সহকারী এটি চালাচ্ছিলেন।
শ্যামলী বাংলা পরিবহনের দুর্ঘটনাকবলিত বাসে ময়মনসিংহ শহরে আসছিলেন হালুয়াঘাটের জুগলি এলাকার বাসিন্দা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত। গতকাল শুক্রবার রাতে তিনি প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি থাকায় রাস্তা স্যাঁতসেঁতে ছিল। বেপরোয়া গতিতে আসা মাহিন্দ্রা, বাসে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও অদক্ষ চালক দিয়ে বাস চালানোয় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে আমি মনে করেছি।’
আরও পড়ুনময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮১ ঘণ্টা আগেইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘ঢাকাগামী বাসটিতে সিটে যাত্রী নিলেও ২০ থেকে ২৫ জন দাঁড়িয়ে ছিলেন। আর এটি চালাচ্ছিলেন ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সী এক তরুণ। তাঁকে দেখে হেলপার (চালকের সহকারী) মনে হয়েছে। যাত্রীতে ঠাসাঠাসি অবস্থায় আমি বাসের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে ছিলাম। ফুলপুরের কাজিয়াকান্দা এলাকায় বাসটি যখন পৌঁছায়, তখন সামনে দ্রুতগতিতে আসছিল মাহিন্দ্রা গাড়িটি। মুহূর্তেই এই দুই গাড়ির সংঘর্ষ হয়। আমি খুব শক্ত করে হাতল ধরে রাখলেও প্রায় তিন হাত সামনের দিকে চলে যাই। যখন নিজে স্থির হই, আমার সামনে কাউকে আর দাঁড়ানো দেখিনি। সবাই আহত অবস্থায় গড়িয়ে নিচের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন দ্রুত বাস থেকে নেমে যাই। আশপাশের লোকজনও ছোটাছুটি করে উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে মাহিন্দ্রাটি ছিটকে বিদ্যুতের খুঁটিতে গিয়ে চ্যাপটা হয়ে যায়। আর বাসটি রাস্তার বিপরীত দিকে একটি গাছে ধাক্কা দিয়ে আটকে যায়।’
এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, বাসটি চালক নাকি তাঁর সহকারী চালাচ্ছিলেন, তা তদন্তে বের হবে। তাঁদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে। আপাতত বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে ওই দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম। তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় কারও গাফিলতি ছিল কি না, তা বের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুনময়মনসিংহে দুই স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১০১৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ য় দ র ঘটন স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু সন্তানকে হত্যার পর মেঝেতে পুঁতে রাখে বাবা
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় দুই বছরের শিশু আইয়ু্ব আলীকে শাবল দিয়ে আঘাত করে হত্যার পর নিজ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখে মানসিক ভারসাম্যহীন বাবা। এ ঘটনার পর বাবা নুরুল আমিনকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৮ জুন) দিবাগত রাত ১১টার দিকে উপজেলার পশ্চিম ধুরাইল এলাকায় শিশুকে হত্যা করা হয়। নিহত শিশু আইয়ুব আলী ওই এলাকার নুরুল আমিনের ছেলে। নুরুল আমিন ফজলু মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, অভিযুক্ত নুরুল আমিন দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। বুধবার (১৮ জুন) বিকেল ৩টার দিকে হঠাৎ করে তিনি স্ত্রী জেসমিনকে মারধর করলে তিনি পালিয়ে যান। এ সময় শিশু আইয়ুব আলী ঘরের ভিতরে ঘুমাচ্ছিলেন। এরপর নুরুল আমিন ঘরে ঢোকার কিছুক্ষণ পর বের হয়ে যান। কিছুক্ষণ পর নুরুল আমিন আবারও ফিরে এসে ঘরে শুয়ে ছিলেন। এদিকে শিশুর দাদা বাজার থেকে এসে শিশু আইয়ুব আলীকে খুঁজতে থাকেন।
আরো পড়ুন:
পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় শ্বশুরকে হত্যা: গৃহবধূর যাবজ্জীবন
ক্ষেতে গরু যাওয়ায় মাকে মারধর, ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
কোথাও খুঁজে না পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় নুরুল আমিনের কাছে জানতে চান আইয়ুব আলী কোথায়? পরে নুরুল আমিন বলেন, ‘‘আইয়ুব ঘুমাচ্ছিল। পরে আমি শাবল দিয়ে তার মাথায় আঘাত করি। এতে সে ঘটনাস্থলে মারা যায়। পরে কোদাল দিয়ে ঘরের মেঝে খুঁড়ে পুতে রাখি।’’ এ সময় তার দুটি ছাগল মেরে ঘরের মেঝের অন্য একটি জায়গায় পুতে রাখে নুরুল আমিন। পরে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ১১টার দিকে ঘরের মেঝে খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
হালুয়াঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জানান, অভিযুক্ত বাবা নুরুল আমিনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।
ঢাকা/মিলন/বকুল