অ্যালবাট্রস পাখির আদলে ড্রোন তৈরির চেষ্টা
Published: 5th, August 2025 GMT
অ্যালবাট্রস পৃথিবীর বৃহত্তম উড়ন্ত পাখিদের মধ্যে একটি। ১১ ফুট লম্বা ডানার অ্যালবাট্রস পাখি জীবনের বেশির ভাগ সময় বাতাসে ভেসে বেড়ায়। শুধু তা–ই নয়, ডানার শব্দ না করেই দীর্ঘ সময় উড়তে পারে অ্যালবাট্রস। আর তাই অ্যালবাট্রস পাখির ওড়ার কৌশল কাজে লাগিয়ে মনুষ্যবিহীন ড্রোন তৈরি করছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিনসিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সির (ডারপা) অনুদানে পরিচালিত এই ড্রোন তৈরির প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিজ্ঞানী সামেহ আইসা।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, অ্যালবাট্রস পাখি আকাশে ওড়ার সময় খুব বেশি ঝাঁকুনি হয় না। এ জন্য ডায়নামিক সোয়ারিং নামে একটি কৌশল ব্যবহার করে থাকে পাখিগুলো। এই কৌশলের কারণে বাতাসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খুব বেশি শক্তি খরচ না করেই ভেসে থাকা যায়। পাখিরা সহজাতভাবে তাদের গতি, ঘূর্ণন ও বায়ুর গতিকে সামঞ্জস্য করে সবচেয়ে শক্তিসাশ্রয়ী পথ খুঁজে বের করে। উঁচুতে থাকার জন্য অ্যালবাট্রস পাখি পাল তোলা নৌকার মতো বাতাসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। এভাবে তারা গতি ও ওড়ার মধ্যে সমন্বয় করে যেন শক্তি কম খরচ হয়। মাধ্যাকর্ষণ ও বাতাস ব্যবহার করে এগিয়ে যায় এই পাখি। সমুদ্রের পানি স্পর্শ করার ঠিক আগে তারা আবার ঘুরে দাঁড়ায়। এভাবেই চক্র পূরণ করে উড়তে থাকে। সবকিছুই কোনো ঝাঁকুনি ছাড়াই ঘটে। অ্যালবাট্রস পাখি যেভাবে নিঃশব্দে আকাশে ভেসে বেড়ায়, সেই একই কৌশল ব্যবহার করে ড্রোনকে দীর্ঘ পথচলার উপযোগী করার কাজ চলছে।
বিজ্ঞানী আইসা বলেন, এসব পাখি সপ্তাহে শত শত মাইল উড়তে পারে। মারা যাওয়ার সময় পর্যন্ত এসব পাখি পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যকার দূরত্বের ২০ গুণ পথ উড়তে পারে। অ্যালবাট্রসরা আক্ষরিক অর্থেই বাতাসে নাক দিয়ে ওড়ে। তাদের সংবেদনশীল নাকের ছিদ্র রয়েছে যা তাদের বাতাসের দিক ও গতি শনাক্ত করতে সাহায্য করে। পাখির নাক তাদের বাস্তব সময়ে ওড়ার সময় সামঞ্জস্য করতে সাহায্য করে। বাতাসের বাঁকবদল, গতি পরিবর্তনের মতো বিষয় বুঝতে সাহায্য করে।
অ্যালবাট্রসকে অনুকরণ করা সহজ নয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। শক্তিশালী কম্পিউটার ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী আইসা বলেন, কয়েক সেকেন্ডের ডেটা তৈরি করতে ১০০ সেকেন্ড সময় লাগতে পারে। অ্যালবাট্রস উচ্চস্তরে নির্ভুলতার সঙ্গে ওড়ার জন্য তাহলে কত ডেটা ব্যবহার করছে! এটা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে।
সূত্র: আর্থ ডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
সত্য প্রকাশে একচুলও পিছপা হব না: আবদুল কাদের
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেছেন, যে যা-ই বলুক, সত্য প্রকাশে তিনি একচুলও পিছপা হবেন না। সত্য আজ নয় কাল প্রতিষ্ঠা হবেই। সত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে পিছপা হওয়া যাবে না। যে যা বলার বলুক।
গতকাল সোমবার রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন আবদুল কাদের।
