টানা বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম নগরের খুচরা সবজির বাজারে। বাজারে সবজিভেদে দাম গত সপ্তাহের তুলনায় অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচা মরিচের। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকার আশপাশে বিক্রি হয়েছিল কাঁচা মরিচ। তবে এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকার আশপাশে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টিতে ফলন নষ্ট হওয়া ও সরবরাহ কমে যাওয়ায় কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। অন্যান্য সবজির দাম পাইকারিতে ৩ থেকে ৫ টাকা বাড়লেও খুচরায় বেড়েছে বেশি। তবে আগামী সপ্তাহে আমদানি করা অনেক কাঁচা মরিচ বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন মরিচের দাম কমে যাবে।

চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট, চকবাজার ও কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে গত সপ্তাহে বরবটি, ঝিঙে, পটোল, করলা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে আজ শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকার আশপাশে। একই দামে বিক্রি হয়েছে বেগুন, গাজর, ফুলকপি। সপ্তাহের ব্যবধানে দামের পার্থক্য গড়ে ১০ টাকা।

কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজারের সবজি বিক্রেতা মো.

সেলিম বলেন, বৃষ্টিতে সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। ক্রেতার সংখ্যাও কম। বৃষ্টি থামলে ক্রেতারা আসেন। তবে বেচাকেনা তেমন নেই। দাম বাড়লে ক্রেতা কিছুটা কম থাকে।

বাজারে কচুশাক ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়ার শাক ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা ও লালশাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ভিন্ন চিত্র পাইকারি বাজারে। চট্টগ্রামের সবজির পাইকারি আড়ত রিয়াজউদ্দিন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আড়তে সব সবজির দাম এখনো কম। বৃষ্টিতে প্রভাব পড়লেও কেজিতে সেটি সর্বোচ্চ পাঁচ টাকা। তবে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। অধিকাংশ সবজির দাম ৪০ টাকার মধ্যে।

রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার নুরুল ইসলাম বলেন, কাঁচা মরিচের দাম আড়তে ২০০ থেকে ২২০ টাকা। আমদানি করা কাঁচা মরিচ বাজারে এলে দাম কমে যাবে। বাকি সবজির দাম কম আছে। সরবরাহ কমেছে কিছুটা, তবে তা দামে প্রভাব ফেলেনি।

মাংসের বাজারে দামের পরিবর্তন হয়নি গত সপ্তাহের তুলনায়। বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। সোনালি মুরগির কেজি ২৮০ থেকে ৩১০ টাকা আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৫৮০ টাকায়। গরুর মাংসের দামেও বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি। কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকায়।

মাছের বাজারে লইট্যা গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ১৪০ টাকা থাকলেও এবার বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকায়। অন্যান্য মাছের মধ্যে রুই ৩০০ থেকে ৫৫০, কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০, চিংড়ি ৯০০ থেকে ১ হাজার ৪০০, কাঁচকি ৪০০, চাষের কই ২৫০ থেকে ৩০০, পাবদা ৪০০ থেকে ৬০০, শিং ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ এবং ট্যাংরা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সবজ র দ ম

এছাড়াও পড়ুন:

সবজি-মাছের চড়া দাম, বাজারে নাভিশ্বাস অবস্থা

রাজধানীর বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে বাড়তে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। টমেটো, গাজর, শিম, কাঁচা মরিচসহ প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে হু হু করে। 

পাশাপাশি মাছ ও ডিমের দামেও দেখা দিয়েছে উল্লেখযোগ্য ঊর্ধ্বগতি। এতে করে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষ।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) যাত্রাবাড়ী ও শনির আখড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজির সরবরাহ শুরু হলেও দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। বরং কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে কিছু পণ্যের। 

যাত্রাবাড়ী বাজারে কেনাকাটা করতে আসা রাহিস নামের এক ক্রেতা বলেন, “শীতের সবজি বাজারে এসেছে, ভাবছিলাম দাম কমবে। কিন্তু বাস্তবতা উল্টো। গাজর আর শিম কিনতে গিয়ে মনে হলো যেন মাংস কিনছি।”

যাত্রাবাড়ী বাজারের সবজি বিক্রেতা কলিমুল্লার দাবি, টানা বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কম, ফলে পাইকারি পর্যায়েই দামে আগুন। বাজারে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, শিম ২২০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা এবং আলু ২৫ টাকা। 

শনিরআখড়া বাজারের সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন, “যেভাবে কিনছি, সেভাবে বিক্রি করতে গেলে লোকসান হচ্ছে। আমরাও দাম বাড়িয়ে দিচ্ছি বাধ্য হয়ে।”

অন্যদিকে, মাছের বাজারেও ক্রেতাদের হাঁসফাঁস অবস্থা। সাময়িকভাবে ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকায় দেশি চাষের মাছের প্রতি চাহিদা বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দামেও। বোয়াল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, কোরাল ৮৫০–৯০০ টাকা, রুই ৩০০–৪৫০ টাকা এবং ট্যাংরা ৬০০ টাকা। 

শনিরআখড়া বাজারের মাছ বিক্রেতা শফিকুল বলেন, “ইলিশ না থাকায় এখন সবাই দেশি মাছ নিচ্ছে। চাহিদা বাড়লে দাম তো বাড়বেই।”

লাল ডিম ডজনপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, সাদা ডিম ১৩০ টাকায়। যদিও সরকার সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করেছে, বাজারে এখনো অনেক দোকানে পুরোনো দরে তেল বিক্রি হচ্ছে। এক লিটারের বোতল ১৮৯ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৯২২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে অনেক দোকানে।

মুরগির দামে বড় কোনো পরিবর্তন না থাকলেও, অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই স্থিতিশীলতাও ক্রেতাদের জন্য স্বস্তির কারণ হচ্ছে না। ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০–৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৫০–৬০০ টাকায়।

একাধিক বিক্রেতা জানিয়েছেন, পরিবহন ব্যয় ও সরবরাহ ঘাটতির কারণে দাম বাড়ছে। তবে পরের সপ্তাহে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কিছু পণ্যের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকা/এএএম/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২০০ বছর পর বন্ধ হচ্ছে ‘বেকার অ্যান্ড টেইলর’
  • পাকিস্তানের প্রতিটি ইঞ্চি এখন ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালে: রাজনাথ সিংয়ের হুমকি
  • রাশিয়ায় হামলা চালাতে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছেন না ট্রাম্প
  • হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরলেন জেলেনস্কি
  • সরকারি পানির লাইনে পোকা, শামুক, দুর্গন্ধ
  • হোয়াইট হাউজ থেকে খালি হাতে ফিরলেন জেলেনস্কি
  • করপোরেটের ধাক্কায় নিতাইগঞ্জের ব্যবসায় মন্দা
  • দ্রুত বিদ্যুৎ-গ্যাস দিন, চালু করুন
  • সবজি-মাছের চড়া দাম, বাজারে নাভিশ্বাস অবস্থা
  • ভারতের কিছু শোধনাগার রাশিয়ার তেল কেনা থেকে সরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে