আনিসুল ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান’ হয়ে বহিষ্কৃতদের করলেন পুনর্বহাল
Published: 5th, August 2025 GMT
জাতীয় পার্টির (জাপা) জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোনীত করেছে জি এম কাদেরবিরোধী অংশ। সেই সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের যেসব নেতাকে বিনা নোটিশে বহিষ্কার করেছিলেন, তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। রাজধানীর গুলশান-২ নম্বর এলাকার একটি মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার দুপুরে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরবিরোধী অংশের দপ্তর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খানের নামে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আনিসুল ইসলাম মাহমুদদের এই সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত জি এম কাদেরসহ জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ সংকট আরও জটিল করে তুলল। এখন তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়, সে দিকে দৃষ্টি নেতা-কর্মীদের।
গত ৩০ জুলাই ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো.
তবে এসব সিদ্ধান্তের কোনো কার্যকারিতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির জি এম কাদের অংশের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতের যে আদেশ ছিল, তাতে আমরা দেখেছি, জি এম কাদেরসহ দুজনের সাংগঠনিক কার্যক্রমের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বহিষ্কৃতদের পুনর্বহালের বিষয়ে কোনো মন্তব্য নেই। ফলে বহিষ্কৃত কেউ পুনর্বহাল হয়নি। এ অবস্থায় প্রেসিডিয়ামের সভা সম্পূর্ণ বেআইনি। কেবল চেয়ারম্যান অথবা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই সভা ডাকতে পারেন। অন্য কারও সভা ডাকার আইনগত ভিত্তি নেই।’
আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ অব্যাহতি পাওয়া দলের ১০ জন নেতা গত ১০ জুলাই আদালতে ওই মামলা দায়ের করেছিলেন। তাতে অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান (রাঙ্গা) গঠনতন্ত্রের পরিপন্থীভাবে জি এম কাদেরকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর জি এম কাদের পার্টির সম্মেলন ও কাউন্সিল করে অবৈধভাবে নতুন গঠনতন্ত্র অনুমোদন করেন। সর্বশেষ ২০২৫ সালের ২৮ জুন প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সাতজনকে, পরে আরও তিনজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং জাতীয় পার্টির ওয়েবসাইট থেকেও তাঁদের নাম মুছে ফেলা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাদীপক্ষ ন্যায়বিচারের স্বার্থে মোকদ্দমা বিচারাধীন থাকাকালে আদালতের কাছে চারটি অস্থায়ী আদেশ ও নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আরজি জানানো হয়। তা হলো; জি এম কাদের কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদবি থেকে অব্যাহতির চিঠি এবং তৎমর্মে চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের বিরুদ্ধে অস্থায়ী আদেশ প্রদান, এই মোকদ্দমা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলীয় গঠনতন্ত্রের ২০(১)(ক) ধারার প্রয়োগ থেকে বিরত থাকা এবং জি এম কাদেরের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করার অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান। সেই সঙ্গে দলে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ক্রমানুসারে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা প্রদান।
আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন পরিবর্তিত আকারে মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে জি এম কাদের ও মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর পরবর্তী ধার্য তারিখ ১২ আগস্ট পর্যন্ত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। তবে আবেদনে বাদীপক্ষ দলে জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার যে নির্দেশনা চেয়েছিল, সেটি মঞ্জুর করেননি আদালত। কিন্তু জি এম কাদের কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদবি থেকে অব্যাহতির চিঠি এবং তৎমর্মে চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের বিরুদ্ধে অস্থায়ী আদেশ প্রদানে বাদীপক্ষের আরজি আমলে নেন আদালত। এই সূত্রেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে পুনর্বহাল করে জি এম কাদেরবিরোধী অংশের নেতারা আজ প্রেসিডিয়ামের সভা করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোনীত করেন।
জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ধারা ২০-এর উপধারা-২ (খ) বলা হয়েছে, ‘চেয়ারম্যানের দীর্ঘ সময়ের অনুপস্থিতিতে চেয়ারম্যান পার্টিতে সিনিয়র কো–চেয়ারম্যান কিংবা কো–চেয়ারম্যান পদে কেহ দায়িত্বে থাকিলে তাঁহাকে, অন্যথায় প্রেসিডিয়ামের একজন সদস্যকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করিতে পারিবেন এবং মনোনীত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রেসিডিয়ামের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করিবেন।’
