সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য দ্রুত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবন-৩-এর সামনে বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে তাঁরা শিকল ভাঙার গান ও প্রতিবাদী পাঠদান কর্মসূচি পালন করেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।

আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতিষ্ঠার ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি অনুমোদন না পাওয়ায় তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে বিভিন্নভাবে দাবি, হতাশা ও ক্ষোভের কথা জানিয়ে আসছেন। গত ২৬ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি বয়কটের মধ্য দিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দ্রুত ডিপিপি অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন করছেন। সব শর্ত পূরণের পরও মাত্র ৫১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকার বরাদ্দ সরকার অনুমোদন করছে না। দাবি আদায়ে আগামীকাল ও ১০ আগস্ট আরও কর্মসূচি পালন করা হবে বলে তাঁরা জানান।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়। এরপর সাতবার সংশোধনের পর সর্বশেষ ৫১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকায় নেমে আসে। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের মার্চ থেকে ২০২৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সংগীত ও ব্যবস্থাপনা নামে পাঁচটি বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ২০০। বিপরীতে ৩৪ জন শিক্ষক, ৫৪ জন কর্মকর্তা ও ১০৭ জন কর্মচারী আছেন। পৌর শহরের শাহজাদপুর মহিলা কলেজ, সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া ডিগ্রি কলেজসহ ভাড়া করা দুটি বাড়িতে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।

এর আগে একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি বয়কট করে কালো ব্যাজ ধারণসহ একাধিকবার মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের চলমান নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে। পরপর বেশ কয়েক দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগের প্রতীকী ক্লাসও অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত রোববার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে শাহজাদপুর সচেতন নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সামাজিক সংগঠনের কয়েক শ মানুষ এতে অংশ নেন। এ ছাড়া সমাবেশে উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতারা উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

৫ দাবিতে স্মারকলিপি দিতে যমুনা অভিমুখে ৮ দল

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে  যমুনা অভিমুখে যাচ্ছেন জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ আট দলের নেতারা।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় ঢাকার পুরানা পল্টন মোড় থেকে এ পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রায় আট দ‌লের শীর্ষস্থানীয় নেতারা নেতৃত্ব দি‌চ্ছেন। এর আগে দলগু‌লো পল্টন‌ মো‌ড়ে পৃথক মি‌ছিল নি‌য়ে জ‌ড়ো হয়।

শাপলা চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে পুরানা পল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন জামায়াত নেতাকর্মীরা। ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজ‌লি‌সের দুই অংশসহ অন‌্যদলগু‌লোর নেতাকর্মীরা আগ থে‌কেই পল্টন‌ মো‌ড়ে অবস্থান নেন।

পদযাত্রা শুরুর আগে পল্টন‌ মো‌ড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলগুলোর শীর্ষ নেতারা গণভোট, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সারা দেশে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তথা নির্বাচনি পরিবেশ তৈরিসহ নানা বিষয়ে জোরা‌লো বক্তব‌্য রা‌খেন।

দলগুলোর পাঁচ দফা দাবি হলো—জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম–নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

আটটি দলের মধ্যে রয়েছে—জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