আগের দিন রোববার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে আবদুল কাদের বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে হলে থাকার কারণে ছাত্রশিবিরের যাঁরা সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করতেন, তাঁরা মূলত আইডেনটিটি ক্রাইসিস (আত্মপরিচয়ের সংকট) থেকে উতরানোর জন্য কিছু ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডে জড়াতেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ছাত্রশিবিরের নেতা আবু সাদিক কায়েম এমন কয়েকজনকে বাঁচাতে তদবির করেন বলে অভিযোগ করেন আবদুল কাদের।
আবদুল কাদের তোলা অভিযোগের জবাব দেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাদিক কায়েম। তিনি রোববার মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে দাবি করেন, ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তা করার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এখন আবদুল কাদের ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বললেন, তাঁর যুক্তিকে খণ্ডন না করে প্রচার করা হচ্ছে যে তিনি ছাত্রলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন। চরিত্র হননের উদ্দেশ্যে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা কথা ছড়াচ্ছেন। তবে যে যা-ই বলুক না কেন, তিনি সত্য প্রকাশে পিছপা হবেন না।
আবদুল কাদেরের ফেসবুক পোস্টটি তুলে ধরা হলো—
আমি যখন সত্য প্রকাশ করলাম, ব্যক্তি-গোষ্ঠীর অপকর্ম, অপরাজনীতি তুলে ধরলাম; তখন আমার যুক্তিকে খণ্ডন না করে ওরা প্রচার করতে লাগলো, আমি ছাত্রলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করি, আমি নাকি ছাত্রলীগ, আমি নাকি ডাকসুর জন্য এমন করি! সত্যকে মোকাবিলা করার সৎ সাহস যাদের নাই, তারাই অপ্রাসঙ্গিক বিষয় টেনে নিয়ে এসে ঘায়েল করার পায়তারায় লিপ্ত থাকে। গত ৫ বছরের জার্ণী’তে হাসিনা রেজিমও এইভাবে সত্যকে মোকাবিলা করতো না। তবে যে যা-ই বলেন, সত্য প্রকাশে এক চুলও পিছপা হবো না। সত্য আজ নয় কাল প্রতিষ্ঠা হবেই, সত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে পিছপা হওয়া যাবে না। যে যা বলার বলুক।
হাসিনার আমলে হলে থাকতে পারি নাই, বাহিরে দুর্দশায় জীবন অতিবাহিত করছি, হামলা-মামলার শিকার হইছি, জেল খাটছি, জেলে যাওয়ার কারণে একাডেমিক ইয়ার লস হইছে। এতোকিছুর পরেও একটা দিনের জন্যও লড়াই থেকে পিছু হটি নাই। সকালে মাইর খাইছি, বিকেলে আবার রাজ পথে ফিরে আসছি। আর্থিক অনটনও আমার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। কারো কাছে একটা বারের জন্যও হাত পাতি নাই। এখন অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় চরিত্র হননের উদ্দেশ্যে নানান কথা ছড়ান। আমার আল্লাহ জানে, আমি আমার আর্থিক এবং উদ্দেশ্যের জায়গায় কতটুকু সৎ। যতদিন আমার ভেতরে সত্য থাকবে; ততদিন আমার বাহিরে ভয় নাই এবং ততোদিন-ই সত্য প্রতিষ্ঠার লড়াই চলবে...
আরও পড়ুনছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা: সাদিক কায়েম২২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনছাত্রলীগ পরিচয়ে নির্যাতনের অংশীদার হতেন ‘ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা’, দিলেন অনেকের পরিচয়০৩ আগস্ট ২০২৫