হামলার পরই ইসরায়েলি গোয়েন্দারা ইরানি জেনারেলদের স্ত্রী-সন্তানসহ হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন
Published: 25th, June 2025 GMT
ইরানের বিরুদ্ধে ১৩ জুন আগ্রাসন চালানোর পাশাপাশি অশুভ আরেকটি হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সে সময়ে ইসরায়েলি গোয়েন্দারা ইরানের শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তাদের কাছে অন্তত ২০টি ফোন করেছিলেন।
ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের দাবি ছিল ভয়াবহ, তাঁরা শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তাদের ফোন করে বলেছিলেন, ১২ ঘণ্টার মধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে গিয়ে তাঁদের ইসরায়েলের কাছে আত্মসমর্পণ করার ভিডিও বার্তা রেকর্ড করে সেগুলো পাঠাতে হবে, না হলে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ধ্বংসের মুখোমুখি হতে হবে।
ওয়াশিংটন পোস্ট এ–সংক্রান্ত একটি অডিও হাতে পাওয়ার কথা জানিয়েছে।
ফাঁস হওয়া অডিওতে শোনা যায়, এক ইসরায়েলি গোয়েন্দা ইরান রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) এক জেনারেলকে ফোন করে বলছেন, ‘আমরা আপনাকে হত্যা করব, আপনার পরিবার, আপনার সন্তানদের—সবাইকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে ফেলব। আমরা আপনার গলার শিরার চেয়েও কাছাকাছি আছি।’
১৩ জুন আকস্মিক হামলা চালিয়ে ইরানের কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে এসব ফোন করা হয়েছিল। ফোনগুলো করা হয়েছিল ইরানের ওই সব জেনারেলের কাছে, যাঁরা নিহত শীর্ষ কমান্ডারদের স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন।
এভাবেই ভয় দেখিয়ে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে জিততে চেয়েছিল ইসরায়েল। কিন্তু ইরানের একজন জেনারেলও আতঙ্কের কাছে মাথা নত করেননি। কেউ পালাননি, কেউ দেশদ্রোহিতা করেননি। এর ফলে ইসরায়েলকে এ অভিযানে পুরোপুরি ব্যর্থ হতে হয়েছে।
তাঁরা আইআরজিসির জেনারেলদের ফোনে হত্যার হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, যদি তাঁরা ইরান সরকারকে সহযোগিতা করবে না উল্লেখ করে ভিডিও তৈরি করে তাঁদের না পাঠান, তবে জেনারেলদের তাঁদের পরিবারসহ হত্যা করা হবে।ওয়াশিংটন পোস্টের ফাঁস করা ওই অডিওতে ইসরায়েলের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের এ কৌশল স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তাদের লক্ষ্য ছিল ইরান সরকারকে বিভক্ত করে ফেলা, যেন তারা দুর্বলতার মুহূর্তগুলোকে কাজে লাগাতে পারে।
ইসরায়েলের ওই গোয়েন্দারা সম্ভবত মোসাদ বা দেশটির সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী আমানের সদস্য, প্রত্যেকে ফারসি ভাষায় পারদর্শী।
ইসরায়েলি গোয়েন্দারা আইআরজিসির জেনারেলদের ফোনে হত্যার হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, যদি তাঁরা ইরান সরকারকে সহযোগিতা করবে না উল্লেখ করে ভিডিও তৈরি করে তাঁদের কাছে না পাঠান, তবে জেনারেলদের তাঁদের পরিবারসহ হত্যা করা হবে।
আরও পড়ুনআগেই ইরানে ঢুকে কীভাবে হামলার ক্ষেত্র গড়ে তুলেছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ১৪ জুন ২০২৫ইসরায়েলি গোয়েন্দারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে সেসব ভিডিও পাঠাতে বলেছিলেন।
অডিওতে ইসরায়েলি এক গোয়েন্দাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি কি (নিহত ব্যক্তিদের) পরবর্তী তালিকার নাম হতে চান?’
তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল স্পষ্ট, জনসমক্ষে বিক্ষোভ সৃষ্টি করে ইরানের সেনাবাহিনীকে হতাশ করা এবং অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা।
ইরানি জেনারেলদের এমন কোনো ভিডিও এখন পর্যন্ত সামনে আসেনি বা কোনো জেনারেলের দেশত্যাগের খবরও পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন১২ দিনের সংঘাতে ১৪ ইরানি বিজ্ঞানীকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের, ইরানের ক্ষতি কতটা১০ ঘণ্টা আগেএর আগে ১৩ জুন হামলার পরই ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাতে উল্লেখ করা হয়েছিল, ইরানের দ্বিতীয় স্তরের যেসব কমান্ডার ও শাসনব্যবস্থার কর্মকর্তাদের ইসরায়েল হত্যা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, তাঁদের হুমকি দিয়ে বার্তা পাঠিয়েছে মোসাদ।
ইরানি কর্মকর্তাদের কেউ দরজার নিচ দিয়ে চিঠি পেয়েছেন, আবার কেউ ফোনকল পেয়েছেন কিংবা কারও স্ত্রীকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এসব বার্তার লক্ষ্য ছিল পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেওয়া যে মোসাদ জানে, ওই কর্মকর্তারা কে কোথায় আছেন এবং তাঁরা মোসাদের নাগালেই আছেন।
আরও পড়ুনইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আরও তিনজনকে ফাঁসি দিল ইরান৯ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত দ র ইসর য় ল র টন প স ট কর ত দ র র পর ব র বল ছ ল ন হত য র ফ ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে আগুনে পুড়ল ১১টি দোকান ও একটি কারখানা
নোয়াখালীর সেনবাগে একটি কাঠের আসবাবপত্র তৈরির কারখানা, গোডাউনসহ অন্তত ১১টি দোকান আগুনে পুড়ে গেছে। শনিবার (৯ আগস্ট) রাত ১টার দিকে উপজেলার সেবারহাট বাজারে ঘটনাটি ঘটে।
ফায়ার সার্ভিসের সেনবাগ, চৌমুহনী ও মাইজদীর পাঁচটি ইউনিট প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে রবিবার (১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার রাত ১টার দিকে সেবারহাটে একটি আসবাবপত্র তৈরির কারখানা থেকে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর আগুন আশপাশের ১১টি দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
আরো পড়ুন:
নেত্রকোণার ধলাই নদীতে বাল্কহেড ডুবে ২ শ্রমিক নিখোঁজ
মানিকগঞ্জে প্লাস্টিক কারখানার আগুন, ৬০ কোটি টাকার ক্ষতি
আগুনে আসবাবপত্র তৈরির কারখানা, মেশিনারিজ সামগ্রী, থাই অ্যালুমিনিয়াম পণ্য বিক্রির দোকানসহ অন্তত ১১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আগুনে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের ৩৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সেনবাগ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ার ফাইটার মো.সাব্বির হোসেন বলেন, “পাঁচটি ইউনিট প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ক্ষয়ক্ষতি ও অগ্নিকাণ্ডের কারণ তদন্ত শেষে বলা যাবে।”
ঢাকা/সুজন/মাসুদ