পাকিস্তানে ইমরান খানের দলের বিক্ষোভে ব্যাপক ধরপাকড়, ১৪৪ ধারা জারি
Published: 5th, August 2025 GMT
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গতকাল দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন। তবে এ কর্মসূচি ব্যাহত করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ধরপাকড় হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই)। লাহোর থেকেই ৩০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আন্দোলন ঠেকাতে বিভিন্ন জেলায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পালন করতে না পারায় ইসলামাবাদে সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে পিটিআই।
রাষ্ট্রীয় উপহার–সংক্রান্ত একটি মামলায় ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট থেকে ইমরান খান কারাবন্দী। বর্তমানে তিনি আদিয়ালা কারাগারে দুর্নীতির মামলায় সাজা ভোগ করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৯ মে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে সন্ত্রাসবাদ আইনে একাধিক মামলায় বিচার চলছে। আজ দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে রাজপথে নামেন দলের নেতা–কর্মীরা।
লাহোর পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (অপারেশনস) ফয়সাল কামরান বলেন, শহরের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করায় ৩০ জনের বেশি পিটিআই কর্মীকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
পিটিআইয়ের অফিশিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে লেখা হয়েছে, ‘রেহানা দারের মতো একজন প্রবীণ নেতাকে পাঞ্জাব পুলিশ যেভাবে নির্লজ্জভাবে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক দৃশ্য।’
উত্তর পাঞ্জাবে পিটিআইয়ের যুব শাখার সভাপতি রাজা শাহবাজ ভাট্টি দাবি করেছেন, তিনি পুলিশের হামলায় আহত হয়েছেন। পুলিশ আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানান তিনি।
বাহাওয়ালপুর পিটিআই দাবি করেছে, বেলুচিস্তানের কোহলু জেলায় বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিতে জড়ো হওয়া একাধিক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পিটিআই নেতা আসাদ কায়সার গত সোমবার বলেছেন, পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরেও ধরপাকড় শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
পাঞ্জাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান শায়ান বাশির দাবি করেছেন, পুলিশ অন্তত ২০০টি অভিযান চালিয়েছে। এ সময় অসংখ্য নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়। পরে মুচলেকা দিয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে নেওয়া হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের ১ শতাংশ ধনকুবেরের সম্পত্তি ৬২ শতাংশ বেড়েছে
ভারতের সবচেয়ে ধনী মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তির সম্পত্তি গত প্রায় আড়াই দশকে দেড় গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ‘জি২০’র সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমনটাই দেখা গিয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০০-২০২৩ সালের মধ্যে দেশের সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশ ব্যক্তির সম্পত্তি ৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। খবর আনন্দবাজার অনলাইন।
স্বতন্ত্র অর্থনীতিবিদদের নিয়ে তৈরি জি২০ গোষ্ঠীর ‘এক্সট্রাঅর্ডিনারি কমিটি অব ইনডিপেনডেন্ট এক্সপার্টস অন গ্লোবাল ইনইকুয়ালিটি’ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগ্লিট্জ়। এ ছাড়া কমিটিতে রয়েছেন জয়তী ঘোষ, উইনি ব্যানয়িমা, ইমরান ভালোদিয়াসহ অন্যেরা। তাদের প্রতিবেদনে বিশ্বের সার্বিক পরিস্থিতির কথাও উল্লেখ রয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গত আড়াই দশকে (২০০০-২০২৪) বিশ্বে যত নতুন সম্পত্তি তৈরি হয়েছে, তার ৪১ শতাংশই রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশের কব্জায়।
কমিটির নেতৃত্বে থাকা স্টিগ্লিট্জ় এই বিশ্বব্যাপী বৈষম্য নিয়ে সতর্ক করে করে দিয়েছেন। তার মতে, এই বৈষম্য ‘জরুরি’ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে, যা গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং জলবায়ুগত দিক থেকে উদ্বেগজনক।
জি২০ গোষ্ঠীর ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০০-২০২৩ সালের মধ্যে ভারতে সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশের সম্পত্তি ৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই একই সময়ে চীনেও সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশের সম্পত্তি প্রায় ৫৪ শতাংশ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “সম্পত্তির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য কখনো কাম্য নয়। এটি ঠেকানো যায় এবং রাজনৈতিক ভাবে এটিকে বদলানো যেতে পারে।”
এতে জানানো হয়েছে, ২০২০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র দূরীকরণ মন্থর হয়ে গেছে। কিছু কিছু এলাকায় প্রায় থেমে গিয়েছে দারিদ্র দূরীকরণ। কোথাও কোথাও দারিদ্র বৃদ্ধি পেতেও শুরু করেছে। যে দেশগুলোতে আর্থিক বৈষম্য বেশি, সেখানে গণতন্ত্রের অবক্ষয়ের আশঙ্কাও তুলনামূলকভাবে বেশি।
ঢাকা/শাহেদ