এই মোকদ্দমার বাদীদের অন্যতম জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মুজিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে চেয়ারম্যানের (জি এম কাদের) হাত বাঁধা। তিনি কাউকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিতে পারছেন না। অন্যদিকে তিনি এত দিন যাঁদের বহিষ্কার বা অব্যাহতি দিয়েছিলেন, আদালতের আদেশের পর তা অকার্যকর হয়ে গেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বহিষ্কৃত বা অব্যাহতিপ্রাপ্তরা অটোমেটিক্যালি পুনর্বহাল হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে সিনিয়র কো–চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে আমরা প্রেসিডিয়ামের সভা করেছি।’
এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সুনীল শুভ রায়, কাজী মামুনুর রশিদ, নুরুল ইসলাম মিলন, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, ইয়াহইয়া চৌধুরীসহ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে বিনা নোটিশে জি এম কাদের যাঁদের বহিষ্কার করেছিলেন, তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে পুনর্বহাল করা হয়।
পরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে দলের প্রেসিডিয়াম সভা হয়। এতে কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মুজিবুল হক, প্রেসিডিয়াম সদস্য এ টি ইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রত্না, নাজমা আকতার, রানা মোহাম্মদ সোহেল, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, আরিফুর রহমান খান অংশ নেন। এ ছাড়া দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম, লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, সৈয়দ দিদার বখত, এ কে এম সেলিম ওসমান, নাছির উদ্দিন মাহমুদ, জহিরুল আলম রুবেল, আমিনুল ইসলাম ঝন্টু ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন।
সভায় দেশের চলমান রাজনীতি এবং আগামী দিনে জাতীয় পার্টির করণীয় এবং সাংগঠনিক নানা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আগামীকাল বুধবার বিকেল চারটা পর্যন্ত সভা মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গঠনতন ত র এম ক দ র ও ম সদস য মন ন ত রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
আনিসুল ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান’ হয়ে বহিষ্কৃতদের করলেন পুনর্বহাল
জাতীয় পার্টির (জাপা) জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোনীত করেছে জি এম কাদেরবিরোধী অংশ। সেই সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের যেসব নেতাকে বিনা নোটিশে বহিষ্কার করেছিলেন, তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। রাজধানীর গুলশান-২ নম্বর এলাকার একটি মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার দুপুরে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরবিরোধী অংশের দপ্তর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খানের নামে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আনিসুল ইসলাম মাহমুদদের এই সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত জি এম কাদেরসহ জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ সংকট আরও জটিল করে তুলল। এখন তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়, সে দিকে দৃষ্টি নেতা-কর্মীদের।
গত ৩০ জুলাই ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম এক আদেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। এই প্রেক্ষাপটে আজ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও তাঁর সমমনারা বৈঠক করে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে এসব সিদ্ধান্তের কোনো কার্যকারিতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির জি এম কাদের অংশের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতের যে আদেশ ছিল, তাতে আমরা দেখেছি, জি এম কাদেরসহ দুজনের সাংগঠনিক কার্যক্রমের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বহিষ্কৃতদের পুনর্বহালের বিষয়ে কোনো মন্তব্য নেই। ফলে বহিষ্কৃত কেউ পুনর্বহাল হয়নি। এ অবস্থায় প্রেসিডিয়ামের সভা সম্পূর্ণ বেআইনি। কেবল চেয়ারম্যান অথবা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই সভা ডাকতে পারেন। অন্য কারও সভা ডাকার আইনগত ভিত্তি নেই।’
আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ অব্যাহতি পাওয়া দলের ১০ জন নেতা গত ১০ জুলাই আদালতে ওই মামলা দায়ের করেছিলেন। তাতে অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান (রাঙ্গা) গঠনতন্ত্রের পরিপন্থীভাবে জি এম কাদেরকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর জি এম কাদের পার্টির সম্মেলন ও কাউন্সিল করে অবৈধভাবে নতুন গঠনতন্ত্র অনুমোদন করেন। সর্বশেষ ২০২৫ সালের ২৮ জুন প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সাতজনকে, পরে আরও তিনজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং জাতীয় পার্টির ওয়েবসাইট থেকেও তাঁদের নাম মুছে ফেলা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাদীপক্ষ ন্যায়বিচারের স্বার্থে মোকদ্দমা বিচারাধীন থাকাকালে আদালতের কাছে চারটি অস্থায়ী আদেশ ও নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আরজি জানানো হয়। তা হলো; জি এম কাদের কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদবি থেকে অব্যাহতির চিঠি এবং তৎমর্মে চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের বিরুদ্ধে অস্থায়ী আদেশ প্রদান, এই মোকদ্দমা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলীয় গঠনতন্ত্রের ২০(১)(ক) ধারার প্রয়োগ থেকে বিরত থাকা এবং জি এম কাদেরের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করার অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান। সেই সঙ্গে দলে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ক্রমানুসারে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা প্রদান।
আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন পরিবর্তিত আকারে মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে জি এম কাদের ও মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর পরবর্তী ধার্য তারিখ ১২ আগস্ট পর্যন্ত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। তবে আবেদনে বাদীপক্ষ দলে জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার যে নির্দেশনা চেয়েছিল, সেটি মঞ্জুর করেননি আদালত। কিন্তু জি এম কাদের কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদবি থেকে অব্যাহতির চিঠি এবং তৎমর্মে চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের বিরুদ্ধে অস্থায়ী আদেশ প্রদানে বাদীপক্ষের আরজি আমলে নেন আদালত। এই সূত্রেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে পুনর্বহাল করে জি এম কাদেরবিরোধী অংশের নেতারা আজ প্রেসিডিয়ামের সভা করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোনীত করেন।
জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ধারা ২০-এর উপধারা-২ (খ) বলা হয়েছে, ‘চেয়ারম্যানের দীর্ঘ সময়ের অনুপস্থিতিতে চেয়ারম্যান পার্টিতে সিনিয়র কো–চেয়ারম্যান কিংবা কো–চেয়ারম্যান পদে কেহ দায়িত্বে থাকিলে তাঁহাকে, অন্যথায় প্রেসিডিয়ামের একজন সদস্যকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করিতে পারিবেন এবং মনোনীত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রেসিডিয়ামের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করিবেন।’
এই মোকদ্দমার বাদীদের অন্যতম জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মুজিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে চেয়ারম্যানের (জি এম কাদের) হাত বাঁধা। তিনি কাউকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিতে পারছেন না। অন্যদিকে তিনি এত দিন যাঁদের বহিষ্কার বা অব্যাহতি দিয়েছিলেন, আদালতের আদেশের পর তা অকার্যকর হয়ে গেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বহিষ্কৃত বা অব্যাহতিপ্রাপ্তরা অটোমেটিক্যালি পুনর্বহাল হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে সিনিয়র কো–চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে আমরা প্রেসিডিয়ামের সভা করেছি।’
এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সুনীল শুভ রায়, কাজী মামুনুর রশিদ, নুরুল ইসলাম মিলন, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, ইয়াহইয়া চৌধুরীসহ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে বিনা নোটিশে জি এম কাদের যাঁদের বহিষ্কার করেছিলেন, তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে পুনর্বহাল করা হয়।
পরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে দলের প্রেসিডিয়াম সভা হয়। এতে কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মুজিবুল হক, প্রেসিডিয়াম সদস্য এ টি ইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রত্না, নাজমা আকতার, রানা মোহাম্মদ সোহেল, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, আরিফুর রহমান খান অংশ নেন। এ ছাড়া দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম, লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, সৈয়দ দিদার বখত, এ কে এম সেলিম ওসমান, নাছির উদ্দিন মাহমুদ, জহিরুল আলম রুবেল, আমিনুল ইসলাম ঝন্টু ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন।
সভায় দেশের চলমান রাজনীতি এবং আগামী দিনে জাতীয় পার্টির করণীয় এবং সাংগঠনিক নানা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আগামীকাল বুধবার বিকেল চারটা পর্যন্ত সভা মুলতবি ঘোষণা করা হয়।